শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:২১:২০

স্ত্রীর জন্মদিন পালন করতে পার্কে এসেছিলেন সপরিবারে, বজ্রপাতে মারা গেলেন স্বামী

স্ত্রীর জন্মদিন পালন করতে পার্কে এসেছিলেন সপরিবারে, বজ্রপাতে মারা গেলেন স্বামী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্ত্রী সঙ্গীতার জন্মদিন। তাই তাকে এবং বছর আড়াইয়ের মেয়ে সানবীকে নিয়ে শুক্রবার কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন দমদমের বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সুবীর পাল। 

বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আরও অনেকের সঙ্গে তারাও ভিক্টোরিয়ার দক্ষিণ গেটের বাইরে একটি টিনের ছাউনির নীচে আশ্রয় নেন। সেটাই কাল হল। ছাউনির কাছেই বাজ পড়ে জমা পানিতে। সেই পানি পায়ে লাগতেই ছিটকে পড়েন বছর পঁয়ত্রিশের সুবীর। 

একই অবস্থা হয় তার স্ত্রী, মেয়েসহ ছাউনির নীচে আশ্রয় নেওয়া মোট ১৬ জনের। তাদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সুবীরকে মৃ'ত ঘোষণা করেন। বাকিরা সেখানেই চিকিৎসাধীন।

এ দিনই বজ্রপাতের কারণে মৃ'ত্যু হয় রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা অপর্ণা মণ্ডলের। বছর বাহান্নর অপর্ণাদেবী বাড়ির উঠোনে বসেছিলেন। এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃ'ত ঘোষণা করা হয়। বজ্রপাতের আওয়াজ শুনে তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন বলে অনুমান পুলিশের।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পার্কের ঘটনাটি ঘটে বিকাল তিনটা নাগাদ। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা  সিআইএসএফ কর্মীরা দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। খবর যায় হেস্টিংস থানায়। চিকিৎসকদের অনুমান, পানিতে বাজ পড়ার ফলেই একসঙ্গে এত জন জখম হন। মৃ'ত্যু হয় সুবীরের। 

নিজের জন্মদিনে বেড়াতে গিয়ে স্বামীর মৃ'ত্যু মেনে নিতে পারছেন না সুবীরের স্ত্রী সঙ্গীতা। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মৃ'ত স্বামীর দেহ আঁকড়ে অনর্গল বিলাপ করে চলেছেন তিনি। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কেঁদে চলেছে সানবী। তাকে সামলাতে কালঘাম ছুটছে জরুরি বিভাগের নার্সদের। দমদমের বিবেকানন্দ পল্লিতে সুবীরের বাড়িতেও শোকের ছায়া। 

এই ঘটনায় জখমদের মধ্যে দুই বাংলাদেশি পরিবারসহ মোট ৯ জন ছিলেন। এদের মধ্যে দীপক বিশ্বাস যশোরের বাসিন্দা। স্ত্রী কাকলিকে ডাক্তার দেখাতে কলকাতায় এসেছেন। সঙ্গে রয়েছেন দুই মেয়ে প্রীতি ও অবন্তী। কাকলি এবং দীপকের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তার বড় মেয়ে প্রীতি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে রয়েছে। পরে দীপকের দুই মেয়েকে কার্ডিয়োলজি বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। 

একই অবস্থা বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের কাজী জহির উদ্দিন মিঠুর। তিনি বলেন, ‘আচমকা আলো ঝলকাতেই শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। তারপরই দেখি স্ত্রী ছিটকে পড়ে গেল। জোর আওয়াজে কানে তালা লেগে যায়।’ আহতদের তালিকায় রয়েছেন, হাওড়া-ডোমজুড়ের প্রিয়াঙ্কা সর্দার, ঝুমা নস্কর, বজবজের শেখ মনোয়ার এবং রেশমা বিবি। অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তারা আতঙ্কগ্রস্ত। সূত্র : আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে