শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৯, ১১:৫০:০২

মাঝ আকাশে হৃদরোগে আক্রান্ত বাংলাদেশি যাত্রীকে সুস্থ করলেন ভারতীয় চিকিৎসক

মাঝ আকাশে হৃদরোগে আক্রান্ত বাংলাদেশি যাত্রীকে সুস্থ করলেন ভারতীয় চিকিৎসক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:বিমানের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত এক বাংলাদেশি যাত্রীকে প্রাণে বাঁচালেন ভারতীয় চিকিৎসক। মধ্যবয়সী ওই বাংলাদেশি নারী যাত্রী শুক্রবার ভোরের দিকে ইন্ডিগো ফ্লাইটে চেপে ভারতের পুনে থেকে কলকাতা আসছিলেন। ভোরের দিকে ইন্ডিগোর ফ্লাইট নাম্বার ৬ই-৫২৩ বিমানে চাপেন ক্যানসার রোগে আক্রান্ত ওই বাংলাদেশি যাত্রী। মধ্য আকাশে ওড়ার পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে এবং বিমানের মধ্যেই তিনি জ্ঞান হারান। এরপরই তার পাশে দাড়ান ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক চিকিৎসক।

ওই যাত্রী অসুস্থ হওয়ার পরই বিমানেরই ক্রু ওই অসুস্থ যাত্রীকে সহায়তার জন্য যাত্রীদের মধ্যে কোন চিকিৎসক থাকলে তাকে সেবা দেয়ার আবেদন জানান। ঘোষণা শুনে এগিয়ে আসেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন ডা. টি. তিলক।

পুনের আমর্ড ফোর্স মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তিলক জানান, আমি একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে কলকাতায় আসছিলাম। হঠাৎ করে এক যাত্রীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে শুনেই আমি বিমানের এয়ারহোস্টেসকে সতর্ক করি। ওই যাত্রীকে সাহায্যের আমি তার কাছে যাই। তিনি ফুসফুসে ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন এবং পুরোপুরি ভাবে মূর্ছা গিয়েছিলেন। তার হার্টবিটও পাওয়া যাচ্ছিল না।
এরপর বিমানের ক্রু-এর সাহায্য নিয়ে ওই যাত্রীর ‘কার্ডিও পালমোনারি রেসাসিটেশন’ (সিপিআর)-শুরু করেন ডা. তিলক এবং মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই ওই যাত্রী সুস্থ বোধ করেন। এরপর ওই বিমানেই সফররত ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অন্য এক চিকিৎসক ওই নারীর চিকিৎসা করেন এবং তাকে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন ও ওষুধ দেন।

বিমানবাহিনীর চিকিৎসক ডা. তিলক জানিয়েছেন, আমাদের অন্য দুই সহকর্মীও ওই যাত্রীকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেন-এর মধ্যে একজন স্নায়ুবিশেষজ্ঞ, অন্যজন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ছিলেন। আমাদের কাছে নেবুলাইজার না থাকায় ওই অসুস্থ যাত্রীকে ইনহেলার দিই। এরপর তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং বিমানটি যখন অবতরণ করে তখন ওই যাত্রীর রক্তচাপ ও নাড়ীর স্পন্দন স্বাভাবিক ছিল।

বাংলাদেশি যাত্রী সুস্থ হয়ে ওঠার পর প্রায় ৪৫ মিনিট পর সকাল ৬টা নাগাদ ইন্ডিগোর বিমানটি কলকাতা বিমান বন্দরের মাটি স্পর্শ করে। সেখান থেকে ওই যাত্রীকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার আগে ওই যাত্রীকে নিজের মোবাইল ফোন নম্বরটিও দিয়ে আসেন ডা. তিলক। 

ডা. তিলক জানান ওই যাত্রী তার মেয়ের সাথে সফর করছিলেন এবং ঢাকাতেও তার ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল। আমরা খুবই খুশি যে তার জীবন বাঁচাতে পেরেছি। এই কাজে ইন্ডিগোর কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন ওনারাও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং জরুরি ভিত্তিতে তারা ওষুধ সরবরাহ করেছিলেন। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে