আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অসমের গুয়াহাটির রঙমহল গ্রাম। সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে সহাবস্থান ও সহনশীলতার এক চূড়ান্ত নিদর্শন তৈরি হল যেখানে। এখানেই বট গাছের নীচে শতাব্দী প্রাচীন এক শিব মন্দির। সেখানে আর পাঁচটা শিব মন্দিরের মতোই আছে শিব লিঙ্গ এবং তার আশেপাশে রাখা কয়েকটা ত্রিশূল। তবে তার থেকেও তাৎপর্যের হল সেখানে উপাসনা করেন হিন্দু এবং মুসলিম, দুই সম্প্রদায়ের মানুষই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই ৫০০ বছরের পুরনো এই শিব মন্দিরের দেখাশোনা করছে একটি মুসলিম পরিবার। তবে কত দিন ধরে এই ধারা চলছে, তা বলতে পারলেন না বৃদ্ধ মতিবর রহমান। বংশ পরম্পরায় ওই শিব লিঙ্গ এবং মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে যে পরিবার, সেই পরিবারেরই সদস্য তিনি। বর্তমানে তিনিই সামলাচ্ছেন ওই মন্দিরের দায়িত্ব। পাকিস্তানের ওয়াহিদ মুরাদকে চেনেন না মতিবর। নামও শোনেননি কখনও। শুনলে জানতেন, প্রায় ১০০ বছর ধরে সেই দেশেও একটি চার্চের দেখভাল বংশ পরম্পরায় করে আসছেন করে আসছেন ওয়াহিদের পরিবার।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে মতিবর জানিয়েছেন যে, সারা বছরই এই মন্দিরে মহাদেবের নিত্য পুজো হয়ে থাকে। সেই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এই চিরাচরিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিটাই উত্তর পূর্বের রাজ্য অসমের রঙমহল গ্রামের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
সংবাদ সংস্থাকে মতিবর আরও জানিয়েছেন, তাঁর মাতামহের দিক থেকেই এই দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন। কিন্তু হিন্দু ও মুসলিম এই দুই সম্প্রদায়ের উপাসনার পদ্ধতি তো আলাদা? এই প্রেক্ষিতে মতিবর রহমান বলেছেন, বিশ্বাস ও ভক্তিটাই আসল। মন থেকেই নিয়ম মেনে মহাদেবের উপাসনার সমস্ত আচার পালন করা হয় এখানে। হিন্দুদের পুজোর সময়ে দোয়া করে মুসলিমরা। এই উপায়েই সম্প্রীতি রেখে চলেছে অসমের রঙমহল।-আনন্দবাজার