আইএসকে অবশ্যই পরাজিত করা হবে: ওবামা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, আমেরিকা ইসলামিক স্টেট (আইএস)’কে ধ্বংস করবে এবং দেশে-বিদেশে তাদের অনুসারীদের পাকড়াও করবে।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে গতকাল রোববার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান বার্নার্দিনোয় এক দম্পতির হামলায় গত বুধবার ১৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হওয়ার পর ওবামা এই ভাষণ দিলেন। তার ভাষণকে বিরল ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই নিয়ে তৃতীয়বার ওভাল অফিস থেকে ভাষণ দিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অনেক যুদ্ধের পর বহু আমেরিকানের প্রশ্ন, আমরা বর্তমানে যে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়ছি তার আশু সমাধান হবে কিনা।’ তিনি বলেন, আমেরিকা যে অব্যাহতভাবে দেশীয় হুমকির সম্মুখীন তা সান বার্নার্দিনোয় হত্যার ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। সান বার্নার্ডিনো বা প্যারিসের ঘটনার সময় সেখানে আমার স্বজনও থাকতে পারতো।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে বলতে চাই, সন্ত্রাসবাদের হুমকি সঠিক। তবে আমরা তা মোকাবেলা করবো। আইএসআইএল এবং যারাই আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাদেরকে আমরা ধ্বংস করবো।’
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের যেকোন দেশে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদেরকে পাকড়াও করবে।’
তবে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে আমেরিকা যে একা নয় তাও জানাতে ভোলেননি ওবামা। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন আরও ৬৫ দেশ তার পাশে রয়েছে ভাষণে সে কথাই বলেছেন ওবামা। এই লড়াইয়ে তিনি মুসলিম সমাজকেও পাশে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, ইসলামের কথা বলে না আইএস। তারা ঠগ ও খুনি। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের মধ্যে আইএস-এর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত মাত্র কয়েকাংশ। সিংহভাগই তাদের ভাবধারাকে মানে না। সন্ত্রাসী হামলার শিকার যারা তাদেরও সিংহভাগ মুসলিম তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলমান সমাজকে বাদ দিয়ে নয় তাদেরকে পাশে নিয়ে একসঙ্গে চলতে চান ওবামা।
তবে যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণে ওবামা নিজের পূর্বসুরি বুশের ভুলের পুনরাবৃত্তি যে আর করবেন না তাও উল্লেখ করেন তার ভাষণে। ইরাকে পদাতিক সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল তা তিনি স্বীকার করেছেন। তাই আইএসকে মোকাবেলায় পদাতিক সেনা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে বিপদের মুখে না ঠেলে দেয়ার পক্ষে ওবামা। তবে সেনা না পাঠালেও আইএসকে দমন করতে তিনি যে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হবেন না তা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন ওবামা।
ক্যালিফোর্নিয়ার গুলির ঘটনাকে তিনি ‘সন্ত্রাসবাদী কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মূলত তিনটি উপায় অবলম্বন করেই আইএস দমনের কথা ভাবছে আমেরিকা। প্রথমত, পদাতিক সেনা না পাঠিয়ে বিমান হামলার মাধ্যমে ইরাক এবং সিরিয়ায় আইএস ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়া। প্রয়োজন অনুসারে দেশটির বিশেষ সৈন্য পাঠাবে। দ্বিতীয়ত, আইএসকে আর্থিক মদত বন্ধ করে দেয়া এবং যাতে আইএসে নতুন জঙ্গি যোগ দিতে না পারে তার ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, স্থানীয় আইএস বিরোধী সেনাদের প্রশিক্ষণ এবং অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করা।
৮ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/জুবায়ের/রাসেল