'সোনিয়া গান্ধীর বাবা ছিলেন ফ্যাসিস্ট সেনা'
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দলের ১৩১তম প্রতিষ্ঠা দিবসেই অস্বস্তিতে কংগ্রেস। সভানেত্রীকে নিয়ে প্রশ্ন উঠল নিজেদেরই দলীয় পত্রিকাতেই। মুম্বাই কংগ্রেসের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে সনিয়া গান্ধীর বাবাকে 'ফ্যাসিস্ট সৈনিক' বলা হয়েছে। সনিয়া যে ভাবে দ্রুত দলের শীর্ষপদে উঠে এসেছেন, দলীয় মুখপত্রেই তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় চূড়ান্ত অস্বস্তির মুখে পড়েছে কংগ্রেস। টাইমকস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়। কংগ্রেসের মুম্বাই শাখা প্রকাশিত হিন্দি পত্রিকা কংগ্রেস দর্শনে লেখকের নামহীন একটি প্রবন্ধে সনিয়া গান্ধীর প্রথম জীবন, তার বিমান সেবিকা হওয়ার স্বপ্ন ও তার বাবা স্টেফানো মাইনোকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যা খুব একটি স্বস্তিদায়ক হয়নি কংগ্রেসের কাছে। ১৯৯৭-এ কংগ্রেসে যোগ দিয়েই কীভাবে মাত্র ৬২ দিনের মধ্যেই সনিয়া গান্ধীর সভানেত্রীর পদে উঠে আসেন, তা নিয়ে আঙুল উঠেছে। সনিয়া গান্ধীর সরকার গঠনের ব্যর্থ চেষ্টার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই দলীয় মুখপত্রে। ওই পত্রিকায় প্রকাশিত অন্য একটি প্রবন্ধে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কাশ্মীর, চীন ও তিব্বত নিয়ে দেশের বর্তমান সমস্যার জন্য আঙুল তোলা হয়েছে জওহরলাল নেহেরুর দিকে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের দূরদৃষ্টির প্রশংসা করে নেহেরুর সমালোচনা করা হয়েছে ওই প্রবন্ধে। লেখকের নামহীন প্রবন্ধ দুটি কার লেখা তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জয় নিরুপমও। কংগ্রেসের মুম্বাই শাখা প্রকাশিত হিন্দি পত্রিকা কংগ্রেস দর্শনে প্যাটেল ও নেহেরুর সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করা হয়েছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী থাকলেও নেহেরুর সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে। তারা দু-জনেই একাধিকবার দু-জনকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। বিদেশনীতি নিয়ে প্যাটেলের দূরদৃষ্টি নেহেরুর থেকে অনেক স্বচ্ছ্ব ছিল বলে প্রবন্ধকারের দাবি। প্যাটেলের পরামর্শ শুনে নেহেরু পদক্ষেপ করলে কাশ্মীর সমস্যা তৈরিই হত না বলে লেখা হয়েছে পত্রিকায়। ১৫ ডিসেম্বর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মৃত্যুবার্ষিকী পালনে লৌহ-পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে প্রবন্ধটি লেখা হয়। লেখকের নামহীন প্রবন্ধে ১৯৫০-এ নেহেরুর উদ্দেশ্যে লেখা প্যাটেলের একটি চিঠির উল্লেখ করা হয়। যেখানে চীনকে 'অবিশ্বাসী' ও 'ভারতের ভবিষ্যত্ শত্রু' হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন প্যাটেল। কাশ্মীর ইস্যু জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়া নিয়েও আপত্তি ছিল প্যাটেলের। সেই সময় নেহেরু তার কথা শুনলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের অনেক সমস্যা তৈরিই হত না বলে প্রবন্ধকারের দাবি। খোদ দলীয় মুখপত্রেই জওহরলাল নেহেরু ও সনিয়া গান্ধির সম্পর্কে এই সমালোচনায় বিতর্ক শুরু হয়েছে কংগ্রেসে। প্রবন্ধ দুটি কার লেখা, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। মুম্বাই আঞ্চলিক কংগ্রেস কমিটির প্রধান ও পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জয় নিরুপম জানিয়েছেন যে পত্রিকার প্রতিদিনের কাজকর্মের সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারেন না। তাই প্রবন্ধ দুটি কার লেখা, সে সম্পর্কে তার নিজেরও কোনও ধারণা নেই। এর আগে শিবসেনার হিন্দি পত্রিকা 'দোপহর কা সামানা'র সঙ্গে যুক্ত থাকা নিরুপম নিজে এই দুই প্রবন্ধের মতামতের সঙ্গে সহমত নন বলে জানিয়েছেন। ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই