মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০১৯, ০৪:২৮:১৬

মুসলিমবিরোধী রাখাইন শীর্ষ নেতার ২০ বছরের জেল

মুসলিমবিরোধী রাখাইন শীর্ষ নেতার ২০ বছরের জেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা মুসলিমবিরোধী কট্টরপন্থা অবলম্বনকারী জাতিগত রাখাইন নেতা আয়ি মাউংকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ২০ বছরের জেল দিয়েছে মিয়ানমারের একটি আদালত। তিনি আরাকান ন্যাশনাল পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান। 

তার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার এই রায় দেয়ার পর যখন পুলিশ বেষ্টিত একটি ভ্যানে তোলা হচ্ছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে ঠাসা ছিল তার শত শত সমর্থকে। তাদেরকে শান্ত রাখতে পুলিশকে গলদঘর্ম হতে হয়। 

তবে আয়ি মাউংয়ের বিরুদ্ধে দেয়া এই রায়ে জাতিগত রাখাইন ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান উত্তেজনাকর লড়াই আরো তীব্র হবে। এদিন আরো একজন রাখাইন বৌদ্ধকে একই শাস্তি দেয়া হয়েছে। তিনি একজন লেখক। দু’জনের বিরুদ্ধেই একই অভিযোগ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। 

এ বছর আরাকান ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে সেনাবাহিনীর নতুন করে দাঙ্গা হয়। তার আগে জানুয়ারিতে আয়ি মাউং জ্বালাময়ী বক্তব্যে মানহানিকর কথাবার্তা বলেছেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই সময় রাষ্ট্র সমর্থিত মিডিয়ায় বলা হয়েছিল যে, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন।

জাতিগত রাখাইনদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার দাসের মতো আচরণ করছে বলে তিনি র‌্যালিতে বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই সময়কে জাতিগত রাখাইনদের সশস্ত্র লড়াইয়ের উপযুক্ত সময় বলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এর পরের রাতেই রাখাইন বিক্ষোভকারীরা একটি সরকারি ভবন দখলে নেয়। পুলিশ সেখানে গুলি চালায়। এতে নিহত হন ৭ জন। 

ওই একই র‌্যালিতে বক্তব্য রেখেছিলেন আয়ি মাউং ও লেখক ওয়াই হিন অং। কয়েক দিন পরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী আয়ি নু সেইন বলেছেন, এ দু’জনের প্রত্যেককে ২০ বছর করে জেল দেয়া হয়েছে। তবে তারা আপিল করবেন কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দেশটিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। 

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যটি সহিংসতা ও ঘৃণাপ্রসূত বিদ্বেষের কারণে পুরো দেশ থেকে যেন বিচ্ছিন্ন। ২০১৭ সালে সেখানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে জীবন বাঁচাতে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। 

এই রাজ্যে বসবাসকারী রাখাইন বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীও নিজেদেরকে একপেশে করে রাখা হয়েছে বলে মনে করে। তাই তারা অধিক শায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে, এই জনগোষ্ঠীর কোনো কোনো মহল রোহিঙ্গা বিরোধী নিধনযজ্ঞে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে। 

মঙ্গলবার রাখাইন বৌদ্ধদের এই দু’জন শীর্ষ নেতাকে শাস্তি দেয়ায় তাদের সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। আদালতের সামনেই একজন নারী চিৎকার করে বলে ওঠেন, এটা সুষ্ঠু বিচার নয়। এটা হলো জাতিগত রাখাইনদের বিরুদ্ধে নিষ্পেষণ ও আঘাত। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে