আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিয়ের দিন সকালেই সব আনন্দ উবে গেল পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির আশিগড়ের স্বপন দাসের বাড়িতে। মেয়ে নন্দিতা দাসের বিয়ের কথা ছিল এলাকার ডাবগ্রামের পাত্র জয়দেব ঘোষের। কিন্তু বরের বাড়ি থেকে আসা একটি খবরেই সবশেষ। আত্মঘাতী হয়েছেন জয়দেব। খবর জিনিউজের।
বৃহস্পতিবার সকালে দধিমঙ্গল পর্ব সারতে জয়দেবকে ডাকতে গিয়ে বাড়ির লোকেরা ঠাকুর ঘরের সামনে থেকে লাফিয়ে পিছিয়ে আসেন। দেখেন গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে জয়দেবের নিথর দেহ। আনন্দের সানাইয়ের জায়গায় কয়েক মুহূর্তে ঘর ভরে যায় অসহ্য কান্নায়।
ঠিক কি কারণে এমন ঘটনা ঘটল তা বুঝেই উঠতে পারছে না বাড়ির লোকজন। পাত্রী পছন্দের। নেই অন্য কোনও সম্পর্ক। তাহলে কেন এরূপ ঘটনা ঘটাল জয়দেব, তার হদিস করতে হয়রান পরিবার। নিজের সঙ্গে আরও একটি পরিবারকে বিপদের মুখে ফেলে দিল সে।
শিলিগুড়ি থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেয় ময়নাতদন্তর জন্য। মৃত জয়দেব ঘোষ এর বৃদ্ধা মা, দিদা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিধ্বস্ত গোটা ঘোষ পরিবার। অন্যদিকে, কন্যা দায়গ্রস্থ পিতা স্বপন দাস এর পরিবারে কপালে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
সমাজ তাকে লগ্নভ্রষ্ঠার পাশাপাশি নানা রকম তকমা দিয়ে দেবে। এই ঘটনা নিয়েই আলোচনা চলছিল শিলিগুড়ির সুর্য নগর মাঠে মর্নিং ওয়াক-এ আসা একটি দলের মধ্যে। এরা প্রতিদিন সকালে এখানেই মিলিত হন।
ওই গ্রুপেরই এক সদস্য ডাবগ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ সরকার। গোবিন্দবাবু পুরো ঘটনা শুনে বলেন, ‘আমার শালা অবিবাহিত। তার জন্য অবশ্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। তাকে বলে দেখা যেতে পারে। যদি সে রাজি হয় তাহলে নন্দিতা দাসের সঙ্গে আজই বিয়ে দেবে।’
গোটা ঘটনা গোবিন্দ সরকার তারা শালা প্রদীপ দামকে জানবার পর তিনি রাজি হয়ে যান। জানানো হয় মেয়ের বাড়িকে। তারা ছেলের বাড়িতে এসে ছেলেকে দেখেশুনে বিয়ের জন্য রাজি হয়। এমন ঘটনা ঘটার পর পাত্রী নন্দিতা দাস বাকরুদ্ধ। তিনিও রাজি।
অবশেষে বিয়ের পিড়িতে বসছেন প্রদীপ দাম ও নন্দিতা দাস। প্রদীপ দামের বক্তব্য, ‘আমি সমস্ত ঘটনা শুনে রাজি হয়েছি। এমন অবস্থায় মেয়েটি কোথায় যাবে।’ মেয়ের বাবা স্বপন বাবু জানান, ‘আমরা তো আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। তবে এই ছেলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ থাকলাম।‘
এমটিনিউজ/এসএস