বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২০, ০১:১৪:১৫

চুক্তি স্বাক্ষর না করেই মস্কো ছাড়লেন লিবিয়ার জেনারেল খলিফা হাফতার

চুক্তি স্বাক্ষর না করেই মস্কো ছাড়লেন লিবিয়ার জেনারেল খলিফা হাফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অ'স্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর না করেই রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ছেড়েছেন লিবিয়ার বিদ্রো'হী নেতা জেনারেল খলিফা হাফতার। মঙ্গলবার সকালে মস্কোতে শান্তি চুক্তিতে সই না করেই তিনি রাশিয়া ছেড়েছেন। তুরস্ক ও রাশিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত ওই শান্তি চুক্তিতে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সিরাজ স্বাক্ষর করেছেন। 

গত সপ্তাহে থেকে রাশিয়া ও তুরস্কের উদ্যোগে লিবিয়ায় যু'দ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল। এরপর সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে সোমবার রাশিয়ার মস্কো যান হাফতার। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় সাত ঘণ্টা বৈঠক হয়। এতে লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধান ফায়েজ আল সিরাজ স্বাক্ষর করলেও হাফতার তাতে সই না করে মস্কো ছেড়ে যান।

হাফতারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিতে সিরাজ সরকারের সমর্থনপুষ্ট গো'ষ্ঠীগুলো কবে ভে'ঙে দেয়া হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমার উল্লেখ না থাকায়, হাফতার তাতে সই করেননি। এদিকে লিবিয়ায় হা'মলা অব্যাহ'ত রাখলে হাফতারের বি'রু'দ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।

তিনি বলেন, লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বি'রু'দ্ধে যদি পশ্চিম লিবিয়ার বাহিনীর কমান্ডার খলিফা হাফতারের হা'ম'লা অব্যাহ'ত থাকে তাহলে তুরস্ক তাদের শিক্ষা দিতে বিরত থাকবে না। এদিকে, লিবিয়ায় ত্রিপোলির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা ফয়েজ আল-সিরাজের জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের (জিএনএ) সমর্থনে সেনা পাঠাতে একটি বিলে সায় দিয়েছে তুরস্কের পার্লামেন্ট।

উল্লেখ্য, গাদ্দাফি ক্ষ'মতাচ্যু'ত ও নিহ'ত হওয়ার পর ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মনোনীত সরকার রয়েছে। ওই কর্তৃপক্ষকে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার (জিএনএ) নামে অভিহিত করা হয়। তবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিদ্রো'হী গো'ষ্ঠীগুলোর হাতে রয়ে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে জিএনএর কর্তৃত্ব থাকলেও পূর্ব ও দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চল হাফতার বাহিনী এলএনএর দ'খলে।

২০১৯ সালের এপ্রিলে এ বাহিনী লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বি'রু'দ্ধে যু'দ্ধ ঘোষণা করে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে একটি সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ। আরেকটি ফিল্ড মার্শাল হাফতারের নেতৃত্বাধীন। ত্রিপোলির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে জাতিসংঘ। তুরস্ক, ইতালি ও যুক্তরাজ্যও এ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে।

আর হাফতার বাহিনীর সমর্থনে রয়েছে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিসর ও ফ্রান্স। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে (জিএনএ) সমর্থন করে এবং শান্তি আলোচনার আহ্বান জানায়। কিন্তু ২০১৯ সালের এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খলিফা হাফতারকে ফোন দিয়ে লিবিয়ার ব্যাপারে 'যৌথ স্বপ্নের' কথা বলেন।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান গত সপ্তাহে বলেছিলেন– পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলে আঙ্কারা জানুয়ারিতেই লিবিয়ায় সৈন্য ও সরঞ্জাম পাঠাবে। রাশিয়া, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডান সমর্থিত খলিফা হাফতারের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নাকাল জিএনএ গত মাসে তুরস্ককে সেনা পাঠাতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়। ফয়েজ আল সিরাজের সরকারের প্রতি তুরস্কের পাশাপাশি তিউনিসিয়ারও সমর্থন রয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে