শনিবার, ০৪ এপ্রিল, ২০২০, ১২:২২:০৬

করোনা নিয়েও সর্বনা'শা খেলায় মেতেছে পাকিস্তান

করোনা নিয়েও সর্বনা'শা খেলায় মেতেছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা নিয়েও সর্বনা'শা খেলায় ম'গ্ন পাকিস্তান। দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রা'ন্তের সংখ্যা। শুরু হয়েছে মৃত্যুর মিছিল। পরি'স্থিতিকে কাজে লাগিয়ে পাক-সেনাবাহিনী এই দুঃসময়েও ক্ষমতার গন্ধ পেতে শুরু করেছে। অসহায় ইমরান খানের সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরোপুরি ব্যর্থ। জটিল পরিস্থিতিতেও লকডাউন ঘোষিত হয়নি। জুমা'র নামাজও চলছে সেনাবাহিনী আর মৌলবাদীদের দাপটে।

সেনাকর্তারা নিজেদের করোনা সং'ক্রমণ থেকে বাঁচাতে কোভিড-১৯ আক্রা'ন্তদের আইসোলেশনের যাবতীয় ব্যবস্থা করেছে ভারত ও আফগান সীমান্তে। করোনা সন্ত্রা'সকেও তারা পাঠাতে চায় প্রতিবেশী দেশে। করোনা স'ঙ্ক'টেও ত্রাণ বিলিতে পাকিস্তানের অমানবিক চরিত্রটাই বড় করে দেখা দিয়েছে। সেদেশের হিন্দুদের সবধরনের সাহায্যের ওপর নিষে'ধা'জ্ঞা জারি করেছে পাক-সরকার।

ভারতের ১৩০ কোটির তুলনায় পাকিস্তানের জনসংখ্যা অনেক কম। ২০ কোটি। তবু সেখানে করোনা আক্রা'ন্তের সংখ্যা ১৮৬৫। মৃ'ত ২৫। আরও বেশ কয়েকজন আক্রা'ন্তের অবস্থা আশ'ঙ্কাজনক। তবু লকডাউন ঘোষণা হয়নি। বলা ভালো, করতে পারেননি ইমরান খান। অনেকেই মনে করছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর মৌলবাদী নেতাদের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে লকডাউন ঘোষণা করার মতো হিম্মতই নেই পাক-প্রধানমন্ত্রীর। তাই ইমরান এখন ব্যস্ত মিডিয়াকে দো'ষারো'প করতে। পাক-জনতার কাছে তার আবেদন, ''করোনা সামান্য ব্যাপার। আত'ঙ্কি'ত হবেন না।''

করোনা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই উ'দ্বি'গ্ন। সেটা বোঝা যায় সার্কের মার্চ মাসের শীর্ষ সম্মেলনে। ভিডিও সম্মেলনে সমস্ত সদস্য দেশের শীর্ষ নেতারা যোগ দিলেও ইমরান খান ছিলেন অনুপস্থিত। তার স্বাস্থ্য বিষয়ক সহকারী ডা. জাফর মির্জা অবশ্য ছিলেন। সেখানে ঠিক হয় করোনা মো'কাবিলায় ১৮.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল গঠিত হবে। আফগানিস্তানের মতো দেশও সেই তহবিলে অর্থদানে সম্মত হয়। কিন্তু পাকিস্তান এখনও এক পয়সা দেয়নি।

উল্টে তহবিলের সঠিক ব্যবহারের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা। করোনা প্রতিরোধে পাকিস্তানের আন্তরিকতার অভাব ধ'রা পড়ে সার্ক দেশগুলোর চোখেও। করোনায় পাকিস্তানের মানুষ আ'ত'ঙ্কিত। পাক-সেনারাও ভ'য় পেয়েছেন করোনার প্রকো'পে। তাই করোনা আক্রা'ন্তদের মূল ভূখণ্ড থেকে সড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর অথবা উত্তরের গিলগিট-বাল্টিস্তান, বালুচিস্তানের দিকে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে যাবতীয় আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। উদ্দেশ্য একটাই। করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে হবে পাক-সেনাবাহিনীকে।

নিউইয়র্ক টাইমস ২৬ মার্চ তো লিখেই দিয়েছে, ইমরান দু'র্ব'ল। মৌলবা'দী, জ'ঙ্গি আর সেনাবাহিনীর হাতেই আসল ক্ষ'মতা। তাই জুমার নামাজ এখনও ব'ন্ধ হয়নি পাকিস্তানে। এই স'ঙ্কটের সময়ও চীনের বন্ধু দেশ পাকিস্তানে ১০ থেকে ১৫ মার্চ তাবলীগ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। লাহোরে সেই জামাতে ৯০টি দেশ থেকে আড়াই লাখ মুসলিম অংশ নেন। সেখান থেকেই মা'রা'ত্মকভাবে ছড়ায় করোনার সং'ক্র'মণ। তবু টনক নড়েনি। নামাজের নামে ভিড় করা চলছেই। সরকার শুধু ব্যস্ত, মূল ভূখণ্ডে সেনাকর্তাদের নিরাপদ রাখতে।

সৌদি আরব, ইরাক, তুরস্ক, আরব আমিরাত, জর্ডান প্রভৃতি মুসলিম প্রধান দেশ বন্ধ করে দিয়েছে মসজিদ। করোনা প্রতিরো'ধে উমরাহ স্থগিত রেখেছে সৌদি আরব। কিন্তু পাকিস্তানে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চলছে বহাল তবিয়তে। ইসলামাবাদ থেকে নাসিম জেহেরা তাই টুইটারে পাক সরকারের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সং'ক্রমণ বাড়ছে। তবু সরকারের ট'নক নড়ে'নি। ইসলামাবাদের জেলা শাসক মহম্মদ হামজা টুইটারে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জনগণকে করোনা পরীক্ষার আর্জি জানিয়েছেন এই পর্যন্তই। 

সচেতনতার অভাব সর্বত্র। সরকারও বেশ নির্বিকার। বরং করোনার নামে সেনা বাহিনীর কর্তৃত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে। মৌলভিদের সঙ্গে নিয়ে নিজেদের আধিপত্য বাড়িয়ে চলেছেন সেনাকর্তারা। পাকিস্তানের গবেষক ও বিশ্লেষক আয়েষা সিদ্দিকি মনে করেন, পিছনের দরজা দিয়ে অসামরিক ক্ষমতাও দ'খল করতে চাইছে পাক সেনারা। অর্থাৎ, পাকিস্তানে নতুন করে সেনা অভ্যুত্থানের আশ'ঙ্কা রয়েছে। আয়েষার মতে, ১৯৭৩ সালের সাংবিধানিক ২৪৫ বা ১৯৫৮ সালের মার্শাল ল প্রয়োগ পাক-সেনারা ক্ষ'মতা দ'খল করার মতো পরি'স্থিতি তৈরি করছে।

পাক-সেনারা অবশ্য নিজেদের করোনা সং'ক্র'মণের হাত থেকে বাঁচাতে বেশ যত্নশীল। সেটা পাক-নাগরিকরাও বুঝতে পারছেন। মুজফফরাবাদের ব্যবসায়ী জাফফর ইসমাইল সাংবাদিকদের বলেছেন, 'পাক সেনারা তো নিজেদের বাঁচাতে ইন্ডিয়া আর আফগানিস্তান সীমান্তেই করোনা পাঠাতে ব্যস্ত। বালুচিস্তানে পাকিস্তান-ইরান সীমান্তের ট্রাফটানে গড়ে উঠেছে করোনা সেন্টার। আল জাজিরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বে'গ প্রকাশ করেছে। বালুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ)এর নেতা আল্লাহনিজার বালুচ অভিযোগ করেন, পাক-সেনারাই এখন কোভিড-১৯ ছড়াতে ব্যস্ত। বিএলএফের মূখপত্র সঙ্গার পাবলিকেশনে এ নিয়ে উদ্বে'গ প্রকাশ করা হয়েছে। 

একই ছবি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে তী'ব্র খাদ্য স'ঙ্ক'ট। ওষুধ বা করোনা পরীক্ষা তো দূরস্ত, খেতে পর্যন্ত পাচ্ছেন না পাক অধিকৃত কাশ্মীর, পাঞ্জাব বা উত্তরাঞ্চলের মানুষরা। করোনা আত'ঙ্কে রোজগার বন্ধ। মূল ভূখণ্ডের ছবিটাও একই রকম। পাকিস্তানের আর্থিক দূরাবস্থা চ'রমে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় পাক-নাগরিকরাই চাইছেন ভারতের সাহায্য। পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অবস্থা তো খুবই শো'চনীয়। তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে পাকিস্তান সরকার।

একটি উদাহরণ দিলেই হিন্দুদের ব'ঞ্চনার ছবিটা স্পষ্ট হবে। সম্প্রতি করোনা মহামা'রীর কারণে করাচির রেহরি ঘোটে আয়োজন করা হয়েছিল গরীবদের জন্য রেশন বিলির। বহু হিন্দুও সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন তাদের সাফ জানিয়ে দেয়, হিন্দুরা এই রেশন পাওয়ার উপযুক্ত নয়। সমস্ত সুবিধা পাবেন শুধুমাত্র মুসলিমরাই। সারা পাকিস্তান হিন্দু পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রবি দাওয়ানি এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরেই পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর হিন্দু নারীদের জন্য কিছু খাদ্যের বন্দোবস্ত হয়। 

তবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এখনও হিন্দুদের খাবার দিতে নারাজ। তারা জানিয়েছে, সরকার থেকে শুধু মুসলিমদেরই খাবার দিতে বলা হয়েছে। হিন্দুদের এই দুরাবস্থার কথা স্বীকার করেছেন পাকিস্তানি গবেষক ড. আমজাদ আয়ুব মির্জা। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন, রাজস্থান সীমান্ত দিয়ে অবিলম্বে কিছু খাবার পাঠাতে। গোটা পাকিস্তানেই খাদ্য স'ঙ্ক'ট চ'রমে। পরি'স্থিতি মো'কাবিলায় ব্য'র্থ ইমরান সরকার।

আর সেই সুযোগে সেনাবাহিনী ও মৌলভিরা মিলে নতুন করে ক্ষমতা দখলের নেশায় ম'গ্ন। করোনার থাবাকে সীমান্তে ছড়িয়ে তারা চাইছেন, নতুন করে সেনা শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু করোনার সং'ক্র'মণে দায়ব'দ্ধতার অভাব ভাবাচ্ছে পাকিস্তানি সুশীল সমাজকেও। ইতিমধ্যেই করোনার সং'ক্র'মণ হু হু করে বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর হা'রও। আ'ক্রা'ন্তদের পাকিস্তান সীমান্তে পাঠাতে চাইলেও পাকিস্তানের মূলভূখণ্ডেও ভালো মতো থা'বা বসিয়েছে চীনা ভাইরাস।

সেনা বাহিনীর উচ্চাশা আর ইমরানের দু'র্ব'ল নেতৃত্বের যুগলবন্দিতে পাকিস্তানে করোনার রমরমা আন্তর্জাতিক দুনিয়ারও নজরে এসেছে। মৌলবাদী আর জ'ঙ্গিরা এখন আরও স'ক্রি'য় হয়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে করোনা দুর্যো'গেও পাকিস্তানের না'শক'তামূলক মনোভাব এবং স'র্বনা'শা ক্ষ'মতা দ'খলের লড়াই নতুন করে উ'দ্বি'গ্ন করে তুলছে প্রতিবেশী দেশগুলোকে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে