সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩০:৩৭

কেরোসিন দিল শ্বশুর, দেশলাই দিল স্বামী

কেরোসিন দিল শ্বশুর, দেশলাই দিল স্বামী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এমন নির্মম ঘটনা যে কাউকে নাড়া দেবে। মাত্র ১৯ বছর বয়সী গৃহবধূ। সেই গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেন তারই শ্বশুর আর দেশলাই এনে জ্বালিয়ে দেন তার স্বামী। এমন নিষ্ঠুর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কালনার শিকারপুরে। পাষণ্ড শ্বশুরবাড়ির শিকার গৃহবধূটির নাম হেনা বিবি। অ্যাপেনডিসাইটিসের যন্ত্রণায় কাতর ওই গৃহবধূর।চিকিৎসার কোনো বালাই নেই। তার ওপর দিনরাত শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার। ‘গায়ে আগুন দিয়ে মর’ এমন কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। সেই কাজটি করলেন তার শ্বশুর। কেরোসিনভর্তি জার এনে এগিয়ে দিলেন তিনি, স্বামী এগিয়ে দিলেন দেশলাই। গৃহবধূর গায়ে আগুন দিয়েছিলেন ঘরভর্তি লোকের সামনে। কিন্তু কেউ বাধা দেয়নি। দাউ দাউ করে আগুনে যখন পুড়ছিলেন তার মরণ চিত্‍কারে ছুটে এসেছিলেন প্রতিবেশিরা। প্রতিবেশিরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি তার। কালনার শিকারপুরের হেনা বিবির মৃত্যু হয় গতকাল রোববার ভোরে। ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। প্রতিবেশিদের অভিযোগ, তারা অসুখ হওয়ার জন্য হেনাকে দায়ী করেছিলেন। স্রেফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওষুধ বা চিকিৎসা করার খরচ তাদের নেই। গায়ে আগুন দিয়ে মরাই ভালো। এদিকে রোববার রাত পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের না হলেও কালনা মহকুমা হাসপাতাল থেকে খবর দেয়া হয়েছে পুলিশে। মৃতার মামা সিরাজুল শেখ মিঞা বলেন, অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ পরামর্শ দেয়, আগে রোগীকে বাঁচান, পরে অভিযোগ। আট মাস আগে মন্তেশ্বরের ভৈরবপুরের হেনা বিবির সঙ্গে বিয়ে হয় কালনার শিকারপুরের যুবক মিলন মল্লিকের। সিরাজুল জানিয়েছেন, হেনা মৃত্যুর আগে তাকে বলেছিল, শনিবার সকালে কালনার এক চিকিত্‍সকের কাছে তাকে নিয়ে গিয়েছিল মিলন। চিকিত্‍সক এক্স-রে করতে বলেছিলেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি। এরপর তার অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা উঠলে শ্বশুর-শাশুড়ি-স্বামী বা দেবর কেউ সাহায্য তো করেননি, উল্টো শ্বশুর-স্বামী মিলে কেরোসিনভর্তি জার এগিয়ে দিয়ে আত্মঘাতী হতে বলে৷। রাগে অভিমানে হেনা নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে নেন। দেশলাই চাইলে স্বামী তাতে বাড়িয়ে দেন। এরপরই গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন হেনা। প্রতিবেশিরা প্রথমে তাকে কালনা মহকুমা হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। মৃতের বাবা ইজাবুল শেখ জানান, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে থানায় এফআইআর করা হবে। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে। তথ্যসূত্র : এই সময় ৩০ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে