বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:১৯:১০

হোয়াইট হাউসে 'নিঃসঙ্গ' হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

হোয়াইট হাউসে 'নিঃসঙ্গ' হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হোয়াইট হাউসে 'নিঃসঙ্গ' হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইটে প্রেসিডেন্ট নিজে এমন দাবি করলেও ভেতর-বাইরের বৈরীদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করার কাজটি একইভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যদিও চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার প্রশাসন। শেয়ারবাজারের সূচক দ্রুত পড়ছে। একই সঙ্গে বাজেট ঘাটতিতে বন্ধ হয়ে গেছে সরকারি কার্যক্রমের একাংশ (শাটডাউন)।

এরই মধ্যে বিরোধী ডেমোক্রেটিক দলের দুই প্রভাবশালী নেতা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ভাবী স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং সিনেটের সংখ্যালঘু দলের নেতা চাক শুমার এক যৌথ বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, 'বড়দিনের ঠিক আগ দিয়ে প্রেসিডেন্ট পুরো দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।' এমন একটি সময় এ অভিযোগ করা হলো যখন সরকারের তহবিল সংকট সমাধানে কংগ্রেসের অধিবেশন বসারও কোনো সুযোগ নেই। কারণ কংগ্রেসও এখন বড়দিনের ছুটিতে।

এর আগে ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য কংগ্রেসের কাছে ৫০০ কোটি ডলার তহবিল চেয়েছিলেন, যা ডেমোক্র্যাট ও কয়েকজন রিপাবলিকানের বিরোধিতায় নাকচ হয়ে গেছে। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলোর অন্যতম ছিল মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বিষয়টি। এর প্রতিশোধ নিতেই ট্রাম্প গত সপ্তাহে বাজেটের তহবিল জোগানোর একটি বিলে সই করতে অস্বীকৃতি জানান। যে কারণে সরকার এ বছর তৃতীয়বারের মতো আংশিক শাটডাউনের কবলে পড়ল।

সেনাবাহিনীসহ সরকারের তিন-চতুর্থাংশ সেবা ব্যবস্থার অর্থায়ন আগামী ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিশ্চিত করা রয়েছে। সংকট তৈরি হয়েছে বাকি অংশের অর্থায়ন নিয়ে। সাধারণত এই তহবিল প্রয়োজন অনুসারে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবার সেই বরাদ্দই আটকে দিলেন ট্রাম্প। ফলে সরকারের প্রায় চার লাখ কর্মচারীকে মজুরি ছাড়াই কাজ করতে হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় গত সোমবার করা এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, 'শাটডাউনের মধ্যে নতুন কিছু নেই। আমাদের নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নিতে হবে।' ট্রাম্প ওই দিন নানা বিষয় নিয়ে ১০টিরও বেশি টুইট করেন। এর বেশির ভাগই ছিল তার দেয়াল প্রকল্পের বিরোধীদের সমালোচনা। এ ছাড়া ফেডারেল রিজার্ভের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ট্রাম্প মনে করেন, মার্কিন অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা চলছে তার জন্য ফেডারেল রিজার্ভই দায়ী।

সিএনবিসি টেলিভিশন জানায়, গত কয়েক দিনে শেয়ারবাজারের সূচক ৬৫০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গেছে। বড়দিনের আগে এটাই সূচকের সর্বোচ্চ পতন।

হোয়াইট হাউসের বাইরেও সরকারের শাটডাউন পরিস্থিতি প্রভাব ফেলেছে। ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের ক্রিসমাস ট্রির আলোকসজ্জা গত সোমবার অর্থাভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য সংস্থার দাতব্য ফাউন্ডেশনের সহায়তা নিয়ে আবারও আলো জ্বালা হয়। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বাজেট নিয়ে এই টানাপড়েন আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। যদিও আগামীকাল বৃহস্পতিবার মধ্যস্থতার আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে গত সোমবার ট্রাম্প এক টুইটে বলেন, 'আমি হোয়াইট হাউসে বড় একা (কত দুর্বল আমি)! অপেক্ষা করছি ডেমোক্র্যাটরা ফিরে আসবে এবং অতিপ্রয়োজনীয় সীমান্ত নিরাপত্তার ব্যাপারে একটি চুক্তিতে সই করবে।'

এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দিলে ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। তিনি আইনগতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার রাখেন কি না সে বিষয়টি নিয়েও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বিষয়টিও একধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে