মুসলিম নিরাপত্তা রক্ষীদের সাহসিকতায় বাঁচল প্যারিস স্টেডিয়াম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্যারিসের ফুটবল স্টেডিয়াম স্ট্যাড ডি ফ্রান্সকে সাহসিকতায় সঙ্গে বোমা হামলা থেকে রক্ষা করেছেন মুসলমান নিরাপত্তারক্ষীরা। তা না হলে এ স্টেডিয়ামে মৃতের সংখ্যা শত বা হাজার গুণে বাড়ত বলে নিশ্চিতভাবেই মনে করা হচ্ছে। মুসলিম নিরাপত্তারক্ষীরা সাহসিকতা না দেখালে ওই স্টেডিয়ামে নিরীহ মানুষের রক্তের ঢল নামতে পারত। রেডিও তেহরানের এক প্রতিবেদনে এই খবর দিয়েছে।
উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পনা করেছিল তাদের এক সদস্য স্টেডিয়ামের ভেতরে আত্মঘাতী হামলা চালাবে। এ সময় স্টেডিয়ামটিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদসহ ৮০,০০০ দর্শক ছিল। এ ছাড়া, দায়েশের অপর দুই আত্মঘাতী সদস্য স্টেডিয়ামের বাইরে ওঁত পেতে ছিল। স্টেডিয়ামে বোমা হামলার পরিণামে ভীত দর্শকরা যখন প্রাণভয়ে বাইরে ছুটবে তখন তারা বোমা হামলা করবে বলে পরিকল্পনা করেছিল।
দায়েশের এ ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি নিরাপত্তা রক্ষীদলের কারণে। স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে দেহতল্লাশিতে ধরা পড়ে এক দায়েশ সদস্য আত্মঘাতী হামলার বেল্ট পরে আছে। নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের বোমা বা শক্তিশালী বিস্ফোরক বাঁধা বেল্টকে আত্মঘাতী পোশাক বা সুইসাইড ভেস্ট বলে থাকে।
স্টেডিয়ামের গেটে ধরা পড়ে যাওয়ায় দায়েশ সদস্য এ সময় দেরি না করে নিজের দেহে বাধা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। তার এ বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্টেডিয়ামের বাইরের দুই দায়েশ সদস্যও তাদের দেহে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে সব হামলাকারীর পাশাপাশি একজন নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
নিরাপত্তারক্ষীর এ দলে বেশ কয়েকজন মুসলমান ছিলেন। তাদের পুরো পরিচয় উদ্ধার করা যায় নি। এ দলের সদস্য জহির মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
এ দায়িত্ব পালনের সময় নিরাপত্তা রক্ষীদলকে প্রাণের ঝুঁকি নিতে হয়েছে। পাশবিক হামলা চালানোর ক্ষেত্রে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, ইহুদি, বৌদ্ধ, শিখ, সাদা-কালো, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ বা শিশু কিছুই বাছ বিচার করে না দায়েশ সন্ত্রাসীরা।
ভয়াবহ সে রাতে মুসলিম নিরাপত্তা রক্ষীরা কেবল প্যারিসের ফুটবল স্টেডিয়ামেই সাহসি ভূমিকা রাখে নি। সেইসঙ্গে অন্যান্য স্থানেও একই রকম নজির স্থাপিত হয়েছে। সেপার নামের এক মুসলমান নিরাপত্তা কর্মীর সাহসিকতায় সেই রাতে কোসা নোস্তা রেস্তোরায় আহত দুই নারী প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
১৭ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�