আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একুশ শতকের অন্যতম চৌক'স সম'রবিদ ইরানের ইসলামি বিপ্ল'বী গার্ড' বাহিনীর আল কুদস ফো'র্সের জেনারেল কাসেম সোলাইমানি বহুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের টার্গে'টে ছিলেন। যিনি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মার্কিন ড্রো'ন হাম'লায় নিহ'ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেকে হয়তো জেনেছেন তিনি আসলে কে? কিন্তু জানেন কী, তিনি কেন যুক্তরাষ্ট্রের টার্গে'ট কি'লিং পরিক'ল্পনায় ছিলেন?
বলা হয়ে থাকে, ইরানের বিশেষ গো'পন আভি'যানিক দল কুদস ফো'র্স প্রতিষ্ঠা হয়েছে ‘অপ্র'চলিত যু'দ্ধের’ জন্য। ইতোমধ্যে এর সামরিক কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। ইরানের বৈ'শ্বিক উত্থা'নের পেছনেও এই ফোর্সের অপ্র'তিরো'ধ্য অবদান রয়েছে। যা কি-না প্রতিষ্ঠা করে আবার সুচা'রু পরিচালনা করছিলেন কাসেম সোলাইমানি। আর তিনি এই বাহিনীর পুরো কাজের জন্য জবা'বদি'হি করতেন শুধু দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান যে সামরিক প্রভা'ব তৈরি করতে চাইছে, তার মূল কারিগর এই কুদস ফো'র্স। অর্থাৎ ইরাকে এক ধরনের প্রভা'ব তৈরি করা, সিরিয়াতে প্রভা'ব তৈরি করা, লেবাননে প্রভাব তৈরি করা, বিভিন্ন জায়গায়, এমনকি ইয়েমেনে হু'তি বিদ্রো'হীদের সঙ্গে ইরানের যে যোগাযোগ আছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, সেখানেও সোলাইমানির একটা বড় ধরনের ভূমিকা ছিল বলে পশ্চিমারা ধারণা করে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ইরানের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে, ইরান কোন দেশের সঙ্গে কী আচ'রণ করবে, কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সেখানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো দৃ'ষ্টিভ'ঙ্গি থাকলেও শেষ কথাটি কিন্তু জেনারেল সোলাইমানিই বলতেন। অর্থাৎ তিনি যে মতামত দিতেন, সেটিই গ্রহণ করা হতো এবং সে অনুযায়ীই ইরানের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করা হতো।
সোলাইমানিকে ইরানের জাতীয় বীর মনে করা হয়। তিনি ইরান কর্তৃপক্ষের অত্যন্ত আ'স্থাভা'জন ছিলেন। তার নেতৃত্বেই দেশের সামরিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হতো। এছাড়া তিনি গত মার্চেও ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক পদক ‘অ'র্ডার অব জুলফিকার’ এ ভূ'ষিতে হয়েছিলেন। পাশাপাশি ইরানের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কিছুক্ষণ পরপরই তার ছবি আসতো এবং তাকে নিয়ে নানা সংবাদ থাকতো।
এ কারণেই সোলাইমানি বহুদিন ধ'রে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের টা'র্গেট কি'লিং পরিক'ল্পনায় ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের মনে ছিল, ইরানের বিপ্ল'বী গা'র্ড এবং এই চৌক'স কুদস ফোর্স' যদি থামা'নো না যায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, সামরিকভাবে এবং অন্যভাবে, সেটিকে থামা'নো যাবে না।
এছাড়া কয়েকদনি আগে রাজধানী বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হা'মলা হয়েছিল। সেখানে উত্তে'জিত জনতা ইটপা'টকেল নিক্ষে'প করেছে। অ'গ্নিসং'যোগের চেষ্টা করেছে। সেটিকে অবরু'দ্ধও করে রেখেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, ইরানের ম'দদেই ইরাকের মার্কিন দূতাবাসে হা'মাল হয়েছে। কারণ ইরানের শিয়াপ'ন্থী মিলিশি'য়ারা এই হাম'লা চালিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভি'যোগ।
এরপরই সোলাইমানির ওপর ড্রো'ন হামলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সোলাইমানি সিরিয়া অথবা লেবানন থেকে ইরাকে এসেছিলেন। এবং তখনই তাকে হ'ত্যা করা হয়। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু দিন ধ'রেই তার ওপর গোপ'ন নজ'র রাখছিল। এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এ হা'মলা চালিয়েছে।মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই তাকে হ'ত্যা করা হয়েছে এবং এই হা'মলা চালানো হয়েছে।হাম'লায় বীর সোলাইমানি নিহ'ত হওয়ার পর বেশ উচ্ছ্ব'সিত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রপক্ষ। কিন্তু ইরান এর তী'ব্র প্রতিক্রি'য়া জানিয়েছে।
দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যারা এই কাজ করেছে, অর্থাৎ যারা সোলাইমানিকে হ'ত্যা করেছে, সেসব অপরা'ধীর জন্য কঠি'ন সা'জা অপেক্ষা করছে।ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাবেদ জারিফ বলেছেন, আমেরিকা আন্তর্জাতিক সন্ত্রা'সবাদের যে প্ররো'চনা দিচ্ছে বা করছে, এটি তারই অংশ।
এদিকে, অনেক আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তী'ব্র উত্তে'জনা চলছে। যেকোনো সময় যু'দ্ধ শুরু হয়ে যাবে- এমন একটা ভাব। যেন যু'দ্ধের দামা'মা বাজছে। ঠিক এই সময়ে সোলাইমানি হ'ত্যাকা'ণ্ড- পরিস্থি'তি আরও ঘোলা'টে করবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
কারণ ইরান এখন পাল্টা প্রতিশোধ নিতে চাইবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কেননা, সোলাইমানিকে হত্যা, আয়াতুল্লাহ নিজের ওপর একটি বড় আঘাত বলে মনে করছেন। তার সঙ্গে ছিল সোলাইমানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের এই উত্তেজনা কোন দিকে মোড় নেবে, এখন সেদিকেই সবার নজর।