বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ০৫:২৭:১৪

৬ জন মুসলিম প্রতিবেশীকে আ'গুন থেকে বাঁচিয়ে মৃত্যুর মুখে হিন্দু যুবক প্রেমকান্ত

৬ জন মুসলিম প্রতিবেশীকে আ'গুন থেকে বাঁচিয়ে মৃত্যুর মুখে হিন্দু যুবক প্রেমকান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সং'ঘ'র্ষে উ'ত্তা'ল দিল্লি। একের পর এক মৃ'ত্যুর খবর আসছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে নৃ'শং'স মা'রের ভিডিও। আ'ক্রম'ণ ও প্র'তি-আ'ক্র'মণের উন্মা'দ'নায় লেগে যাচ্ছে ধর্মের রং। এমনই সময়ে মানবতার এক অনন্য নজির তৈরি করলেন প্রেমকান্ত বাঘেল। মানবতার এই নজিরই এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আলো দেখাচ্ছে গোটা ভারতকে। 

পুড়তে বসা ছ'জন মুসলিম প্রতিবেশীকে বাঁচিয়ে নিজের প্রাণ ঝুঁ'কির মুখে ফেলেছেন তিনি। সকলে বলছেন, এই সং'ঘ'র্ষের আবহে হিন্দুত্ববাদ যখন কা'ঠগ'ড়ায় উঠেছে, তখন নিজে একজন হিন্দু হয়েও মনুষ্যধর্ম পালন করতে প্রাণ বাজি রাখলেন প্রেমকান্ত। জানা গেছে, বুধবার রাতে সিএএ-পন্থী মানুষেরা দল বেঁধে আ'ক্র'মণ করছিল মুসলিম মহল্লাগুলোয়। পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল একের পর এক বাড়ি। 

প্রাণভয়ে পালাচ্ছিলেন এলাকাবাসী মুসলিমরা। সেখানেই বাড়ি প্রেমকান্ত বাঘেলের। তার প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারেও পেট্রোল বো'মা ছুড়ে আ'গুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কেবল অন্য ধর্মের হওয়ার কারণে চোখের সামনে কারও প্রাণ যাবে, তা মানতে পারেননি প্রেম। তাই নিজের জীবনকে তু'চ্ছ করে হা'মলাকারীদের চোখের সামনে প্রতিবেশীদের প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁ'পিয়ে পড়েন তিনি। জ্ব'ল'ন্ত ঘরের ভিতরে আ'টকা পড়ে থাকা মানুষদের জীবন বাঁচাতে যান। 

একে একে ৬ জন অ'গ্নিদ'গ্ধ মানুষকে উ'দ্ধা'র করে আনেন বাড়ির বাইরে। উ'গ্রপ'ন্থী আ'ক্রম'ণকারীদের র'ক্তচ'ক্ষুকে ভ'য় না পেয়ে দ'গ্ধদের হাসপাতালেও পাঠান বাঘেল। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে তার নিজের শরীরেরও অনেকটা অংশ পুড়ে গেছে বেশ ভালরকম। পরে প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সও ডাকেন। কিন্তু ভয়েই হোক বা যে কোনও কারণেই হোক, সেই অ্যাম্বুল্যান্স তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে রাজি হয়নি। সারা রাত পোড়া শরীরে কষ্ট পান তিনি। 

আজ, বৃহস্পতিবার সকালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিটিবি হাসপাতালে। ৭০ শতাংশ দ'গ্ধ শরীরে চিকিত্‍সা চলছে তাঁর। সংবাদমাধ্যমকে প্রেমকান্ত বাঘেল বলেন, 'সময়টা খুব খারাপ। তবে সকলেই যে এখানে আ'ক্রম'ণা'ত্মক, তা নয়। এই হিংসার মধ্যেও আমার মতো আরও অনেকেই ছিলেন যারা সহমর্মিতা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। সিএএ নিয়ে আন্দো'লনের সময় আমিও সেখানে স'ক্রি'য় ছিলাম। কিন্তু যখন সেটিতে সা'ম্প্র'দায়িক রং লাগতে শুরু করে, তখন আমি সরে আসি।' 

জানা গেছে, দিল্লির ওই শিববিহার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক আবহে উ'ত্ত'প্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কিন্তু তাতেও যে মানবিকতার ধর্ম এখনও বজায় রয়েছে, প্রেমকান্তের নিঃস্বার্থ ঝুঁ'কিই তার উদাহরণ। অন্য দিকে দিল্লির শিখ সম্প্রদায়ও পাশে দাঁড়িয়েছে সং'ঘ'র্ষ-বি'ধ্ব'স্তদের। ২৪ ঘণ্টা গুরুদোয়ারার দরজা খুলে দিয়েছে তারা। 

অশোকনগর-সহ একাধিক এলাকা থেকে খবর মিলেছে, ক্ষ'তিগ্র'স্ত বেশ কয়েকটি মুসলিম পরিবারকে নিজেদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন হিন্দুরা। আবার বুধবার হাতে হাত রেখে মানবশৃ'ঙ্খ'ল করে চাঁদবাগের একটি মন্দির ধ্বং'সের হাত থেকে র'ক্ষা করেছেন সেখানকার মুসলিমরাও। এসবের মধ্যেও দিল্লিতে সং'ঘ'র্ষ থামছে না পাঁচ দিন পরেও। ইতিমধ্যেই নি'হ'তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ জনে। আহ'ত কমপক্ষে ২০০। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশ'ঙ্কাজনক। পুলিশ ইতিমধ্যেই ১০৬ জনের বি'রু'দ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। সূত্র : দ্য ওয়াল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে