শুক্রবার, ০৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৫:০৯:০৪

মৃত্যুর আগে বাবাকে ফোন ছেলের ‘মাথায় গুলি লেগেছে, আর পারছি না, ক্ষমা করে দিয়ো’

মৃত্যুর আগে বাবাকে ফোন ছেলের ‘মাথায় গুলি লেগেছে, আর পারছি না, ক্ষমা করে দিয়ো’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কমান্ড বাহিনী ঘিরে ফেলেছে গোটা বাড়ি। সেই বাড়িরই এক বাসিন্দার মোবাইল চেয়ে বাবাকে ফোন করল ছেলে। নিহত জঙ্গি ইতমাদ হুসেন দারের সঙ্গে তার বাবার সেই কথোপকথন এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই প্রথম এমন কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হতে দেখলো কাশ্মীর।

রোববার রাজ্যটির শোপিয়ানের কাছদুরায় একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে ভারতীয় সেনার কমান্ড বাহিনী। সেই সময়েই বাড়ির এক বাসিন্দার ফোন চেয়ে বাবাকে ফোন করে বছর ছাব্বিশের ইতমাদ হুসেন দার। তার বাড়ি শোপিয়ানেরই আমশিপোরায়। ফোন করে বাবার কাছে প্রথমেই ক্ষমা চায় সে।

বলে, ‘আমি কখনও কোনও অপরাধ করে থাকলে ক্ষমা করে দিয়ো।’ তখনই কান্নার রোল ওঠে বাড়িতে। ইতমাদ জানায়, দুই জঙ্গি পালিয়েছে। কিন্তু তারা পালাতে পারছে না। ইতমাদের বাবা বলেন, ‘আমি কি তোমাকে আত্মসমর্পণ করতে বলতে পারি?’ ইতমাদ জানিয়ে দেয়, আত্মসমর্পণ করবে না সে।

বাবা বলেন, ‘বেশ যা করলে তুমি খুশি থাক তাই করা উচিত। পারলে বাহিনীর কর্ডন ভেঙে পালিয়ে যাও। না পারলে আর কি করা যাবে?’ পরে চোখের জল চেপে বাবার মন্তব্য, ‘তুমি স্রষ্টার দান। তার কাছেই তোমায় ফিরিয়ে দিলাম।’

ইতমাদ জানায়, তার সঙ্গী ইশফাক ঠোকরও বাড়িতে কথা বলতে চায়। তারপরেই সে বলে, ‘মাথায় গুলি লেগেছে। চোখ জড়িয়ে আসছে। আর কথা বলতে পারছি না।’ কথাবার্তা এখানেই শেষ।

কিন্তু এই কথোপকথন থেকে দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের। তারা মানছেন, বাড়ির লোকও যখন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণে রাজি করাতে পারছেন না তখন পরিস্থিতি সত্যিই কঠিন। গত কয়েক মাসে বার বার স্থানীয় যুবকেরা জঙ্গি সংগঠন ছে়ড়ে মূলস্রোতে এলে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ হয়নি।

রবিবারই অনন্তনাগে দুই জঙ্গিকে আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। এক জন রাজি হয়। কিন্তু অন্য জনের সঙ্গে তার বাবা-মা দীর্ঘ ক্ষণ কথা বললেও সে রাজি হয়নি। স্থানীয়দের বিশ্বাস ফিরে পাওয়া যে এখনও দূর অস্ত তা একান্তে মেনে নিচ্ছেন ভারত প্রশাসনের নিরাপত্তা কর্মকর্তারাই।

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে