বৃহস্পতিবার, ০৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:৪৩:২৪

চোখের সামনে মাকে খুন, ভয়াবহ ঘটনার বিবরণ দিল ৪ বছরের শিশু

চোখের সামনে মাকে খুন, ভয়াবহ ঘটনার বিবরণ দিল ৪ বছরের শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শুভময় মণ্ডল ও মণিশংকর চৌধুরি: ওরা আমার মাকে মেরে ফেলেছে। আর্তনাদ চার বছরের শিশুর। তার চোখে-মুখে প্রবল আতঙ্কের ছাপ। শিশুমনের বিভীষিকা কিছুতেই  যেন কাটতে চাইছে না। মা হারানোর যন্ত্রণার পাশাপাশি চোখের সামনে হত্যাকারীদের অবাধ বিচরণ। সব মিলিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শিশুটি।

তবে থেমে থাকেনি সে। কীভাবে মাকে হত্যা করা হয়েছিল সেই ভয়াবহ বিবরণ সবাইকে জানিয়ে চলেছে সে। অবোধ ওই শিশু জানে না ন্যায় কী? হত্যা কাকে বলে? তবে যারা তার মাকে কেড়ে নিয়েছে তাদের প্রতি ঘৃণায় ভরে উঠেছে শিশুটির মন।

ঘটনার সূত্রপাত মার্চ মাসের তিন তারিখ। অভিযোগ, ওই দিনই হত্যা করা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার দত্তের চক গ্রামের বাসিন্দা রিংকু মুখোপাধ্যায়কে। অভিযোগ, পণের দাবি না মানায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ওই গৃহবধুকে।

মৃতার বাবা তপন চক্রবর্তী জানান, বছর পাঁচেক আগে দত্তের চক গ্রামের বুদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার এলাকার বাসিন্দা তপনবাবু জানান, ৩ মার্চ তাঁর কাছে একটি ফোন আসে।

শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানান, মেয়ে খুব অসুস্থ। তাই তাঁকে মথুরাপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি যেন সেখানে চলে আসেন। একথা শোনার পর তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে যান তিনি ও পরিবারের বাকি সদস্যরা।

হাসপাতালে গিয়ে তপন বাবু দেখতে পান তাঁর মেয়েকে একটি স্ট্রেচারে শুইয়ে রাখা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও নেই সেখানে। শুধু প্রতিবেশী দু’জন ব্যাক্তি তাঁদের জানায় মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। অবশ্য তারাও হাসপাতাল থেকে সরে পড়ে। এরপরই মেয়ের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তিনি।

অভিযোগ জানান হয় থানায়। তপনবাবু জানান, ওই দিন রাত প্রায় ১০টা নাগাদ হাসপাতালে আসে পুলিশ। দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পরেরদিন মথুরাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় রিংকুর স্বামী বুদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে। তবে অভিযোগ পত্রে নাম থাকলেও, পরিবারের বাকি সদ্যদের গ্রেপ্তার করতে রাজি হয়নি পুলিশ।

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁদের উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবার আদালতেও চলছে হত্যা মামলা।

ইতিমধেই সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি অভিযুক্তদের। তবে ঘটনায় মোড় এনেছে মৃতার চার বছরের মেয়ে দিয়া। ওই খুদে শিশুর দাবি, তার মাকে হত্যা করেছে দাদু, ঠাকুমা, জ্যাঠা ও জেঠি। তারাই গলা টিপে মেরেছে রিংকুকে তারপর তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। যদিও মৃতার বোনের স্বামী সোমনাথ চক্রবর্তী জানান, দিয়ার বয়ান রেকর্ড করেনি পুলিশ।

অভিযোগ, মৃতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেও তা নিয়ে মুখ খুলছে না পুলিশ। এমনকি তদন্তের নিয়ম অবহেলা করে দিয়ার  জবানবন্দিও নেয়নি তারা। ফোনে তপনবাবু জানান, বড় আশা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

জামাই চিটফাণ্ডের এজেন্ট। মাঝে বেশ কিছু ধার-দেনায় পড়ে সে।  তখন তাঁকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করেন তিনি। এরপর থেকেই ক্রমাগত টাকার দাবি আসে। তিনি টাকা দিতে না পারায় ফল ভুগতে হল তাঁকে।-সংবাদ প্রতিদিন
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে