আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফেব্রুয়ারির দশ তারিখেই ২৩ বছরে পা দিত ছেলে। বাড়ি ফেরার জন্য টিকিটও কেটে ফেলেছিল। তার বদলে এল ছেলের কফিনবন্দি দেহ। একজন মায়ের কাছে এই যন্ত্রণা তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে কী বললেন মা, জানলে আপনিও শ্রদ্ধা জানাবেন।
কিন্তু তিনি যে একজন শহিদের মা। পাক গোলাগুলিতে ছেলেকে হারানোর পরেও তাই তিনি বুকে যন্ত্রণা চেপে রেখে বলতে পারেন, ‘‘আমার আর একটা ছেলে থাকলে তাকেও সেনাবাহিনীতে পাঠাতাম।’’
গত রবিবার জম্মুর রাজৌরিতে রাইফেলম্যান রাম অবতার, শুভম সিংহ, হাবিলদার রোশন লালের সঙ্গে পাকিস্তানের ছোড়া অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইলের বলি হন গুরুগ্রামের পতৌদির বাসিন্দা ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডু। সেনাবাহিনী শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পরে শহিদ ক্যাপ্টেনের দেহ তুলে দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের হাতে। ২০১২ সালে মারা গিয়েছেন কপিলের বাবা। স্বামীকে হারানোর ছ’বছরের মধ্যেই একমাত্র ছেলেকেও হারালেন কপিলের মা সুনীতা কুণ্ডু।
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ছেলেকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়েই ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডুর মা বলেছেন, ‘‘আমার আর একটা ছেলে থাকলে তাকেও সেনাবাহিনীতে পাঠাতাম। আমার ছেলে বেঁচে থাকলে হয়তো আরও পনেরো-কুড়ি বছর দেশের সেবা করতে পারত।’’
ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন কপিল। ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখে জন্মদিনে বাড়ি এসে মা এবং দিদিদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল কপিলের। তার আগেই অবশ্য সবকিছু থেমে গিয়েছে।
কপিল জীবনকে একটু অন্যভাবেই দেখতে ভালবাসতেন। ফেসবুক পেজে নিজের জীবনদর্শনও তুলে ধরেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘‘জীবনটা লম্বা নয়, বড় হওয়া উচিত।’’ অন্য একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘তুমি যদি দৌড়তে না পারো, তাহলে হাঁটো। হাঁটতে না পারলে হামাগুড়ি দাও।
কিন্তু নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনো না পর্যন্ত থেমো না।’’ দেশের জন্য জীবন বাজি রাখতে যিনি রাজি ছিলেন, যাঁর জীবনদর্শন এমন, সেই শহিদের মায়ের মুখেই বোধহয় উপরের কথাগুলি মানায়। --এবেলা
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস