শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৯, ০২:০৩:৩৭

নিউজিল্যান্ডে গত এক দশকে গুলি করে খুনের সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছয়নি অথচ মাত্র ১৭ মিনিটে ৪৯ জনকে হত্যা!

নিউজিল্যান্ডে গত এক দশকে গুলি করে খুনের সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছয়নি অথচ মাত্র ১৭ মিনিটে ৪৯ জনকে হত্যা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় ভয়াবহ বন্দুকধারী ওই হামলায় অন্তত ৪৮ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুটি মসজিদে হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বলে জানানো হয়।

আল নূর মসজিদসহ দুটি মসজিদে হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহতদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশিও রয়েছেন। আরও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৮ বাংলাদেশি। আরও দুজন বাংলাদেশির এখনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নূর মসজিদে ৪১ জন মারা যান। আর লিনউড মসজিদে নিহত হন ৭ জন। তবে লিনউড মসজিদের আরো মানুষের হত্যাকাণ্ড দেখতে হতো বিশ্ববাসীকে। তবে সেই মসজিদে তরুণ এক খাদেমের সহসিকতায় বেঁচে গেছে বহু মানুষের প্রাণ।

নিউজিল্যান্ড এমন একটি দেশ যে দেশটিতে বছরে গড়ে খুন হয় ৩৫ জন। অথচ গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ৪৯ জনকে হত্যা করে এক বন্দুকধারী অস্ট্রেলিয়ায় জঙ্গী। শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে মাত্র ১৭ মিনিটের হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন হত্যা করে সে।

মাত্র ৫০ লাখ জনসংখ্যার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরী এই দেশে অপরাধের রেকর্ড অত্যন্ত কম। এই দেশে সারা বছরে খুন, চুরি-ডাকাতির সংখ্যা হাতে গোনা, বিরল ঘটনাও বলা যেতে পারে। সেই কারণেই শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় নিউজিল্যান্ড দুই নম্বরে। সবার শীর্ষে আইসল্যান্ড।

২০১৮ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত শান্তিপ্রিয় দেশের তালিকায় প্রথম নিউজিল্যান্ড। তার সঙ্গে অপরাধের পরিসংখ্যানও প্রকাশ করে ওই পত্রিকা। তাতেই উঠে আসে, ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডে মাত্র ৩৫টি খুনের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। আর গুলি করে খুন আরও বিরল। গত এক দশকে গুলি করে খুনের সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছয়নি। ২০০৯ সালে গুলি করে এক সঙ্গে নয়জন খুনের ঘটনা ঘটে। তবে সেটাও ছিল ব্যক্তিগত বিবাদের জের। এই ঘটনা বাদ দিলে এমন গণহত্যা আর দেখেনি নিউজিল্যান্ড।

এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মানুষের হাতে বন্দুকের লাইসেন্স রয়েছে। ২০০৯ সালে ওই ঘটনার পর বন্দুকের লাইসেন্স নীতিতে কিছু পরিবর্তন হওয়ার পরও এই সংখ্যা। এত মানুষের হাতে বন্দুক থাকা সত্ত্বেও খুনের সংখ্যা হাতে গোনা। এ থেকেই পরিষ্কার, সেখানকার বাসিন্দাদের শান্তিপ্রিয় মানসিকতা।

নিউজিল্যান্ডে মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ মুসলিম। তার মধ্যেও আবার চার ভাগের তিন ভাগই অন্য দেশ থেকে যাওয়া। তারা জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক নন। তবু সেখানেই এমন বন্দুকবাজের হামলা। যা গোট বিশ্বকে হতবাক করেছে।

বিষয়টি নিয়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন বলেন, ‘এই হামলায় নিহতরা শরণার্থী হতে পারেন, হতে পারেন তারা উদ্বাস্তু। কিন্তু তারা নিউজিল্যান্ডকে তাদের নিজের দেশ, নিজের মাতৃভূমি বলেই মনে করতেন। এই হামলায় সেই মর্যাদা, সেই জাত্যাভিমানে বিন্দুমাত্রও চিড় ধরবে না।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে