আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল বেশ কয়েক দিন আগে। সেই মামলায় শনিবার (২৪ আগস্ট) গ্রেফতার করা হয়েছে দীপা মজুমদার নামের এক তরুণীকে। পুলিশ বলছে, পুলিশের পোশাক পরে ডাকাতিতে অংশ নেয় ওই তরুণী।
শনিবার রাতে কলকাতার স্থানীয় নরেন্দ্রপুরের খুড়িগাছি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ডাকাতির ঘটনায় তার এক প্রেমিকও যুক্ত। ওই প্রেমিককেও খুঁজছে পুলিশ।
ডাকাতি হওয়া বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী অরূপ দত্ত জানিয়েছেন, গেল সপ্তাহে ছয় জনের একটি ডাকাতদল তার বাড়িতে হানা দেয়। এদের মধ্যে তিনজনের পরনে ছিল পুলিশের উর্দি। বাকি তিন জন ছিল সাধারণ পোশাকে।
ডাকাতরা বাড়ির মালিকের মাথায় ব'ন্দু'ক ঠেকিয়ে ৭০ হাজার টাকা, সোনা ও রুপোর গয়না লুট করে। টের পেয়ে পাশের লোকজন চিৎকার শুরু করে। তখন ফাঁকা গু'লি ছুড়তে ছুড়তে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
তবে ডাকাতদলের সবাই পালাতে পারেনি। পিছু ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেজাউল শেখ, মামুন শেখ, সবুজ শেখ ও দীপু শর্মা নামে চার ডাকাতকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানতে পারে ওই ডাকাত দলের নেতৃত্বে দেয় দীপা। ফলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃতদের মধ্যে প্রথম তিনজন বাংলাদেশের যোগেশগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার মূল চক্রী দীপা মজুমদার। যে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়, সেই অরুপ দত্তের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল দীপার। অরুপের মা মায়া দত্তকে সে জ্যেঠিমা সম্বোধন করত। জ্যেঠিমাও ছিলেন দীপা অন্ত প্রাণ।
পুলিশ জানিয়েছে, মাস কয়েক আগে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে অনেক গয়না দেখে দীপা মায়াদেবীর কাছে কয়েকটি গয়না চায় বিয়ে বাড়িতে সেজে যাওয়ার জন্য। সরল মনে সেই গয়না দেন মায়া। বিয়ে বাড়িতেই প্রেমিকের এর সঙ্গে সেই গয়না নিয়ে দীপার কথাবার্তা হয়। দীপা জানায়, দত্ত বাড়িতে চুরি বা ডাকাতি করতে পারলে প্রচুর গয়না পাওয়া যাবে। তখন সেই প্রেমিক কু'খ্যা'ত বাংলাদেশি ডাকাত রেজাউলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
রেজাউল, দীপা ও লালন মিলে বেশ কয়েকবার মদ্যপান সহযোগে বৈঠক করে ডাকাতির ছক কষে। যদিও ডাকাতির আগেই ওই বাড়ির একটি পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে দীপা, লালন ও ডাকাত দলের এক সদস্য গিয়ে গোটা এলাকা রেইকি করে আসে। সেই সময়ই ঘরের জিনিসপত্র দেখে নেওয়ার পাশাপাশি ঠাকুরের গায়ের গয়নাও তাদের নজরে পড়ে।
এরপর ছক মতো নির্দিষ্ট দিনে ডাকাতি হয় নেতাজী পল্লিতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। পুলিশের পোশাক পরে প্রায় ঘণ্টাখানেক অপারেশন সারে ডাকাতদল। যদিও সেই রাতেই জনতার হাতে একজন ডাকাত ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে গ্রেফতার হয় দলের বাকি সদস্যরা। তাদের জেরা করেই খোঁজ পাওয়া যায় দীপার। শেষ পর্যন্ত সোমবার তাকে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
যদিও গ্রেফতারির পরে দীপা দাবি করেছে, ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না সে। তবে লালন তার পরিচিত বলে স্বীকার করে নিয়েছে ওই যুবতী। তার দাবি, ডাকাতির ঘটনায় তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।