শিনজোর ভারত সফরে প্রতিবাদী চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বেজায় চটেছে চীন। কমিউনিস্ট চীনের সরকার পরিচালিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে রীতিমতো চড়া সমালোচনার সুর শিনজো আবের ভারত সফর নিয়ে। চীনের মোকাবিলা করতে পারছে না বলেই ভারতকে পাশে পেতে চাইছে জাপান, লেখা হয়েছে চীনা সরকারি সংবাদপত্রে। তবে নয়াদিল্লি টোকিও’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে এমন কিছু করবে না, যা বেজিং-এর বিরক্তির কারণ হয়। আশা প্রকাশ করা হয়েছে চীনা খবরের কাগজটিতে।
চীন-জাপান সম্পর্ক যে মোটেই মধুর নয়, সে কথা আন্তর্জাতিক মহলে অবহিত। দক্ষিণ চীন সাগরে জলসীমার দখল নিয়ে দু’দেশের বিবাদ এই তিক্ততার অন্যতম কারণ। প্রযুক্তি এবং অর্থনীতিতে জাপান প্রবল উন্নতি করলেও, সামরিক শক্তিতে তারা চীনের চেয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে। চীনের মোকাবিলা করতে এবং নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তিশালী মিত্র দেশ জাপানের জন্য খুবই জরুরি। সে ক্ষেত্রে ভারতই যে সেরা পছন্দ, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের কোনও সন্দেহ নেই। ভারত-জাপান সম্পর্ক দীর্ঘ দিন ধরেই ইতিবাচক। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সেই বন্ধুত্বকেই আরও মজবুত করতে চাইছেন। ভারত সফরে এসে তিনি বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয়ে ভারতকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। ভারতে বিনিয়োগের বিষয়েও সহায়তা করতে প্রস্তুত জাপান।
ভারতের কাছ থেকে জাপান যে কূটনৈতিক সমর্থন আশা করছে, নয়াদিল্লিও তা দিতে প্রস্তুত। দু’দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা অনেকটাই বাড়তে চলেছে। ভারত ও আমেরিকার নৌবাহিনী প্রতি বছর যে যৌথ সামরিক মহড়া আয়োজন করে, তাতে এবার জাপানকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরব সাগরে এই মহড়া হয়। এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে চীনা সংবাদপত্রটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের এই অ্যান্টি-সাবমেরিন মহড়া চীনের কথা মাথায় রেখেই আয়োজিত। সংলগ্ন এলাকায় চীনের উপস্থিতিতে ভারত বিরক্ত। মোকাবিলার বন্দোবস্ত তৈরি রাখতেই ভারত জাপানকে ওই মহড়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।’’
চীনা সংবাদপত্রে জাপানের প্রতি কটাক্ষই অবশ্য বেশি। ভারত-জাপান সম্পর্ক নিয়ে যে প্রতিবেদন সেখানে প্রকাশিত হয়েছে, তার সার কথা হল, এই দু’দেশের মধ্যে মিত্রতার প্রধান কারণ হল চীনের মোকাবিলা করার তাগিদ। শিনজো আবে বেজিংকে টক্কর দেওয়ার জন্য যে কোনও পথ ধরতে রাজি। তাই তিনি মোদীকে এখন নিজের দিকে টানতে তৎপর। নয়াদিল্লির ক্ষেত্রে কিন্তু চীনের প্রতিক্রিয়া একটু অন্য রকম। প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি থাকলেও সুর কিছুটা নরম। ভারত সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘‘বেজিং এবং টোকিও’র সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য ঠিক রাখার বিষয়ে নয়াদিল্লি যথেষ্ট সতর্ক। চীন ও জাপানের মধ্যে যে কোনও একটি পক্ষকে বেছে নেওয়ার কোনও ইচ্ছা ভারত সরকারের নেই, কারণ তারা জানে বেজিং-এর বিরোধিতা করে তাদের খুব ভাল কিছু হবে না।’’
১৩, ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমইউ
�