পুলিশকে কাতুকুতু দিয়ে স্বামী ছিনতাই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কার মুখ দেখে যে বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন, ঠিকঠাক মনেই করতে পারছেন না সুজয় বিশ্বাস। সকালের টিফিন সেরেই গরুচোর খুঁজতে বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল যে! শনিবার সকাল বেলায় গ্রামে ঢুকে কয়েকটা বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গলের পাশদিয়ে চক মথুরা নামে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে ওই গ্রামে বহু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। খবর ছিল, পাচারের জন্য বেশ কিছু গরু-ছাগল এনে সেখানে জড়ো করা হয়েছে। তাই একটু খোজ খবর নিতে আসা।
সামনে একটা বাড়িতে ঢুকতেই চমকে ওঠেন জলঙ্গি থানার এএসআই সুজিতবাবু। আরে, মারজুল শেখ না? আগে কখনও মুখোমুখি হননি ঠিকই, কিন্তু ন’বার ওয়ারেন্ট বেরিয়েছে যার নামে, তার ছবি যেন চোখে লেগেই আছে। প্রতি বারই পাখি উড়ে যায়। কিন্তু এ বার আর পালাতে পারছেনা বাছাধন!
এক লাফে বাড়িতে ঢুকে পিছন থেকে লোকটাকে পিছমোড়া করে ধরে ফেলেন সুজয়বাবু। যতই সে ঝটপট করুক, তিনি ছাড়ার পাত্র নন। তিনি টেরই পাননি, কখন মারজুলের বৌ মর্জিনা পিছন থেকে এসে খপকরে কোমরের দু’পাশে ঠেসে ধরেছে দু’আঙুল। আর তিনি অ্যাঁক করে লাফিয়ে উঠেছেন।
চমকে মুখ ঘুরিয়ে দেখেন এ কে! গোলগাল চেহারা, শ্যামলা রং, সবুজ ছাপা শাড়ি বয়স মেরেকেটে তিরিশ হবে। হচ্ছে টা কী? এই ছাড়! এই... হিহিহি হিহিহি... মার্জিনা আঙুল চালিয়ে যাচ্ছে আর সুজয়বাবু নেচে যাচ্ছেন। জাপটে ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন মারজুলকে। ফস্কে যাচ্ছে, ফস্কে যাচ্ছে... হিহিহি... হঠাৎই এক ঝটকা মেরে মারজুল চলেগেল। আর সুজয়বাবু ছিটকে পড়ে— বাবা রে, আমার পা-টা যে গেল!
খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে কোনও রকমে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজেদের গাড়িতে গিয়ে ওঠেন সুজয়বাবু। পাশের গ্রাম নরসিংহপুরে গিয়ে বরফ পাওয়াগেল। পায়ে সেই বরফ ঘষে তাকে নিয়ে গাড়ি যায় সাদিখাঁড়দেয়াড় গ্রামীণ হাসপাতালে। এক্স-রে করারা পর ডাক্তার জানিয়ে দেন, হাড়ে ফাঁটল ধরেছে। ভর্তিও করতে হয় তাকে।
পুলিশ অবশ্য মার্জিনাকে ধরতে পারেনি। তার একাদশ শ্রেণিতে পড়া ছেলেকে নিয়ে গায়েব হয়ে গিয়েছে সে। আর কাতুকুতুর কথা না বলে মা-ছেলের বিরুদ্ধে সোজা পুলিশকে মারধরের মামলা দায়েল করে দিয়েছে জলঙ্গি থানা। রাতে ফোনে মার্জিনা অবশ্য দাবি করে, ‘আমরা তো মারিনি! পুলিশই বরং আমার ছেলেকে মারছিল। আমি বাধা দিতে গেলে মেরে আমার হাত ভেঙে দিয়েছে।’ কাতুকুতু দেননি আপনি? জবাব নয়, ভেসে আসে অবাক প্রশ্ন— ‘কাতুকুতু দেওয়া মানে কি মারা, আপনিই বলুন?’
১৫ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�