আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে তার কোনো খবর কোথাও নেই। দিল্লি হোক বা গুজরাত— বিজেপির কিছু নেতাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাদের কাছেও খবর নেই। ঘুরেফিরে একই জবাব, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী। হাইপ্রোফাইল বিষয়। আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।’’ একজন তো বলে বসলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী বলে খোঁজ নেয়াও বারণ!
গত বুধবার সকাল দশটা নাগাদ রাজস্থানে যশোদাবেনের গাড়ির সঙ্গে একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। পরিবারের একজন মারা যান। এখন কেমন আছেন যশোদা? টেলিফোনে ধরা গেল তার ভাই অশোক মোদিকে। গুজরাতের মেহসানায় তার সঙ্গেই থাকেন যশোদাবেন। তিন বছর আগে পাসপোর্টের আবেদনে যশোদাবেন যখন স্বামী হিসেবে মোদির নাম লেখেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে আবেদন খারিজ করেছিল। বলেছিল, বিয়ের সার্টিফিকেট কিংবা স্বামী-স্ত্রীর যৌথ হলফনামা নেই। সেই সময়ও এই অশোকই যশোদাবেনের পাশে দাঁড়িয়ে সরব হয়েছিলেন।
সেই অশোকই এ দিন বললেন, ‘‘যশোদাবেন আপাতত ঠিকই আছেন। বাড়ি ফিরে এসেছেন। তার হাতের আঙুলের হাড় ভেঙেছে।’’ দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী কিংবা তার দফতর থেকে কোনো ফোন? কোনো খোঁজ নেয়া? অশোক মোদির আফশোস, ‘‘কোনো ফোন আসেনি। কেউ খোঁজ নেননি। গুজরাত সরকারের থেকেও কেউ খোঁজ নেয়নি। তবে দুর্ঘটনার সময় রাজস্থান সরকার সাহায্য করেছে।’’
ঘটনাচক্রে দুর্ঘটনার দিনই সংসদের দুই সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেত্রী রেণুকা চৌধুরির হাসি নিয়ে কটাক্ষ করেন। তখনই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, নিজের স্ত্রীকে যিনি সম্মান দিতে জানেন না, তিনি কী করে অন্য মহিলার সম্মান রক্ষা করবেন? অনেকেরই মত, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে বাধ্য হয়ে প্রথম বার স্ত্রী-র নাম হলফনামায় লিখেছিলেন মোদি। দুর্ঘটনার পর একবার খোঁজ নিতে পারতেন!
বিজেপি নেতাদের অবশ্য মত, এটি নিতান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
ভারতের রাজধানী দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ হলিউড অভিনেতা পিয়ার্স ব্রসনানের কাছে তামাকজাত স্থানীয় একটি মাউথ ফ্রেশনারের বিজ্ঞাপনে তার ছবি থাকার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে।
১০ দিনের মধ্যে সাবেক এ জেমস বন্ড তারকা প্রতিক্রিয়া না জানালে তার ৫ হাজার রুপি জরিমানা কিংবা দুই বছরের কারাদণ্ডও হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ব্যাখ্যা না দিলে কী উপায়ে ব্রসনানের সাজা কার্যকর করা হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভারতের আইনে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
পানবাহারের বিজ্ঞাপনে ব্রসনানকে প্রথম দেখা গিয়েছিল ২০১৬ সালে। সে সময় ওই ছবিকে ‘অনুনোমোদিত’ বলে তা সরিয়ে নিতে দাবিও তুলেছিলেন তিনি। দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ‘আমরা কোম্পানির মাধ্যমে পিয়ার্স ব্রসনানের নামে নোটিশ দিয়েছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেও তার কাছে এটি পৌঁছানো হয়েছে।’
পান মসলা, তামাকের শক্তিশালী মিশ্রণ গুটকা, সুপারির থগুঁড়া, চুন, লবঙ্গসহ নানা উপাদানে পানবাহার তৈরি হয়। চিবিয়ে ব্যবহারযোগ্য এ পণ্যটি ভারতের লাখ লাখ মানুষকে মৃদু আসক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
যদিও পণ্যটির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অশোক অ্যান্ড কোং ২০১৬ সালে বিবিসির কাছে পানবাহারে তামাক বা নিকোটিনের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেছিল।
পরে পিপলস ম্যাগাজিনকে দেয়া সাাৎকারে ব্রসনান জানান, ‘শ্বাস বিশুদ্ধিকরণ বা দাঁত প্রক্ষালক’ একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে তার সাথে অশোক অ্যান্ড কোংয়ের চুক্তি হয়েছিল। ওই পণ্যে কোনো ‘তামাক’ বা ‘তিকর পদার্থ’ নেই বলেও মন্তব্য করেন এ হলিউড অভিনেতা।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর