শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ০৯:৩০:২৬

অশ্লীল ভিডিও সাইটে আসক্ত স্বামী, নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে স্ত্রী

অশ্লীল ভিডিও সাইটে আসক্ত স্বামী, নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে স্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বামী দিন-রাত আজে-বাজে ওয়েবসাইটে বুঁদ হয়ে থাকেন। বিয়ে ভাঙতে বসেছে। তাই নীল ভিডিওর ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করার আর্জি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জানালেন এক মহিলা।

মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ওই মহিলা দেশের শীর্ষ আদালতে তার কৌঁসুলি কমলেশ ভাসওয়ানির মাধ্যমে জানিয়েছেন, নীল ছবির ওয়েবসাইটে তার স্বামী ভীষণ ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। নাওয়া-খাওয়া, কাজকর্ম ভুলে দিবারাত্র ওই ওয়েবসাইটগুলিতেই বুঁদ হয়ে থাকেন তার স্বামী।

তার ফলে ওই মহিলার দাম্পত্য জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাই ওইসব ওয়েবসাইটগুলিকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন ওই মহিলা। পারিবারিক আদালতে ইতিমধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদেরও আর্জি জানিয়েছেন ওই মহিলা।

মহিলার অভিযোগ, তার ৩৫ বছর বয়সী স্বামী এতটাই ‘বিকৃতমনা’ হয়ে পড়েছেন যে, তিনি ঘরে ও কর্মক্ষেত্রে তার স্বাভাবিক কাজগুলিও আর করেন না। এমনকী, মেটাতে পারেন না তার স্ত্রীর স্বাভাবিক শারীরিক চাহিদাও। তার ফলে, রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছেন ওই মহিলা।

ভারতের আজে-বাজে ভিডিওর ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে ২০১৩ সালে এক আইনজীবীর দায়ের করা মামলারও শরিক হতে চেয়েছেন তিনি। শিশু নীল ছবি অবৈধ হলেও, সব ধরনের নীল ছবির ওয়েবসাইট বাড়িতে দেখা আর তা ছড়ানোয় কোনও আইনি বাধা নেই।

প্রকাশ্যে সব ধরনের খোলামেলা ভিডিও ওয়েবসাইট দেখা ও ছড়ানো নিষিদ্ধ করা সম্ভব কি না, এ ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে ভারত সরকার এ ব্যাপারে খুব বেশি এগোতে রাজি নয়।

সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতে জানানো হয়েছে, তারা চায় শুধু শিশু নীল ছবি নিষিদ্ধ থাকুক ভারতে। তার বেশি এগোলে ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। সরকারের কাজ কখনও ‘নীতি পুলিশ’-এর মতো হতে পারে না।

সুপ্রিম কোর্টে তার আর্জিতে ২৭ বছর বয়সী ওই মহিলা বলেছেন, ‘ওই ওয়েবসাইটগুলি দেখে উনি (মহিলার স্বামী) শারীরিক ভাবে এতটাই অক্ষম ও শক্তিহীন হয়ে পড়েছেন যে, আমার স্বাভাবিক শারীরিক চাহিদাও আর মেটাতে পারছেন না। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উনি বহু বার আমাকে (প্রচার অযোগ্য শব্দ) বাধ্য করিয়েছেন। দাম্পত্যে ওর এই অস্বাভাবিক চাহিদায় আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’

মহিলা এও বলেছেন, বিয়ের অনেক পরে তিনি জানতে পারেন কৈশোর থেকেই তার স্বামী নীল ছবিতে আসক্ত হয়ে পড়েন। শীর্ষ আদালতে তার আর্জিতে ওই মহিলা বলেছেন, নীল ছবি সহজলভ্যতাই এ দেশের প্রগতির অন্তরায় হয়ে উঠেছে। যুবকরা দিনকে দিন বেশি সংখ্যায় এতে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। তার ফলে, হয়ে পড়ছেন বিকৃতমনা। এতে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। বিকৃতমনা অপরাধ বাড়ছে, উত্তরোত্তর কমছে স্বাভাবিক শারিরীক ক্ষমতা। তার বড় প্রভাব পড়ছে দাম্পত্য সম্পর্কগুলিতে।

গত বছর আদালতে এমনই একটি আর্জি জানিয়েছিলেন আরও এক মহিলা। তারও অভিযোগ ছিল, নীল ছবির ওয়েবসাইটগুলি তার দাম্পত্য জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। হালে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীও অশ্লীল সাইটগুলি ‘ব্লক’ করার আর্জি জানিয়েছেন আদালতে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে