শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ১০:২২:৪২

বাংলাদেশিকে করোনা রোগী বলে বিনা টিকিটে গার্ডের হাতে তুলে দেন ভারতীয় গার্ড

বাংলাদেশিকে করোনা রোগী বলে বিনা টিকিটে গার্ডের হাতে তুলে দেন ভারতীয় গার্ড

নিউজ ডেস্ক : বন্ধন ট্রেনে জহিরুলকে করোনা রোগী বলে কলকাতা রেলের টিটিই বিনা টিকিটে গার্ডের হাতে তুলে দেন। লিখিত বিবৃতিতে এমনটিই বলেছেন গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে খুলনাগামী বন্ধন ট্রেনের সিনিয়র গার্ড কৃষ্ণেন্দু বোস। কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে যাত্রী তালিকা দেয়ার সময় গোপনে এমনটি জানান। 

খবর পেয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা ত'ট'স্থ হয়ে পড়েন। জহিরুল দীর্ঘ সময় ট্রেনে লুকিয়ে থাকায় সন্দে'হ ঘ'নী'ভূত হয় ও সম্ভাব্য পলা'য়ন ঠেকানো জ'রু'রী হয়ে পড়ে। গত ২৯ জানুয়ারির সেমিনারে প্রশিক্ষণে করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দে'শনার আলোকে কাস্টমস কর্মকর্তারা স'ত'র্কতার সাথে জহিরুলকে খুঁ'জতে থাকেন। ট্রেনের নির্ধারিত বগির যে সিটে জহিরুল বসে এসেছিলেন সেখানে পাওয়া যায়নি। 

ভারতীয় গার্ডও তাকে চি'হ্ণি'ত করতে পারছিলেন না। অনুস'ন্ধা'নকারীদের মধ্য এসময় আ'তং'ক বিরাজ করছিল। তাৎ'ক্ষ'ণিক স্টেশনে কর্তব্যরত ডাক্তারকে খবর দেয়া হয়। পরবর্তীকালে শার্শা থেকে টীমে আরো ডা'ক্তার যোগ দেন। তারা নিবারণী পোশাক পরে দীর্ঘক্ষণ খুঁ'জে সবাই মিলে একজনকে স'ন্দে'হ করেন। তার পাসপোর্ট দেখে গার্ডের দেয়া তথ্যের সাথে নামের মিল পান ও জহিরুলকে বের করে নিয়ে আসেন। 

তার শরীরের তাপমাত্রা মেপে প্রাথমিকভাবে তার মধ্য লক্ষণ দেখে করোনা রো'গী বলেই সন্দে'হ করেন বলে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) কামরুল ইসলাম জানান। ডাক্তাররা যশোরে কথা বললে, যশোর অফিস তাদেরকে ঢাকায় কথা বলার পরামর্শ দেন। ঢাকায় কথা বলে ডাক্তারগণ জানান, জহিরুলের মধ্যে করোনা ভাইরাস নেই। 

তবে চিকিৎসকরা কোনভাবেই লিখিত সনদ দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আরও কামরুল দৃঢ়ভাবে তাদেরকে লিখিত দিতে বলেন, না হলে ট্রেন ছাড়া যাবে না বলে জানালে ডাক্তার আজিম উদ্দিন লিখিত সনদ দেন। এ বিষয়গুলো সময়ে সময়ে এসি, আইআরএম ও কমিশনারকে তারা জানান। পারিপার্শ্বিকতা ও পরি'স্থিতির আক'স্মি'কতায় কাস্টমস কর্মকর্তারা জহিরুলকে করোনা রো'গী ভাবতে প্র'লু'ব্ধ হন-

ভারতীয় রেলগার্ড কর্তৃক যাত্রী তালিকা (passengers manifest) হস্তান্তরের সময় নাম বলে করোনা রোগী হিসেবে পরিচয় করা; ভারতীয় রেলওয়ে চিকিৎসক টীমের মৌখিক উদ্ধৃতি; একইভাবে ভারতের টিটিই কর্তৃক করোনা ভাইরাসের রোগী পরিচয়ে ট্রেনে হস্তান্তর; বিনাটিকিটে যাত্রীকে ট্রেনে তুলে দেয়া; স্টেশন থেকে চিকিৎসকদল ও বিএসএফ কর্তৃক পুশব্যাক; জহিরুলের পাসপোর্টে ভারতে এন্ট্রিরেস্ট্রিকটেড (Entry restricted) সীলপ্রদত্ত।

এছাড়াও, বেনাপোল পৌঁছে ট্রেনে লুকিয়ে থাকা ও পাসপোর্টে চীনের ভিসা ও সম্প্রতি চীন ফেরত জহিরুলের শরীরে জ্বর থাকা, কর্তব্যরত চিকিৎসক টীমের স'ন্ধি'গ্ধতা এবং করোনামু'ক্ত ঘোষণা ও লিখিত সনদ দিতে বিল'ম্ব এ ধরণের পরি'স্থিতিতে দায়িত্বশীল যে কেউ আ'ত্মর'ক্ষার ও নিবা'রণী পদক্ষেপ নেবেন।

একইভাবে কাস্টমস কর্মকর্তারাও পলা'তক যাত্রীর সম্ভাব্য পলায়ন ঠে'কাতে ও বাড়তি স'ত'র্কতার জন্য ফেসবুকে প্রচারের উদ্যোগ নেন। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, চেকপোস্টে কর্মরত কর্মকতাদের সত'র্কতার জন্য যাত্রীর ছবি ও পাসপোর্টের ছবি ফেসবুকে দেয়া হয়। দশ হাজার যাত্রী, বেনাপোল বসবাসকারী হাজার হাজার সরকারী কর্মচারী, সাধারণ মানুষের নিরা'পত্তার জন্য কাস্টমসের পক্ষ থেকে একজনের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

'করোনা ভাইরাস নেই' মর্মে চিকিৎসকের সনদ পাবার পরপরই সে পোস্ট ডিলিট করা হয়। বেনাপোল রেলস্টেশন সুর'ক্ষিত প্রাচির দেয়া নয়। কিংবা বিমানবন্দেরের মতো নয়। এখান থেকে যে কারো দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব। কর্তব্যরত কাস্টমস টীমের দায়িত্ববোধ ও বাড়তি স'ত'র্কতার অংশ হিসেবে কাস্টমস কর্মকর্তারা সবাইকে জানানোর উদ্যোগ নেন। সীমান্তবর্তী স্থলবন্দর দিয়ে যাতে এমন রো'গী হলে পালাতে না পারে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে