রাস্তায় নেমেই পিটুনী খেল বিজিপি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আইন অমান্য কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি নেতাকর্মীদের সমানে সমানে টক্করের সাক্ষী রইল বৃহস্পতিবারের কৃষ্ণনগর। বারুইপুর, সল্টলেক, শ্রীরামপুর, আসানসোলের সঙ্গে যোগ হল নদিয়ার জেলা সদরের নামও। গোটা কর্মসূচিতে কোনঠাসা বিজেপি কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেল বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
বেশ কয়েক মাস ‘শীতঘুমের’ পরে বিধানসভা ভোটের আগে আড় ভেঙে আন্দোলনমুখী হয়েছিল নদিয়া জেলা বিজেপি। গুরুত্ব বুঝে সেই কর্মসূচিতে হাজির হয়েছিলেন রাজ্য এবং কেন্দ্রের প্রথম সারির নেতারাও। কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থকের সামনে তাদের কেউ পুলিশের লাঠি খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে, কেউবা গ্রেফতার হয়ে এমনকী অনশনে বসে মরিয়া প্রমাণের চেষ্টা চালালেন ভোট ময়দানে উপস্থিত বিজেপিও।
বৃহস্পতিবার নদিয়ার জেলা সদর কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মাঠ লাগোয়া রাস্তায় মঞ্চ বেঁধে সভার পরিকল্পনা নেয় বিজেপি। তাতে উপস্থিত হন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় নেতা সুরেশ পূজারি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল-সহ এক ঝাঁক নেতা।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সভা শেষে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থককে নিয়ে জেলা প্রশাসন ভবনের দিকে রওনা দেন তারা। বিজেপির কর্মসূচির কথা জেনে প্রস্তুত ছিল পুলিশও। জেলা প্রশাসন ভবনের আগে দু’টো ব্যারিকেডও করা হয়। প্রথম ব্যরিকেড ভেঙে ফেলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। দ্বিতীয় ব্যারিকেডও এক সময় ভেঙে যায়। এরপরেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে।
ইট ও লাঠির আঘাতে পাঁচ সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ বিজেপির একাধিক নেতা কর্মী জখম হন। তাদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। লাঠির ঘায়ে মাথা ফেটে যায় সুরেশ পূজারীর। প্রথমে কিছুটা পিছু হঠেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময় পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। পাল্টা ইট ছোড়ে সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা। এরপরেই ওই মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা মারতে মারতে নিয়ে যায় বলে দাবি বিজেপি-র।
দিলীপবাবু বলেন, ‘‘গ্রেফতার করলে একই ধারায় কেস দিয়ে আমাদেরকেও গ্রেফতার করতে হবে। না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
কৈলাসের অভিযোগ, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আইন অমান্য করছিলাম। পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে মারধর শুরু করে। রেহাই পাননি মহিলারাও। পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করতে পারত। তা না করে নির্বিচারে যে ভাবে লাঠি চালাল তাতে এ রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই সেটাই ফের প্রমাণিত হল।’’
অন্য দিকে পুলিশের দাবি, আইন অমান্য আন্দোলনের নাম করে প্রচারে আসতেই বিজেপি এমন কাণ্ড করেছে। অনেক দলই আইন অমান্য আন্দোলন করে। তবে বিজেপির মতো এমন বিশৃঙ্খলা এর আগে তাঁরা দেখেননি বলেই দাবি করেছেন জেলা পুলিশের একাধিক কর্তা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অজয় প্রসাদ বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে প্রথমে ওই রাজনৈতিক দল হামলা করে। আমাদের বেশ কয়েক জন কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ আত্মরক্ষা করেছে মাত্র।’’
১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন
�