অবশেষে খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কার্বন নিঃসরণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেয়া দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে এখনও কিছু বিষয়ে মতভিন্নতা থাকায় আগামী সপ্তাহে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার পর এই খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে, জলবায়ু বিষয়ে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের সিনেটরদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য জলবায়ু তহবিল বাড়ানোর বিষয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে শনিবার। গেল চার বছর ধরে প্রস্তুত করা ৪৮ পৃষ্ঠার ওই খসড়া অনুমোদন করেন, সম্মেলনে যোগ দেওয়া বিশ্বের ১৯৫ দেশের প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনের ফরাসী দূত লরেন্স তুবিয়ানা জানান, অনুমোদন হলেও খসড়াটির কিছু কিছু ধারা ও শর্তের বিষয়ে মতবিরোধ ও বিতর্ক রয়ে যাওয়ায়, আগামী সপ্তাহে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে। এর পরই হবে চুক্তি সই।
তিনি আরও বলেন, 'সকলের সম্মতি এই প্রস্তাবটি চুক্তিতে পরিণত হবার ক্ষেত্রে একটি সদিচ্ছার প্রকাশ। এখনো আমাদের বড় বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে একমত হবার মতো কাজে একমত হবার পালা।'
প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে চুক্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত 'অ্যাডহক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ডারবান প্লাটফর্ম ফর এনহ্যান্স' এই খসড়াটি প্রস্তুত করে। যা নিয়ে অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকায় ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ কার্বন নি:সরণ রোধের যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তা ভেস্তে গেছে। এই চুক্তি সই হলেও গরীব রাষ্ট্রগুলো কতোটুকু লাভবান হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
গ্রিনপিসের হেড অব দি ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট পলিটিক্স মার্টিন কাইসার বলেন, 'এখনো পর্যন্ত প্যারিস সম্মেলনের কি অর্জিত হতে যাচ্ছে, তার লক্ষ্য ঠিক করা হয়নি। সপ্তাহের শেষ নাগাদ আমরা ভালো জায়গায় পৌঁছাবে তা বলা কঠিন। আর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয়টি সুনির্দিষ্ট না রাখায় প্যারিস সম্মেলন থেকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ফলাফল আনবেনা।'
তবে, মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার টেবিলে থাকা খসড়ায়, এমন অনেক শক্তিশালী দিক রয়েছে যা, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শতাব্দীর শেষ নাগাদ এক দশমিক পাঁচ থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সক্ষম হবে। তবে, তাও অনেকটাই নির্ভর করবে, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ওপর। তাই বিশ্বনেতাদের এমন পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও সতর্কতার সঙ্গেই স্বাগত জানিয়েছেন স্বল্পোন্নত দেশের অনেকেই।
দক্ষিণ আফ্রিকান ডেলিগেট নাফিজো এমজাকাতো বলেন, 'খসড়াটি আগামী দিনের পরিবেশ রক্ষার কাজের ভিত্তি হতে পারে। এর ফলে বিশ্বনেতারা সমস্যাগুলোর রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে পারবেন।'
৬ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটি নিউজ২৪/জুবায়ের/রাসেল
�