 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কার্যকর পরীক্ষানির্ভর গবেষণা পদ্ধতি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় বাঙালি অভিজিৎ ব্যানার্জী, ফ্রান্সের এসটার ডুফলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ক্রেমার।
এই তিনজন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের কারণে এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। এদের মধ্যে অভিজিৎ এবং এসটার ডুফলো কর্ম ও ব্যক্তি জীবনে একে অপরের সঙ্গী। অর্থাৎ সহকর্মী হিসেবে তারা একসঙ্গে যেমন গবেষণা করছেন, স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তেমনি সংসারও করছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে এসটারের 'নোবেলজয়ী' পরিচয়ের বদলে প্রাধান্য পাচ্ছে 'অভিজিতের স্ত্রী' হওয়ার পরিচয়। নিজ যোগ্যতায় নোবেল জয় করার পরও একবিংশ শতাব্দীতে এসে একজন নারীকে স্বামীর সঙ্গে একসাথে পদক পাওয়ায় শুধু স্বামীর পরিচয়ে পরিচিত করার প্রবণতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে।
উদাহরণ হিসেবে ভারতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংবাদমাধ্যমের সংবাদের শিরোনাম উল্লেখ করা যায়:
‘ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিজিৎ ব্যানার্জি, স্ত্রী এসটার ডুফলোর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার জয়’ – হিন্দুস্থান টাইমস
‘ভারতীয়-মার্কিন এমআইটি অধ্যাপক অভিজিৎ ব্যানার্জি ও তার স্ত্রী অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন’ – দ্য ইকোনমিক টাইমস
‘ভারতীয়-মার্কিন অভিজিৎ ব্যানার্জি, স্ত্রী এসটার ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার ২০১৯ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন’ – ফার্স্টপোস্ট
‘ভারতীয়-মার্কিন এমআইটি অধ্যাপক অভিজিৎ ব্যানার্জি ও তার স্ত্রী এসটার ডুফলো অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন’ – বিজনেস ইনসাইডার
অনেকেই বলছেন, এ ধরনের রিপোর্টিংয়ের ধরণ মেনে নেয়া যেত ম্যারি ও পিয়ের কুরির সময়ে, ১৯০৩ সালে, যখন তারা একসঙ্গে গবেষণা করে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে এসে এটা মেনে নেয়া যায় না।
সমালোচকদের মতে হ্যাঁ, এসটার সত্যিই তার সঙ্গে নোবেল পাওয়া অভিজিতের স্ত্রী। কিন্তু এই পরিচয়ের কারণে নিশ্চয়ই তিনি নোবেল পাননি, বা তার পুরস্কার পাওয়ার সঙ্গে এই পরিচয়ের কোনো সম্পর্কও নেই।
এসটার ডুফলো তার সহকর্মীর স্ত্রী, তারা দুজনই যেহেতু একসঙ্গে নোবেল পেয়েছেন সেহেতু সংবাদে তাদের স্বামী-স্ত্রী হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শিরোনামে বিষয়টি এভাবে উল্লেখ করার অর্থ কী, এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
এসটার ডুফলো উন্নয়ন অর্থনীতির অন্যতম পুরোধা হিসেবে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। শিশু স্বাস্থ্য ও শিক্ষার প্রসারসহ দারিদ্র্যের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণ নিয়ে গবেষণায় পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিপ্লব এনেছেন তিনি।
অভিজিৎ ব্যানার্জি এবং মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে তার মিলিত গবেষণা শুধু উন্নয়ন অর্থনীতি নয়, সার্বিকভাবে অর্থনীতির জগতে উল্লেখযোগ্য রূপান্তর ঘটিয়েছে। তাদের গবেষণার ফল প্রচলিত তাত্ত্বিক বিষয়গুলোকে বাস্তবের সঙ্গে যুক্ত করেছে।