আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রত্যেক বছর পড়শি দেশের পসরা নিয়ে কলকাতা বইমেলায় যানন তিনি। কিন্তু এইবার যে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন, দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। পাসপোর্ট এবং লক্ষাধিক টাকা-সহ ব্যাগ খোয়া গেল কলকাতার বইমেলা থেকে। এই ঘটনা যেন বই-উত্সবের বুকে একটা লজ্জার দাগ কেটে রাখল।
ঢাকার বাসিন্দা খাইরুল হাসান সাজু জানিয়েছেন, ঘটনার আক'স্মিকতায় তিনি স্ত'ম্ভিত। 'এত বছর ধরে আসছি, কলকাতা বইমেলায় আসি, নন্দনের বাংলাদেশ বইমেলায় আসি, কখনও এমনটা ঘটেনি। ভাবতেও পারিনি এমন হতে পারে। দিশা'হারা লাগছে সবকিছু হা'রিয়ে ফেলে।'
ঘটনার পরেই মেলার গিল্ড কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি, অভিযোগ জানিয়েছেন কন্ট্রোল রুমেও। এর পরে বিধাননগর থানায় ডায়েরিও করেছেন তিনি। কিন্তু ব্যাগ ফিরে পাবেন কিনা, সেবিষয়ে একেবারেই অন্ধকারে।
'টাকা তো গেল, অন্তত পাসপোর্টটা যদি কোনও ভাবে ফেরত পেতাম! ভয়'ঙ্কর সম'স্যায় পড়তে হবে, দেশে ফিরতে অনেক অসুবিধা পোহাতে হবে।'- আক্ষেপ দিব্য প্রকাশনীর মার্কেটিং ম্যানেজারের। বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই প্রকাশনীর তরফেই প্রতি বছর একাধিক বার পশ্চিমবঙ্গে আসেন বছর আটত্রিশের এই যুবক।
খাইরুল হাসান জানালেন, বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে তাদের প্রকাশনীর স্টল আছে। তিনি বললেন, 'তখন তিনটে বাজতে দশ মিনিট বাকি। বেশ ভিড় স্টলে। আমি চেয়ারেই বসে ছিলাম, সঙ্গে ব্যাগটা ছিল। বাইরে রাখা একটি বই শেষ হয়ে গেছিল। টেবিলের তলার স্টক থেকে বইটা বার করতে যাই। সে সময়েই চেয়ারে ব্যাগটা রেখে নিচু হই, বার করে আনি বই। বড়জোর ৩০-৪০ সেকেন্ড সময় লেগেছে। তার মধ্যেই উধাও ব্যাগ।'
ব্যাগ নেই দেখেই সঙ্গে সঙ্গে এদিক ওদিক তাকান তিনি। স্টলের ক্রেতাদেরও জিজ্ঞাস করেন, কেউ দেখেছেন কিনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের গেটে এসে নিরাপত্তার'ক্ষীদের জানান ঘটনাটা। নিরা'পত্তার'ক্ষীরা তার পরে কয়েক জনের ব্যাগ পরীক্ষাও করেন, কিন্তু খোয়া যাওয়া ব্যাগটি মেলেনি।
খাইরুল জানিয়েছেন, পাসপোর্ট ও জ'রু'রি কাগজপত্রের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় লাখখানেক টাকাও ছিল ব্যাগে। ব্যবসার টাকা ছাড়াও, ডাক্তার দেখানোর জন্য অতিরিক্ত বেশ কিছু টাকা সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। ১১ ফেব্রুয়ারি আরএন টেগোর হাসপাতালে একজন স্নায়ু চিকিত্সকের কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া আছে তার। ডাক্তার দেখানো ও পরবর্তী চিকিত্সা খাতে বেশ কিছু টাকা সঙ্গে রেখেছিলেন তিনি।
ডাক্তার দেখানোর পরে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু এখন অনি'শ্চিত হয়ে গেল সবটাই। খাইরুল হাসানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মেহবুব আলম মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষক মেহবুব আলম এদিন ছিলেন খাইরুলবাবুর সঙ্গেই। তিনি বলেন, 'আমি খুব ল'জ্জিত বোধ করছি। বইমেলা আমাদের গর্ব। এখানে এসে ওকে এমন বি'ব্র'ত হতে হবে, তা ভাবিনি। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন মেলায় খুবই জনপ্রিয়। এখানে পড়শি দেশের স্টলে উপচে পড়ে পাঠকের ভিড়। সেখানে গিল্ডের উচিত ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো।' সূত্র : দ্য ওয়াল