গরুর গোশত নিয়ে ফের উত্তাল ভারত, গ্রেফতার ৫০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের হায়দ্রাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত গোরুর গোশত উৎসব স্থগিতাদেশ দিল স্থানীয় একটি আদালত। আজ (মঙ্গলবার) হায়দ্রাবাদের একটি আদালতের পক্ষ থেকে ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা গরুর গোশত উৎসবের ওপর ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। গোরুর গোশত উৎসব নিয়ে একটি র্যালির ওপরও স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। তেহেলকা নিউজের বরাত দিয়ে এখবর জানিয়েছে রেডিও তেহরান।
সিটি সিভিল কোর্টের জুনিয়র সিভিল জজ জি রবীন্দর, জনার্দন নামে এক আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে স্থিতাবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জনার্দন তার আবেদনে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেখানে কোনো রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। যদি গরুর গোশত উৎসবের অনুমতি দেয়া হয় তাহলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ আহত হবে। একে তিনি পশু নিষ্ঠুরতা এবং গরু হত্যা আইনেরও লঙ্ঘন বলে দাবি করেন।
ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের ছাত্রদের পক্ষ থেকে আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ র্যালি করার পরিকল্পনাতেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ এরইমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৫০ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। সংশ্লিষ্ট ছাত্ররা অবশ্য বলছে, এটা রাজনৈতিক নয়, মানুষের খাদ্যাভ্যাসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে এই র্যালি। ছাত্ররা এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, একইদিনে অন্য এক ছাত্র সংগঠন গোরুর গোশত উৎসবের ঘোষণা দেয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক রাজা সিং বলেছেন, ‘গোরুর গোশত উৎসব’ প্রাণ দিয়ে হলেও বন্ধ করবেন। তিনি গোরুর গোশত উৎসবের অনুমতি দেয়া হলে গরু পূজার অনুমতি দিতে হবে বলেও দাবি করেছেন।
রাজা সিং বলেছেন, "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের গরু-মাতাকে হত্যা করে সেই গোশত দিয়ে গরুর গোশত বিরিয়ানি করে উৎসবের আয়োজন করা হলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।" তিনি হায়দ্রাবাদে ‘দাদরি’ বানানোরও হুমকি দিয়েছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, গরু-মাতাকে রক্ষা করতে আমরা , প্রয়োজনে প্রাণ নিতেও পারি।’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই এখানে গরুর গোশত খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। সেবার হিন্দুত্ববাদী বিদ্যার্থী পরিষদের সমর্থকরা বাধা দিলে আয়োজকদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। এবার অবশ্য আগেভাগেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�