আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যত দিন বাঁচবেন, তত দিনই প্রেসিডেন্ট পদ নিজের হাতে রেখে দেওয়ার পথ খুলে ফেললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। একটানা ১০ বছরের বেশি থাকা যাবে না প্রেসিডেন্ট পদে- চীনা সংবিধানে এত দিন এমনই লেখা ছিল।
কমিউনিস্ট পার্টির সুপারিশে সিলমোহর দিয়ে রোববার সেই সাংবিধানিক সংস্থানের অবলুপ্তি ঘটাল চীনের পার্লামেন্ট 'ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস'। ২০১২ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন শি চিনফিং।
২০১৩ সালে হন চীনের প্রেসিডেন্ট। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় বার পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের চলতি অধিবেশনেই দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদেও নির্বাচিত হচ্ছেন।
দেং শিয়াও পিং-এর আমল থেকে যে যৌথ নেতৃত্বের ধারণায় ভর করে চীন এগিয়েছে, তাতে কোনও নেতাই একটানা দু' বারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে বসেননি। চীনের সংবিধানেই সেই সংস্থান তৈরি করা হয়েছিল। কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদ চীনা সংবিধানের আওতায় পড়়ে না।
কিন্তু যৌথ নেতৃত্বের ধারণার প্রতি সম্মান দেখাতে এবং ক্ষমতার মসৃণ হস্তান্তর সুনিশ্চিত করতে জিয়াং জেমিন, হু জিনতাওরা ১০ বছরের বেশি রাজত্ব করার চেষ্টাই করেননি। পূর্বসূরিদের তৈরি করা সেই পরম্পরা বহাল রাখলেন না প্রেসিডেন্ট চিনফিং। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সর্বোচ্চ সময়সীমার অবলুপ্তি ঘটালেন তিনি।
২০১২ সালে পার্টির এবং ২০১৩ সালের রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর থেকেই চীনে নিজের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছিলেন শি। দলে নিজের বিরোধীদের ক্রমশ কোণঠাসা করে দেন তিনি। অনেকের উপরেই শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে।
সরকারের বিভিন্ন স্তর থেকেও একে একে ছেঁটে ফেলা হয় শি শিবিরের অপছন্দের কর্তাদের। তাদের অনেকেই এখন দিন কাটাচ্ছেন জেলে। শি চিনফিং জমানায় সমাজের উপরে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও দৃঢ় হয়েছে চীনে। সুশীল সমাজের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে সাংঘাতিক ভাবে। নজরদারি বেড়েছে চীনের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েইবো-র উপরেও।
এমটিনিউজ/এসএস