নাকের ডগায় ব্রেন !
অান্তর্জাতিক ডেস্ক : শিরোনাম শুনে অবাক লাকছে? অবাক হওয়ার কিছু নেই। কল্লোদির 'পিনাচ্চিও'কে মনে পড়ে? মিথ্যে বলার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যেত তার নাক৷ তবে এবার রূপকথার সোঁদা গন্ধমাখা বইয়ের হলদেটে পাতায় নয়, বাস্তবেই মিলল 'পিনাচ্চিও'র সন্ধান৷ ২১ মাসের ওলি ট্রেজাইস৷ শরীরের গড়ন অন্য পাঁচটি সমবয়সি বাচ্চার মতো হলেও, নাকটি প্রয়োজনের তুলনায় অস্বাভাবিক বড়৷ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সম অনুপাতে বেড়ে চলেছে পুঁচকে ওলির নাকও! অথচ 'পিনাচ্চিও'র মতো মিথ্যে কথা তো দূর কি বাত, এখনও ঠিক করে কথাই বলতে শেখেনি ওলি! তবে?!
ওলি তখনও মায়ের পেটে৷ বয়স ২০ সপ্তাহ৷ স্ক্যানে ধরা পড়ে, অতিরিক্ত চামড়া তৈরি হচ্ছে তার মুখের কোনও এক অংশে, যা খানিক 'অস্বাভাবিক' বলে জানানো হয় তার মা অ্যামিকে৷ জন্মানোর পর কুৎসিত ওলিকে দেখে রীতিমতো ঘেন্না হত পরিচিতদের৷ "এরকম বীভৎস দেখতে একটা বাচ্চাকে জন্ম দেওয়াই উচিত হয়নি" বলে কানাঘুষোও শুনতে হয়েছিল অ্যামিকে৷ অ্যামির পূর্বজন্মের অভিশাপ বলেও বলে বর্ণিত হত ওলির জন্ম৷ এছাড়াও ছুটে এসেছিল আরও অগুনতি ব্যঙ্গবাণ৷ ভেঙে পড়লেও বিশ্বাস হারাননি তিনি৷ ছুটে যান চিকিৎসকদের দরজায় দরজায়৷ এরপর অন্য এক এমআরআই স্ক্যানে জানা যায়, ওলির মস্তিষ্কটি খুলির একটি ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে এসে জমা হয়েছে তার নাকের ডগায়৷ বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এই ঘটনাটি পরিচিত 'এনসেফেলোসিলি' নামে৷ মস্তিষ্কের এই অদ্ভুত অবস্থানের জন্য প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হত ওলির৷ অথচ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াটি ছিল বাঁচা-মরার ঝুঁকিকিপূর্ণ৷ ঝুঁকি নিয়েছিলেন ওলির মা, বোধহয় ছোট্ট ওলির হাসি মুখের উপর ভরসা করেই৷ ন'মাস বয়সে এক কঠিন সার্জারির পর অবশেষে ছোট্ট ওলির মস্তিষ্কটি স্থাপন করা হয় যথাস্থানে৷ জিত হয় খুদে আঙুলের বজ্রমুষ্টির৷ অ্যামি এখন 'এনসেফেলোসিলি' আক্রান্ত শিশু এবং তাদের পরিবারের মধ্যে সচেতনতা প্রচারে ব্যস্ত৷ জানাতে ব্যস্ত 'এনসেফেলোসিলি' কোনও অভিশাপ নয়৷ আর এ কাজে তিনি একা নন, সঙ্গে আছে ছোট্ট ওলির নিজের আত্মবিশ্বাসের যাবতীয় স্ফুরণটুকুও৷ অতএব, শুরুটা 'পিনাচ্চিও'র মতো হলেও খুদে ওলি শেষ হাসি হেসেছিল 'ফিনিক্স'-এর ঢঙেই৷ আসলে বোধ হয় এভাবেই ওলিদের হাত ধবে প্রাণ পায় রূপকথারা৷ তাই নয় কি? সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
২৭ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস
�