আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শোকবিধুর এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে নিজ সন্তান হারিয়েও এলাকায় শান্তি কায়েমে ভূমিকার জন্য সবাই তাঁর প্রশংসা করছে এখন। গত ২৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে রামনবমীর দিন তুচ্ছ ঘটনায় দাঙ্গা বেধে যায়। হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষের হানাহানি আর চরম উত্তেজনার মাঝে শান্তির দূত হিসেবে হাজির হন স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা ইমদাদুল রশিদি। অথচ এই দাঙ্গায়ই তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে সিবতুল্লা রশিদিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
দেশজুড়ে মিডিয়ার নজরে রশিদি তখনই আসেন যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেন- প্রতিশোধের কথা বলবেন তো আমি এই মসজিদ এবং শহর ছেড়ে চলে যাব।
গত শুক্র আর শনিবারও অনেক ভক্ত অনুসারী ও স্থানীয় লোক তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা তাঁর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অমন স্পর্শকাতর সময়ে এবং কিশোর পুত্র নিহত হওয়ার পরও প্রতিশোধপরায়ন না হয়ে এলাকায় শান্তি আনতে তাঁর ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করেন সবাই।
মাওলানা ইমদাদুল ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, আমি একজন ইমাম হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। নামাজের পর দোয়ার আগে লোকজনকে অনুরোধ করি আপনারা গুজবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন এবং মিথ্যা সংবাদে গুরুত্ব দেবেন না।
গতকাল (শনিবার) তিনি তার অনুসারীদেরও একই উপদেশ দেন। তিনি বলেন, যদি আপনারা কোনো বিষয়ের সত্যতা যাচাই না করতে পারেন কিংবা ঘটনা চাক্ষুষ না করে থাকেন তবে বুঝে নিন সেটা গুজব। তিনি সম্পদ্রায়ের যুবক ও মুরুব্বিদের উদ্দেশে একই কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখানে অনেক ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এইসব গুজবের কারণেই যখন লোকজন ধীরে ধীরে নিজ নিজ ঘরবাড়িতে ফিরছে তখন পরিস্থিতি ফের খারাপ হয়ে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ইমাম সাহেবের ছেলে সিবতুল্লা রশিদি। ১৬ বছর বয়সী সিবতুল্লা গত ২৫ মার্চ দাঙ্গা শুরুর পরই আসানসোল রেল স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর গত বুধবার তার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং বৃহস্পতিবার পরিচয় শনাক্ত হয়। সুরতহাল দেখে পুলিশ ধারণা করছে, কিশোর ছেলেটিকে দাঙ্গাবাজরা পিটিয়ে হত্যা করেছে।
সিবতুল্লা হত্যা মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে উল্লেখ করে আসানসোল পুলিশ জানায়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জনসত্তা.কম
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি