সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০, ০৬:০৪:০৩

আর কতদিন চলবে করোনা মহামা'রী, জেনে নিন গাণিতিক পরিসংখ্যান

আর কতদিন চলবে করোনা মহামা'রী, জেনে নিন গাণিতিক পরিসংখ্যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী মহামা'রী আ'কার ধা'রণ করেছে প্রা'ণঘা'তী করোনাভাইরাস। ভাইরাসটি ইতোমধ্যে ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছ'ড়িয়ে পড়েছে। এতে আক্রা'ন্ত হয়েছে সোয়া ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। মৃ'ত্যু হয়ে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের।

গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহান শহর থেকে উৎ'পত্তি প্রা'ণঘা'তী এই ভাইরাসে। তিন মাসের মধ্যে গো'টা বিশ্বে ছ'ড়িয়ে পড়ে এই ভাই'রাস। চীনে ম'হামা'রী রূ'প নেওয়ার পর ভাইরাসটি তা'ণ্ডব চা'লাতে শুরু করে ইউরোপজু'ড়ে।এরই মধ্যে এই ভাইরাস ইউরোপের ইতালি ও স্পেনকে মৃ'ত্যুপু'রীতে পরিণত করেছে। দেশ দুটিতে এই ভাইরাসে আক্রা'ন্ত হয়ে মা'রা গেছে যথাক্র'মে সাড়ে ১০ হাজার ও সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। এছাড়া মৃ'ত্যুর সঙ্গে পা'ঞ্জা ল'ড়ছে আরও ৮ হাজার মানুষ।

তবে এরই মধ্যে আশার বাণী শুনিয়েছেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়োলজির প্রফেসর এবং ২০১৩ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পাওয়া মাইকেল লেভিট।

তিনি বলেন, মানবসভ্যতাকে আত'ঙ্কে ফে'লে দেওয়া করোনাভাইরাসের প্র'ভাব ধীরে ধীরে কমে আসছে। দ্রু'ত এই মহামারী সমাপ্তির স'ন্নিক'টে পৌঁছাচ্ছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে হিসাবনিকাশ করে বলেছেন, যদিও কয়েক মাস বা বছরে ভাইরাসটি শেষ হয়ে যাবে এমন নয়, তবে এটি লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে না। চীনে যখন করোনা ভ'য়াব'হ আ'কারে ছ'ড়ানো শুরু করে, তখন বিষয়টি নিয়ে ভাবা শুরু করেন লেভিট। ভ'য়াবহ'তা বেশি হলেও তিনি হ'তাশ হতে চাননি।

লেভিট বলেন, চীনের হুবেই প্রদেশে যখন দিনে ৩০ ভাগ মানুষ আক্রা'ন্ত হওয়া শুরু করল, তখন অবশ্যই সেটি আত'ঙ্কজনক পরিসংখ্যান ছিল। যদি আক্রা'ন্তের হার এভাবেই বা'ড়ত, তবে ৯০ দিনে পুরো পৃথিবীর মানুষ এতে আক্রা'ন্ত হতো। যদিও আমি ই'নফ্লু'য়েঞ্জা বিশেষজ্ঞ নই, তবু আক্রা'ন্তের সংখ্যা ও তার বৃদ্ধি বিশ্লে'ষণ করে পরবর্তী সম্ভা'বনার কথা বলতে পারি।

ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে লেভিট খেয়াল করেন, চীনে নতুন রোগীর সংখ্যা ১৮০০, ষষ্ঠ দিনে ৪৭০০। আবার ৭ ফেব্রুয়ারি এ সংখ্যা ক্র'মাগত কমে আসে এবং হ্রা'স অব্যাহ'ত থাকে। ঠিক এক সপ্তাহ পর, মৃ'তের সংখ্যাও কমতে থাকে। আক্রা'ন্তের সংখ্যা কমে যাওয়ার এ পরিসংখ্যান থেকে ধারণা করা যায়, ম'হামা'রী খুব দ্রুত শেষ হতে যাচ্ছে। চীনে শুরুর দিকে প্রত্যেক কভিড-১৯ রো'গী দিনে দুই দশমিক দুজন ব্যক্তিকে আক্রা'ন্ত করেছে। এই উচ্চমাত্রার সং'ক্র'মণের কারণে বি'প'র্যয় হতে পারত আরও বেশি। কিন্তু আক্রা'ন্তের হার কমতে কমতে বর্তমান সংখ্যা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি।

ব্যাখ্যাটি সহজে বোঝানোর জন্য লেভিট একটি গাণিতিক পরিসংখ্যান দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি ব্যাংকে অর্থ জমা রেখেছেন। যদি সে অর্থের বিপরীতে প্রথম দিন তিনি ৩০ শতাংশ সুদ পান এবং দ্বিতীয় দিন পান ২৯ শতাংশ, তাহলেই বোঝা যায়, তিনি শেষ পর্যন্ত খুব বেশি সুদ পাবেন না। সুদ কমলেও টাকা উপার্জন অ'ব্যাহ'ত থাকবে। যে আসল জমা ছিল তা কিন্তু কমবে না। এতে সুদের জোগান যু'ক্ত হবে খুব ধীরে। রো'গের ক্ষেত্রে যদি পরিসংখ্যান দাঁড় করানো যায়, তখনো এ কথা বলা যায়। আক্রা'ন্তের সংখ্যা কমে আসা মানে এর বি'স্তৃতি এক দিন নাই হয়ে যাবে।

কভিড-১৯-এ আক্রা'ন্ত হওয়া নিয়ে লেভিট বলেন, ক্র'মব'র্ধমান মডেল অ'নুযায়ী আপনি ভাবতে পারেন, রোজ নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে প্রতিদিনই নতুন কেউ আক্রা'ন্ত হবে। কিন্তু নিজের সামাজিক পরিসর চিন্তা করলে দেখবেন, ঘুরেফিরে প্রতিদিন একই মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে আপনার। নতুন কারও সঙ্গে দেখা হতে পারে গণপরিবহনে। যদি বাসেও আক্রা'ন্তের সংখ্যা হিসাব করি, তাহলে হয় সবাই আক্রা'ন্ত হবে অথবা সবাই নিজ'স্ব রো'গ প্রতিরো'ধ ক্ষ'মতায় সে'রে উঠবে। তার মতে, সামাজিক দূর'ত্বও এই রো'গ ছ'ড়াতে বাধা দিচ্ছে। কারণ আপনি সব সময় সবাইকে জ'ড়িয়ে ধ'রেন না। আপনার আশপাশে যার ঠাণ্ডা লেগেছে, তাকে আপনি এ'ড়িয়েই চলবেন। যত অসুস্থতা বাড়বে, তত সং'ক্র'মণ ঠে'কাতে আপনি সচে'তন হবেন। এভাবে প্রতি তিন দিনে একজন ব্যক্তি দেড়জনকে আক্রা'ন্ত করতে পারবে, যা ক্র'মে আরও কমে আসবে।

ইতালিতে কভিড-১৯-এর দ্রু'ত ছ'ড়ানো বিষয়ে লেভিট দেশটির সামাজিক ব্যবস্থাকে দায়ী করেন। ইতালিয়ানরা খুবই সমৃদ্ধ জীবনযাপন করেন। যার কারণে একে অন্যের সং'স্প'র্শে আসায় রো'গটি দ্রু'ত ছ'ড়িয়েছে। সুস্থ থাকতে হলে অসু'স্থ ব্যক্তির সাহচ'র্য থেকে দূ'রে থাকা জ'রুরি। তবে ইতালি ছে'ড়ে লেভিট ভাবছেন আমেরিকাকে নিয়ে। তারা যদি এখনই দ্রু'ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে প্রতি মুহূর্তে ২০ হাজার মানুষ আক্রা'ন্ত হওয়া কোনো বিষয় নয়। আর এ অব'স্থা চললে হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় দ্রু'ত ধ'স নামবে। ভাইরাসটি ছ'ড়ানো ব'ন্ধে বি'চ্ছি'ন্নতা সাহায্য করলেও লেভিট বিশ্বাস করেন বেশির ভাগ মানুষ সে'রে উঠছে নিজস্ব রো'গ প্রতিরো'ধ ক্ষমতার উন্নতির জন্যই। রোগের প্রকো'প ব'ন্ধ করতে চীনকে সম্পূর্ণ ল'কডা'উন করে দেওয়া হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ছাড়া বাইরে যাওয়ারও অনুমতি ছিল না কারও। হুবেই রাজ্যের উহানে যেখানে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রা'ন্ত হয়েছে, সেখানে আশ'ঙ্কা ছিল সবার আক্রা'ন্ত হওয়ার। অথচ মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ এতে আক্রা'ন্ত হয়েছে। এমনকি ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজেও ২০ শতাংশের বেশি মানুষ আক্রা'ন্ত হয়নি। আক্রা'ন্তের এমন সংখ্যা নিয়ে তাই আশাবাদী লেভিট। বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই রো'গ প্রতিরো'ধ ক্ষ'মতা উন্নত ছিল বলে তিনি বিশ্বাস করেন। সূত্র: ওয়ার্ল্ডওমিটার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট.কো.ইউকে, নিউইয়র্ক পোস্ট

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে