রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:১০:৫৪

মিয়ানমারে দমন অভিযান, এবার পালাচ্ছে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা

মিয়ানমারে দমন অভিযান, এবার পালাচ্ছে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর পর এবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে দমন অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। আদিবাসী খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর উপর চালানো অভিযানের মুখে  চীন সীমান্তের ওই প্রদেশ থেকে চলতি এপ্রিলে প্রায় চার হাজার লোক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

২০১১ সালে ১৭ বছর ধরে চলা অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়ার পর থেকে পর্বতময় এলাকাটিতে মিয়ানমারের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) সঙ্গে মিয়ানমারের বাহিনীগুলোর নিয়মিত সংঘর্ষ হয়ে আসছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সঙ্গে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর লড়াই আরো তীব্র হতে পারে। এতে ওই এলাকার মানবিক পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ইতিমধ্যে কয়েক হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হওয়ার পাশাপাশি আরও বহু মানুষ সংঘাত কবলিত এলাকায় আটকা পড়ে আছেন। এসব এলাকায় ত্রাণ সংস্থাগুলো প্রবেশাধিকার চেয়েছে। জাতিসংঘ দফতরের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ক মার্ক কাটস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এদের মধ্যে গর্ভবতী নারী, বয়স্ক, শিশু আর প্রতিবন্ধীরাও রয়েছেন।

মিয়ানমার সরকারী বাহিনীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন আদিবাসী সংখ্যালঘুদের সংঘাত লেগে আছে। বৌদ্ধ প্রধান মিয়ানমারে সংখ্যালঘু কাচিনরা প্রধানত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। নিজেদের অঞ্চলগুলোর অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ১৯৬১ সাল থেকে তারা মিয়ানমারের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। কাচিন এবং উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশ থেকে এই সংঘাতের কারণে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত মাসে এক প্রতিবেদনে ইউএনএইচআর কাচিনে বিচার বহির্ভূত হত্যা, নির্যতন ও যৌন সহিংসতার মতো অপরাধের উল্লেখ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের   অভিযোগ এনেছে।

জাতিসংঘের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়তে চান সু চি

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন মিয়ানমারের কার্যত সরকার প্রধান অং সান সু চি। এই সংকট কাটাতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করতে চান তিনি। একইসঙ্গে হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে চান সু চি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে বলা হয়েছে, সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন সু চি। জাতিসংঘকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিতে পারেন সু চি।

বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দিতে প্রস্তাব করবেন। এ এর মধ্য দিয়েই তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করতে পারেন। প্রসঙ্গত, জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি হলেও এখনো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করেনি মিয়ানমার।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে