শনিবার, ০৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:৪৪:২৮

ইরানের সামরিক বাহিনী কতটা শক্তিশালী? দেখে নিন একনজরে!

ইরানের সামরিক বাহিনী কতটা শক্তিশালী? দেখে নিন একনজরে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাকের রাজধানী বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রো'ন হা'ম'লায় ইরানের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহ'ত হবার পর কঠিন প্রতিশো'ধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। 

যারা জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পেছনে দায়ী তাদের জন্য "কঠিন প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে", বলেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। কিন্তু কতটা সক্ষমতা আছে ইরানের সামরিক বাহিনীর।

সেনাবাহিনী : যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মতে প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার সক্রিয় সদস্য আছে দেশটির সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্তরে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৫০ হাজার নিয়মিত আর্মি আর কমপক্ষে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার ইসলামিক রিভলিউশানারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি।

এছাড়া আরও বিশ হাজার আছে আইআরজিসির নৌ বাহিনীতে। এরা হরমুজ প্রণালিতে আর্মড পেট্রল বোট পরিচালনা করে। আইআরজিসি বাসিজ ইউনিটও নিয়ন্ত্রণ করে যারা মূলত স্বেচ্ছাসেবী ফোর্স। মূলত অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ মোকাবেলায় তারা কাজ করে।

এরা দ্রুত হাজার হাজার মানুষকে জমায়েত করতে পারে। আইআরজিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ৪০ বছর আগে যা পরে বড় মিলিটারি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। এটাকে ইরানর সবচেয়ে প্রভাবশালী ফোর্স বলে মনে করা হয়।

দেশের বাইরে অভিযান : কুদস ফোর্স যার নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল সোলেইমানি, সেটি বিদেশে অনেক গোপন অ'ভিযা'ন পরিচালনা করে এবং তারা সরাসরি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে জ'বাবদি'হি করে।

এই ইউনিটকেই সিরিয়াতে মোতায়েন করা হয়েছিলো যারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও স'শ'স্ত্র শিয়া মিলিশিয়াদের সাথে একসাথে যু'দ্ধ করেছে। ইরাকে তারা শিয়া নিয়ন্ত্রিত একটি প্যারা মিলিটারি ফোর্সকে সমর্থন করতো যারা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের পরাজয়ে সহায়তা করেছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে কুদস ফোর্স অর্থ, প্রশিক্ষণ, অ'স্ত্র ও উপকরণ দিয়েছে এমন সংগঠনকে যাদের যুক্তরাষ্ট্র স'ন্ত্রা'সী গ্রুপ হিসেবে মনে করে। এর মধ্যে লেবাননের হেজবোল্লাহ আন্দোলন এবং প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জি'হা'দও রয়েছে।

অর্থনৈতিক স'ম'স্যা ও অ'বরো'ধ ইরানের অ'স্ত্র আমদানিকে ক্ষ'তিগ্র'স্ত করেছে। দেশটির প্রতির'ক্ষা খাতে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যে পরিমাণ আমদানি হয়েছে তা সৌদির আরবের মোট সামরিক আমদানির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মাত্র। ইরানিরা সামরিক খাতে বেশী আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে এবং এর পরেই আছে চীনের অবস্থান।

ক্ষে'প'ণা'স্ত্র​ আছে : ইরানের ক্ষে'প'ণা'স্ত্র স'ক্ষ'মতা দেশটির সশ'স্ত্র বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতির'ক্ষা বিভাগের মতে দেশটির ক্ষে'পণা'স্ত্র শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় বিশেষ করে স্বল্প পাল্লা আর মাঝারি পাল্লার।

তারা আরও বলছে, ইরান স্পেস টেকনোলজি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে যাতে করে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষে'পণা'স্ত্র তৈরি করা যায়। তবে দূরপাল্লার ক্ষে'পণা'স্ত্র কর্মসূচি ইরান স্থ'গি'ত করেছিলো ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির পর, বলছে রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইন্সটিটিউট।

তবে তারা এও বলছে যে এটি আবার শুরু হয়ে যেতে পারে ওই চুক্তির অ'নি'শ্চয়তার কারণে। অনেক ক্ষেত্রেই সৌদি আরব ও উপসাগরীয় এলাকার অনেক টার্গে'ট ইরানের স্বল্প বা মাঝারি পাল্লার ক্ষে'পণা'স্ত্রের আওতাতেই আছে, বিশেষ করে ইসরায়েলে সম্ভাব্য ল'ক্ষ্যব'স্তুগুলো।

এছাড়া আরও প্রমাণ আছে যে তেহরানের আঞ্চলিক মিত্ররাও ইরানের সরবরাহ করা ক্ষে'পণা'স্ত্র ও গাইডেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে বিশেষ করে সৌদি আরব, ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের টা'র্গে'টগুলোর ক্ষেত্রে। 

গত বছর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্যাট্রিয়ট অ্যা'ন্টি মি'সা'ইল ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করে মধ্যপ্রাচ্যে যা ইরানের সাথে উত্তে'জনা আরও বাড়িয়ে দেয়। এর মানে হলো পা'ল্টা ব্যা'লি'স্টিক ক্ষে'প'ণা'স্ত্র, ক্রু'জ মি'সা'ইল ও অগ্রবর্তী এয়ারক্রাফট।

অপ্রচলিত অ'স্ত্র : কয়েক বছরের নিষে'ধা'জ্ঞা সত্ত্বেও ইরান তার ড্রোন স'ক্ষ'মতা বাড়িয়ে নিয়েছে। ইসলামিক স্টেটের বি'রু'দ্ধে ল'ড়া'ইয়ে ২০১৬ সাল থেকেই ইরাকে ড্রোন ব্যবহার করে ইরান। ২০১৯ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রো'নকে ভূ'পা'তিত করে তারা এই অভিযোগে যে ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমা ল'ঙ্ঘ'ন করেছে।

এর বাইরে তারা ড্রোন প্রযুক্তি তাদের মিত্রদের কাছেও স্থানান্তর বা বিক্রিও করেছে, বলছেন বিবিসির প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সংবাদদাতা জোনাথন মার্কাস। ২০১৯ সালেই ড্রোন ও ক্ষে'পনা'স্ত্র আ'ঘা'ত হেনেছিলো সৌদি তেল ক্ষেত্রে।

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র এজন্য ইরানকেই দা'য়ী করেছিলো। যদিও তেহরান এ অভিযোগ প্র'ত্যাখ্যা'ন করেছে। বরং তারা ইয়েমেনের বিদ্রো'হীদের দা'য় স্বী'কারের দিকে ই'ঙ্গিত করেছে।

সাইবার সক্ষমতা : ২০১০ সালে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর বড় ধরণের সাইবার অ্যা'টাকের পর তারা সাইবার স্পেস স'ক্ষ'মতায় জো'র দেয়। আইআরজিসিরি নিজস্ব সাইবার কমা'ন্ড আছে বলে মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালের এক রিপোর্টে বলেছে ইরান অ্যারো'স্পেস কোম্পানি, প্রতির'ক্ষা ঠিকাদার, এনার্জি ও ন্যাচারাল রিসো'র্সেস কোম্পানি ও টেলিকম ফার্মগুলোকে তাদের বিশ্বব্যাপী সাইবার অ'পারে'শনের কাজে টা'র্গে'ট করেছে।

২০১৯ সালে মাইক্রোসফট বলেছিলো ইরান ভিত্তিক একটি হ্যা'কার গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচা'রণাকে টা'র্গে'ট করেছিলো ও তারা আমেরিকা সরকারের অ্যা'কাউ'ন্টগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেছিলো। সূত্র : বিবিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে