মোদি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ : মমতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সদ্য ফিল্ম ফেস্টিভালের উদ্বোধনী মঞ্চে অমিতাভ বচ্চনের কথার রেশ ধরে ভারতে সহিষ্ণুতার পক্ষে প্রশ্ন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই উত্সবের মৌসুমে পুজো-পার্বণের উদ্বোধন করতে গিয়েও সম্প্রীতির প্রশ্নে সেই রেশই ধরে রাখলেন তিনি৷ টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এখবর দিয়েছেন।
সোমবারই বড়বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে ফের বহুত্ববাদের পক্ষে এই প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের যে ঐতিহ্য, আমরা সেই ধারাই অনুসরণ করি৷ এবং সকলেরই তা অনুসরণ করা উচিত৷' আর ক'দিন পরেই দলের সংহতি দিবসের মঞ্চেও যে তিনি বিলক্ষণ সুর চড়াবেন এই ইস্যুতে, তার ইঙ্গিত এখনই পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ যদিও এ দিন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, আলাদা কোনও ঢাকঢোল না-পিটিয়ে বরাবরের মতোই দল সংহতি দিবস পালন করবে এ বছরও৷
এ দিন পোস্তা মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এ রাজ্যে যেমন প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার তৈরি করেছি, তেমনই আমি নিজের জন্যও প্রতি বছর একটা ধর্মীয় ক্যালেন্ডার তৈরি করি৷ সেই ক্যালেন্ডারে দুর্গাপুজা, কালীপুজা, লক্ষ্মীপুজা, ঈদ, মহরম- সবই থাকে৷ আমি সব জায়গায় সকলের উত্সবে যাই৷ এ বারও ছটপুজা উপলক্ষে রাজ্য সরকার ছুটি দিয়েছে৷ সুতরাং ভারতে থাকতে হলে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান সকলেই আমরা মিলেমিশে থাকবো এই রাজ্য আমাদের সবার। কে কি খাবে আর কে কি পড়বে তা ঠিক করে দেয়ার দিয়িত্ব কোন রাজনৈতিক দলের নয়।'
গেরুয়াধারীদের খোঁচা দিতে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন- দাঙ্গার মধ্যে কোনও শান্তি নেই৷ মিলেমিশে থাকাতেই শান্তি৷ এ রাজ্যে তাই ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সব উত্সবে সকলে সামিল হন৷ ব্যক্তিগত ভাবে তিনি নিজেও সেই প্রথার অংশীদার হিসেবে গর্ববোধ করেন৷
মোদি সরকারের অসহিষ্ণুতা প্রশ্নে আর পাঁচটা দলের মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার তৃণমূল কংগ্রেসও আগাগোড়াই সরব৷ বস্তুত বাবরি ধংসের দিনটিকে (৬ ডিসেম্বর) বরাবরই সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে তৃণমূল৷ নরেন্দ্র মোদির নাম বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হিসেবে উঠে আসার পরও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এমনই এক সংহতি দিবসের মঞ্চে তিনি মোদিকে 'সাম্প্রদায়িক', 'দাঙ্গাবাজ' ইত্যাদি বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন৷
এ বছর যেহেতু দেশজুড়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ বারে বারেই বিঘ্নিত হয়েছে, তাই রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, এ বার সেই সুর আরও চড়বে৷ যদিও সেই জল্পনাকেই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন হিসেবে পেশ করলে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন, কাউকে চমক দেওয়ার কিছু নেই দলের পক্ষ থেকে৷
তিনি বলেন, 'বাজারে এখন অনেকে নতুন এসে সংহতি, সহিষ্ণুতার কথা বলছে৷ যারা পুরোনো, তাদের এ সব বলতে হয় না৷ আমরা তো বহু বছর ধরেই সংহতির পক্ষে প্রশ্ন করে আসছি, এই দিনটি পালন করে আসছি৷ এ বছরও তাই করবো। প্রথাগত ভাবেই দিনটি আমরা পালন করবো৷'
অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান জেনারেল ভিকে সিংয়ের সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনাও করেন তিনি৷ পার্থবাবুর সংযোজন, 'অন্য রাজ্যের কথা কি আর বলব! এখানেও তো অনেকে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে৷'
১৭ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�