সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০১:২৭:০৩

দিল্লির বিক্ষোভে বাসে আ'গুন দিচ্ছে পুলিশ! ভি'ডিও ভাইরাল

দিল্লির বিক্ষোভে বাসে আ'গুন দিচ্ছে পুলিশ! ভি'ডিও ভাইরাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘ'র্ষের সময় পরিস্থিতি যাতে আরও উ'ত্তাল হয়ে ওঠে তাই কিছু বাসে আ'গুন ধ'রিয়ে দিয়েছে পুলিশ। চাঞ্চ'ল্যকর এই অভিযোগের সঙ্গে সেই ঘটনার একটি ভি'ডিও ভা'ইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে।

ভি'ডিওতে দেখা যাচ্ছে, লাল রংয়ের একটি বাসে কেরোসিনের জার থেকে কিছু তরল ছিটিয়ে দিচ্ছেন এক পুলিশ সদস্য। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে রোববার সন্ধ্যায় যখন বি'ক্ষোভ করছিল, তখন পুলিশের সঙ্গে সংঘ'র্ষ বাঁধে তাদের।

রোববার সন্ধ্যায় বিক্ষোভে উ'ত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের রাজধানী শহর। দক্ষিণ দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি অঞ্চলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বি'ক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘ'র্ষ বাঁ'ধলে এলাকাটি যু'দ্ধক্ষে'ত্রের রূ'প নেয়। কিন্তু ভাই'রাল হওয়া ভি'ডিও দেখে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ছাত্র-পুলিশ সংঘ'র্ষ চলাকালীন বেশ কয়েকটি বাস ও গাড়িতে আ'গুন ধ'রিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। কিন্তু দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, পুলিশের কিছু কর্মী এই ভা'ঙচুর এবং অ'গ্নি'সংযোগের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তবে দিল্লি পুলিশ এ অ'ভিযোগ অস্বীকার করেছে।

হিন্দিতে এক টুইট বার্তায় উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া লেখেন, ‘এই ছবিটি দেখুন। দেখুন কে বা কারা বাসে এবং গাড়িতে আ'গুন দিচ্ছে। এই ছবিটি বিজেপির করুণ রাজনীতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ। বিজেপি নেতারা এর প্রতিক্রিয়ায় কী বলবেন’ দিল্লি পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যার দায়িত্বে আছেন বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ।

দিল্লির ক্ষমতায় এখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টির। তবে দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক এমএস রান্ধওয়া এনডিটিভিকে বলেন, ‘আপনাকে অবশ্যই পুরো ভি'ডিওটি দেখতে হবে। বাসের বাইরে আ'গুন লেগেছে। পুলিশ পাত্রে জল নিয়ে সেই আ'গুন নেভানোর চেষ্টা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমরা বি'ক্ষোভকারীদের ছত্রভ'ঙ্গ করছিলাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে পাথর ছোঁ'ড়া হচ্ছিল। সেখানে বি'ক্ষোভকারীদের ছত্রভ'ঙ্গ করতে কাঁদানে-গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। তখন সেখানে পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পাথর ছোঁ'ড়া হচ্ছিল।’

বি'ক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির পুলিশ কমিশনার চিন্ময় বিসওয়ালও উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার করা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে শিক্ষার্থীরা নাকি স্থানীয়রা কারা এই বি'ক্ষোভ মিছিল করেছিল।’

তিনি জানান, মিছিলে দেড় থেকে দুই হাজারের বেশি মানুষ ছিল। বি'ক্ষোভকারীরা যখন ওই মিছিল নিয়ে এগোতে থাকে তখন যানজট শুর হয়। ফলে ব্যারিকেড দিয়ে থামাতে হয় তাদের। তারপরই বি'ক্ষোভকারীরা রিং রোডের দিকে গিয়ে ডিটিসি বাস পু'ড়িয়ে দেয়।’

বিজেপি সরকারে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বি'ক্ষোভে দেশটির রাজধানী দিল্লিও উ'ত্তাল হয়ে উঠেছে। রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর চ'ড়াও হয় পুলিশ। ছত্রভঙ্গ করতে লা'ঠিচা'র্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া ছাড়াও ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মা'রধ'র ও আট'ক করা হয়।

জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের এমন নি'র্যাতনের প্রতিবাদে সন্ধ্যা থেকে ক্ষো'ভ জানাতে শুরু করে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার সন্ধ্যার সংঘ'র্ষের পর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিল্লির জামিয়ার মিলিয়ার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বি'ক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘ'র্ষ বাধে।

মধ্যরাতে হায়দারাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীও মধ্যরাতে দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নি'র্যা'তনের নিন্দা ও গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানায়।

গতকাল সন্ধ্যায় জামিয়ার মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বি'ক্ষোভ মিছিলে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়াসহ বি'ক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের পর এই পরিস্থিতির সূত্রপাত। তারপর শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু গাড়িতে ভা'ঙচুর চালায় ও আগু'ন জ্বা'লিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে প্রায় একশ শিক্ষার্থীকে আ'টক করে।

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দিল্লি, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ বি'ক্ষোভ চলছে। আসামের বি'ক্ষো'ভে এখন পর্যন্ত সাতজন নিহ'ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাসহ দেশটির ছয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজের রাজ্যে আইনটির প্রয়োগ হতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে