রবিবার, ০১ এপ্রিল, ২০১৮, ০৮:৩২:২৩

ফিলিস্তিনিদের হত্যা করায় সেনাদের ধন্যবাদ জানালেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী

ফিলিস্তিনিদের হত্যা করায় সেনাদের ধন্যবাদ জানালেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভূমি দিবসে শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের নির্মমভাবে হত্যা করায় ইহুদিবাদী সেনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শনিবার এক বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরাইলি সেনারা ‘দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত রেখেছে’ এবং নাগরিকরা ‘শান্তিপূর্ণভাবে ছুটির দিন অতিক্রান্ত করতে পেরেছে’। ‘সেনারা খুব ভালো করেছে’, বললেন তিনি। খবর আল জাজিরার।

গত শুক্রবার গাজায় ফিলিস্তিনিদের ভূমি দিবসের বিশাল বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে ১৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া তাদের হামলায় প্রায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতিসঙ্ঘ ওই গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এর মধ্যদিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতে ফেরার যাত্রা শুরু হলো।

প্রতি বছর ৩০ মার্চ ফিলিস্তিনিরা নিজ ভূমিতে ফেরার দাবিতে ভূমি দিবস পালন করে থাকে। ১৯৭৬ সালের ওই দিনে ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ২১ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি নতুন করে দখলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এরপরই ফিলিস্তিনিরা ওই দিনটিকে ভূমি দিবস হিসেবে নামকরণ করে।

এরই মধ্যে গাজা-ইসরাইল সীমান্তে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর গুলিতে ১৭ জন নিহত ও প্রায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন৷ ফিলিস্তিনিরা সীমানা অতিক্রমের চেষ্টা করলে হামলার প্রকৃতি আরো কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ইসরাইল৷

ইসরাইলের প্রধান সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রোনেন ম্যানেলিস শনিবার এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন৷ তিনি বলেন, শুধু সীমান্তে নয়, বাড়াবাড়ি করলে ‘অন্যান্য জায়গায়' গিয়েও খুঁজে খুঁজে সন্ত্রাসীদের মারা হবে৷

এর আগে হাজারো ফিলিস্তিনি গাজা সীমান্তে বিক্ষোভে জড়ো হলে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরাইলের সেনাবাহিনী৷ ২০১৪ সালের পর এই প্রথম এতটা রক্ত ঝরল ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষে৷

এদিকে, শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঘটনায় একটি ‘স্বাধীন ও স্বচ্ছ’ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন৷ গাজা উপত্যকায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হবার আশঙ্কা থেকে এ আহ্বান জানান তিনি৷ নিরাপত্তা পরিষদে ঘটনার পর তাৎক্ষণিক শুনানি হয়৷

গুতেরেসের এক মুখপাত্র জানান, মহাসচিব বিশ্বকে সেখানে শান্তি প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন করার জন্য তৈরি থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷

কুয়েতের আহ্বানেই জরুরি সভা ডাকা হয়৷ কিন্তু সেখানে ইসরাইলের প্রতিনিধি অংশ নিতে পারেননি৷ কোনো কোনো দেশ সময় সংক্রান্ত জটিলতায় জাতিসংঘে তাদের প্রধান দূতের বদলে সহকারীদের পাঠিয়েছে৷

যুক্তরাষ্ট্রের দূত বলেন, ‘কাউন্সিলে ভারসাম্য রাখা উচিত৷ সব পক্ষের উপস্থিতি থাকলেই ভালো হতো৷’

ফ্রান্সের প্রতিনিধি বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই নাজুক৷ গাজা উপত্যকায় নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে৷’

এদিকে, ইসরাইল ঘটনার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে৷ তারা একটি লিখিত বক্তব্যে দাবি করেছে যে, যখন ইহুদিরা সবাই ছুটি কাটাতে ব্যস্ত, তখন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে৷

ঘটনার শুরু যখন গত শুক্রবার হাজারো ফিলিস্তিনি গাজা সীমান্তে উপস্থিত হন৷ তাদের দাবি ছিল, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল গঠিত হবার সময় যুদ্ধে যেসব ফিলিস্তিনি পালিয়ে গেছেন, তাদের ফেরত আসতে দিতে হবে৷

কিন্তু ইসরাইল বলছে, এই বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে হামাসের সদস্যরা ইহুদি রাষ্ট্রটিতে প্রবেশ করতে চেয়েছে এবং নাশকতা করার পরিকল্পনা করেছে৷

তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর ড্রোন ব্যবহার করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে৷ এছাড়া সেনারা গুলিবর্ষণ করেছে৷ এই গুলিবর্ষণে ১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন৷ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৪শ’ জন৷

এছাড়া হামাসের তিনটি ঘাঁটিতে ট্যাঙ্ক ও বিমান হামলা করা হয়েছে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে