শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯, ১১:৫৩:৪৫

তরুণ এই খাদেমের সাহসিকতায় বেঁচে যায় বহু মুসল্লির প্রাণ

তরুণ এই খাদেমের সাহসিকতায় বেঁচে যায় বহু মুসল্লির প্রাণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ঘটে গেল ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলা। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

সন্ত্রাসী হামলায় ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নূর মসজিদে ৪১ জন মারা যান। অপরদিকে লিনউড মসজিদে নিহত হন ৭ জন। তবে এই মসজিদের তরুণ এক খাদেমের সহসিকতায় বেঁচে গেছে বহু মানুষের প্রাণ। অন্যথায় আরো মানুষের হত্যাকাণ্ড দেখতে হতো বিশ্ববাসীকে।

নিউজিল্যান্ডের গণমাধ্যম হেরাল্ডকে সেই গল্প শুনিয়েছেন ওই মসজিদ থেকে বেঁচে ফেরা সৈয়দ মাজহারউদ্দিন। তিনি বলেন, তখন মসজিদে ছিলেন ৬০ থেকে ৭০ জনের মত। এ সময় হঠাৎ গুলি শুরু হয়। চারপাশে চিৎকার। ভয়ে লোকজন ছুটোছুটি শুরু করে। আমি তখন লুকিয়ে পড়ার জায়গা খুঁজছিলাম। এ সময় দেখলাম এক লোক মসজিদের গেট দিয়ে ঢুকল।

সৈয়দ মাজহারউদ্দিন আরো বলেন, দরজার কাছে কয়েকজন বয়স্ক লোক ছিলেন। ওই হামলাকারী তখন নির্বিচারে গুলি করতে থাকেন। এসময় সুযোগ বুঝে এগিয়ে আসেন মসজিদের খাদেম। সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। আর হামলাকারীর হাত থেকে বন্দুকটা কেড়ে নেন। কিন্তু বন্দুকের ট্রিগারটা খুঁজে পাচ্ছিলেন না হিরো হওয়া এই তরুণ। হামলাকারী তখন দৌঁড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। আর বাইরে অপেক্ষায় থাকা একটি গাড়িতে উঠে পালিয়ে যান।

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদ এবং কাছের লিনউড মসজিদে হামলা চালায় দুই ব্যক্তি। তাদের কাছে স্বয়ংক্রিয় শটগান ও রাইফেল ছিল। এর মধ্যে আল নূর মসজিদের হামলার ভিডিও প্রকাশ পায়।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়ির পেছনে রাখা স্বয়ংক্রিয় শটগান ও রাইফেল নিচ্ছেন হামলাকারী। সেটা নিয়ে হেঁটে হেঁটে প্রধান ফটক দিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকেন। এসময় মসজিদের ভেতরে প্রবেশ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন একজন। প্রথমে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গেটের সামনেই পড়ে যায় লাশ।

এরপর ভেতর ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকেন ওই ব্যক্তি। গুলিতে মানুষের লাশ পড়তে থাকে। বাঁচার জন্য আত্মচিৎকার করতে থাকে মানুষ। মারা যাওয়ার আগে গোঙানির আওয়াজ শুনা যায়। গুলি শেষ হয়ে গেলে আবারো গুলি লোড করেন হামলাকারী।

শুধু তাই নয়, ওই হামলাকারী ঘুরে ঘুরে লাশের উপরও গুলি চালাতে থাকেন। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠে সেখানেও নির্বিচারে গুলি চালান। নির্বিচারে গুলিতে আল নূর মসজিদে ৪১ জন এবং লিনউডে ৭ জন নিহত হন। হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।

গুলি করার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে ছিলেন হামলাকারী। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচারিত হয়। হামলাকারী ক্যামেরাটা তার মাথার সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন। তার অস্ত্রগুলোর ওপরে সাদা রঙে কিছু লেখাও ছিল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে