আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের মো'কাবিলায় জনমানসে সচেতনতা ছাড়াও মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দিলেন অভিজিত্ বিনায়ক ব্যানার্জী এবং এস্থার দুফলো। লকডাউনের সময় কী কী করণীয়, তা নিয়েও ন'পয়েন্টের পরামর্শ দিয়েছেন নোবেলজয়ী এই দম্পতি। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে করোনা নিয়ে সচেতনতার প্রচারে যুক্ত অভিজিত্ এবং এস্থার।
এরই ফাঁকে কর্নাটকে এ বিষয়ক একটি চটজলদি সমীক্ষাও সেরে ফেলেছেন তারা। ওই দুই কাজ থেকে যে বিষয়গুলি তাদের নজরে এসেছে তার পর অভিজিত্ এবং অস্থারের মত, নোভেল করোনা ভাইরাসের নিয়ে ওয়াকিবহাল হলেও বেশির ভাগ মানুষ এখনও জানেন না, এটি এড়াতে কোন কোন বিষয়ে লক্ষ রাখা উচিত।
নোবেল জয়ী দম্পতির মতে, ২১ দিনের লকডাউনের ফলে ভারতে করোনা-সং'ক্রমণের হা'রকে বশে রাখা গেলেও এর চৌহদ্দিতে রাশ টানাটা বেশ ক'ঠিন। কারণ, নতুন করে বহু মানুষের মধ্যে একে ছড়িয়ে দিতে পারেন এই ভাইরাসে সং'ক্র'মিত ব্যক্তি। পাশাপাশি, এই ভাইরাস বহনকারীদের চি'হ্নিত করাটাও বেশ কঠিন কাজ।
উদাহরণ হিসাবে অভিজিত্ বলেন, ''ধরুন, দিল্লি থেকে যে ছেলেটি তার বাড়িতে ফিরেছে, কোনও কিছু বোঝার আগেই তার সংস্পর্শে আসা পরিজনদের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে।'' অন্য দিকে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার কোনও বাসিন্দা এই ভাইরাসে আক্রা'ন্ত হলেও তা রোখা মুশকিল হতে পারে। পাশাপাশি, এক বার ২১ দিনের লকডাউনের বি'ধিনিষে'ধ উঠে গেলে করোনা-আক্রা'ন্তের হার বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন তারা।
তা ছাড়া, এই ২১ দিনের মধ্যেই সংক্রমণে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে, এমনটাও মনে করাটা উচিত নয় বলেও মত তাদের। তা হলে কী ভাবে এই ভাইরাসকে রোখা যাবে? এ নিয়ে ন'টি উপায় বলেছেন অভিজিত্ এবং এস্থার।
প্রথমত, 'এমন ভাবে করোনা-সচেতনতার প্রচার চালাতে হবে যাতে প্রতিটি পরিবারের অন্তত এক জন সদস্য এ নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকেন।' দ্বিতীয়ত, সং'ক্র'মণ হবেই, এটা ধ'রে নিয়ে লক্ষ রাখতে হবে, যাতে করোনা-আক্রা'ন্ত ব্যক্তি কোনও ভাবেই সামাজিক ভাবে একঘরে না হয়ে যান বা তা লুকিয়ে না রাখেন।' তৃতীয়ত, ''সরকারের উচিত বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের বিষয়টি নজরে আনা।''
চতুর্থত, 'গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তাঁরাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে রিপোর্ট করতে পারেন।' পঞ্চমত, করোনা সংক্রা'ন্ত রিপো'র্ট যাতে দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে একত্র করা যায়, তাও খেয়াল রাখতে হবে। যা দেশ জুড়ে করোনা-বিষয়ক পরিসংখ্যানের লেখচিত্র (গ্রাফ) তৈরিতে সহায়তা করবে। ষষ্ঠত, চিকিত্সক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি ভ্রাম্যমান টিম তৈরি করতে হবে। যাদের হাতে পরীক্ষার সরঞ্জাম থাকবে।
সপ্তমত, 'এই টিম যাতে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবহার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সদ্ব্যবহারের সুযোগ পায়, এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।' অষ্টমত, 'সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসরেরা পান, তা দেখা উচিত সরকারের। এর ফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময়ে তা কাজে আসবে।' পরিশেষে, করোনার প্রতিষে'ধক না পাওয়া পর্যন্ত সরকারের এই 'যু'দ্ধকালীন তত্পরতা' চালিয়ে যেতে হবে। প্রতিষে'ধক মিললেও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো শ'ক্তিশালী করার কাজ করে যেতে হবে। সূত্র : এবিপি