আবার নৌকা ডুবে আয়লানের মতো পরিণতি ৬ শিশুর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিন বছর বয়সি ছোট্ট সিরিয়ান শরণার্থী আয়লানের নিষ্প্রাণ দেহটাকে তুরস্কের এক সৈকতে পড়ে থাকতে দেখে মাস তিনেক আগে শিউরে উঠেছিল বিশ্ব৷ সভ্য দুনিয়ার গালে চড় মেরেছিল সেই ছবি৷ মঙ্গলবার সেই দৃশ্যটাই আবার ফিরে এল তুরস্কের সৈকতে৷ গ্রিস যাওয়ার পথে তুরস্কের কাছে সমুদ্রে ডিঙি নৌকা উল্টে ডুবে গিয়ে মৃত্যু হল অন্তত পক্ষে ৬ জন নাবালক-নাবালিকার৷ আফগানিস্তানের শরণার্থীদের একটি দল ওই ডিঙি নৌকাতে ছিল বলে জানা যায়৷ টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এখবর প্রকাশ হয়েছে।
তুরস্কের উপকূলরক্ষীরা ৬টি দেহই উদ্ধার করেছে৷ মৃতদের মধ্যে একজন খুবই ছোট শিশু৷ ওই দুর্ঘটনার পর উপকূলরক্ষীরা আট জন যাযাবরকে জীবন্ত উদ্ধার করেছে তাদের প্রত্যেকের গায়ে লাইফ জ্যাকেট ছিল৷ মনে করা হচ্ছে, খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও তুরস্কের ইজমির প্রদেশের সেসমে এলাকা থেকে রাবারের ডিঙিতে চড়ে গ্রিসের খিয়োশ দ্বীপে যেতে চাইছিলেন ওই আফগান শরণার্থীরা৷ কিন্তু সেসমে উপকূলের কাছেই প্রচণ্ড হাওয়া ও ক্ষিপ্ত সমুদ্রের পাহাড় প্রমাণ ঢেউয়ের মধ্যে সঙ্কটের মধ্যে পড়ে যায় সেই ডিঙি৷ অনুমান, যে কাঠের টুকরোগুলির সাহায্যে রাবারের ডিঙিটিকে শক্তপোক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, ঢেউয়ের ধাক্কায় সেগুলি খুলে যায়৷ তারপরেই ডুবে যায় ডিঙিটি৷ উদ্ধারও হওয়া শরণার্থীদের মধ্যে ১২ বছরের একটি নাবালক রয়েছে৷ তবে হিসেব অনুযায়ি দু'জন এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে৷ অপর একটি ঘটনায়, পাঁচ বছরের শরণার্থী শিশুকন্যা সাজিদা আলির মৃতদেহও সোমবার সে সময় সৈকতে ভেসে আসে৷
গত সেপ্টেম্বরে এ ভাবেই সমুদ্র পেরতে গিয়ে ডুবে গিয়েছিল ছোট্ট আয়লান কুর্দি৷ তুরস্ক সৈকতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা মৃত শিশুটিকে দেখে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছিলেন ইউরোপের রাষ্ট্রপ্রধানরা৷ বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছিলেন শরণার্থী সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য৷ প্রসঙ্গত, গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়া তথা পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারে হাজারে শরণার্থী তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে দিয়ে ইউরোপে যেতে চাইছেন৷ তুরস্কে বর্তমানে দু'লক্ষেরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থী রয়েছেন৷ ইউরোপে শরণার্থী ঢোকার প্রবণতা রুখতে গত ২৯ নভেম্বর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে তুরস্ক৷ তারপর থেকেই তুরস্কের মাটি থেকে শরণার্থীরা যাতে গ্রিসে পৌঁছতে না পারেন, সে জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে তুরস্ক প্রশাসন৷ সেই চেষ্টার অভিযোগে গত সপ্তাহেই ৩ হাজার শরণার্থীকে আটক করেছে তারা৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন 'অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল' এই আটককে 'উদ্বেগজনক' আখ্যা দিয়েছে৷
৯ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�