আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ছাগল বাঁচাতে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে রক্তাক্ত হয়েছেন এক তরুণী। ভারতের মহারাষ্ট্র অঙ্গরাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে গত সপ্তাহে এই ঘটনা ঘটে।
বাঘের সঙ্গে লড়াইয়ের কিছুক্ষণ পরে ওই তরুণী একটি সেলফি তোলেন। সেই ছবিটি এবার সবার নজরে এসেছে। বুধবার ওই তরুণীর রক্তমাখা ছবিসহ বিবিসি অনলাইন প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ঘটনাটি সবার নজরে আসে।
বাঘের সঙ্গে লড়াই করা ওই তরুণীর নাম রূপালি মেষরাম (২৩)। ঘটনার দিন তিনি তার বাড়ির কক্ষে ছিলেন। বাড়ির পাশেই লতাপাতা খাচ্ছিল তাঁর পোষা ছাগল। হঠাৎ ছাগলের অস্বাভাবিক আওয়াজ শুনে ঘর থেকে দ্রুত একটি লাঠি বের হন রূপালি।
গিয়ে দেখেন, ছাগলটিকে আক্রমণ করে বসেছে একটি বাঘ। রূপালি এবার বাঘের হাত থেকে ছাগলকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। হাতের লাঠি দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে বাঘকে। একপর্যায়ে বাঘও তার ওপর হামলে পড়ে। বাঘের সঙ্গে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে রক্তাক্ত হন এই তরুণী।
তিনি কোমরে, পায়ে ও দুই হাতে আঘাত পান। বিষয়টি টের পেয়ে রুপালির মাও গিয়ে সেই লড়াইয়ে যোগ দেন। বাঘের আক্রমণ থেকে মেয়ে ও ছাগলকে রক্ষা করতে গিয়ে মাও চোখের কাছে আঘাত পান। পরে মা ও মেয়ে দুজনই স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
চিকিৎসা শেষে ইতিমধ্যে তারা হাসপাতাল ছেড়েছেন। কিন্তু যার জন্য এত লড়াই, সেই ছাগলকে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি। তবে রূপালি এবং তাঁর মা মোটামুটি সুস্থ, তারপরও তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রুপালিকে চিকিৎসা দিয়ে বিস্মিত হয়ে যান চিকিৎসক। বাঘের সঙ্গে তার লড়াই ‘সাহসিকতার উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেন ওই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘সে (রূপালি) খুব ভাগ্যবান যে বাঘ তার শরীরে কামড় বসায়নি।’
রূপালির মা জিজাবাই বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়ে মরতে বসেছে। একটি লাঠি দিয়ে আমার মেয়ে বাঘটিকে প্রতিহত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছিল। এতে আমি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। এরপর আমিও এগিয়ে যাই।’
রূপালি ও তার মা জিজাবাই বলেন, এ ঘটনায় তারা স্থানীয় এক বনরক্ষীর সাহায্য চেয়েছিলেন। প্রায় আধঘণ্টা পরে বনরক্ষী ঘটনাস্থলে যান। তবে তার আগেই বাঘটি চলে যায়।
রূপালি বলেন, ‘এমন একটি হামলার পর খুব শিগগিরই আমি আমার গ্রামে ফেরার বিষয়ে সামান্য উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে আমার মধ্যে সেভাবে ভয় কাজ করেনি।’
এমটিনিউজ/এসএস