আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনা ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকার ও রাজ্যের মমতা সরকারের সং'ঘা'ত চ'রমে। রাজ্যে হঠাত্ পৌঁছনো দু'টি কেন্দ্রীয় টিমকে নিয়ে চ'রম নাটকীয়তা দিনভর। যার প্র'তিবা'দ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
এই চিঠিতে তিনি বলেছেন, ''কেন্দ্রীয় টিম আসবে জানিয়ে দুপুর একটা নাগাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোন করেছিলেন। কিন্তু তার অনেক আগেই, সকাল ১০ টা বেজে ১০ মিনিটে বিশেষ কার্গো বিমানে টিম পৌঁছে যায় কলকাতায়। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পাঠানো ১৯ তারিখের চিঠি হাতে এসেছে সোমবার ওই টিম আসার আধঘণ্টা আগে। আমি মনে করি এটা ঠিক হয়নি। রাজ্য লকডাউন ঘোষণার আগেই তা রাজ্যে জারি করেছে আবার সময়সীমাও বাড়িয়েছে কেন্দ্রের আগে। আপনি নিশ্চয় সহমত হবেন, কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে যখন করোনার বি'রু'দ্ধে লড়াই করছে তখন এই ধরনের পদক্ষেপ অনভিপ্রেত।''
এই চিঠি পাঠানোর আগেই তিনি টুইট করেন বিষয়টি নিয়ে যে ক্ষু'ব্ধ তা জানিয়ে। নাটকীয়তা অন্য মোড় নেয় সন্ধ্যা নাগাদ। যখন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানিয়ে দেন, 'কলকাতার টিমকে ডেকে পাঠিয়েছি। উত্তরবঙ্গের টিমকে বলেছি আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে। এই ভাবে নেমে সরাসরি এলাকায় চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। আমার কাছে কলকাতা টিম এসে দেখা করবে। যতক্ষণ না সব কিছু জানব, ওদের আসার কারণ পরিষ্কার হবে, ততক্ষণ ঘুরতে দেব না।'
নবান্নের কড়া মনোভাব সামনে আসার ও সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার মিনিট পনেরোর মধ্যেই নবান্নে চলে আসে প্রতির'ক্ষা মন্ত্রনালয় অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব চন্দ্রের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় টিম। যাদের দেখার কথা হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুর। মুখ্যসচিবের কাছ থেকে রাজ্যের পরিস্থিতি জেনেছেন তারা। কিন্তু তাদেরকেও রাজ্যের তরফে ক্ষো'ভের কথা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার কিছু এলাকায় যেতে পারে ওই টিম।
সরকারি সূত্রে খবর, রাত আটটা পর্যন্ত কোনও জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেননি উত্তরবঙ্গের তিন জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়ি পরিদর্শনে আসা টিমের প্রধান, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বিনীত যোশি। তারপর তাদের তরফেও প্রসাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়। সম্ভবত মঙ্গলবার কালিম্পং ও শিলিগুড়ি পুরসভার একটি এলাকায় যেতে পারেন তারা। কিন্তু রাজ্য যে এই দু'টি টিমের ভূমিকায় ক্ষু'ব্ধ তা বারবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৯ এপ্রিল ছিল রবিবার। ওই দিন একটি চিঠি কেন্দ্র পাঠায় রাজ্যকে। সেখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিযো'গ তোলা হয়। বলা হয়, রাজ্যে কয়েকটি জেলায় ঠিকমতো লকডাউন মানা হচ্ছে না। বাড়তি ছাড় দেওয়া হয়েছে কিছু ক্ষেত্রকে। তা খতিয়ে দেখতেই এদিন সকালে দু'টি টিমের একটি কলকাতায় ও অন্যটি শিলিগুড়ি নামে। শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসএসবি এবং বিএসএফকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা ঘোরার প্রস্তুতি শুরু করেন তারা।
বৈঠক করেন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার সঙ্গে। কলকাতাতেও উত্তর ও মধ্য কলকাতার স্প'র্শকা'তর এলাকায় যেতে চান তারা। যা নিয়ে ক্ষু'ব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। উল্লেখ্য, জাতীয় বি'প'র্যয় মো'কাবিলা আইনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তরফে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ৯টি রাজ্যে এই টিম পাঠানোর হয়েছে। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানিয়ে দেন, 'আমাদের কিছু জানানো হয়নি। স্বাস্থ্য কিন্তু রাজ্যের বিষয়।''
তিনি বলেন, ''যেহেতু অতিমা'রি ঘোষণা হয়েছে তাই এটি এখন কেন্দ্রের বিষয় হয়েছে। কিন্তু ওদের কাজকর্মে মনে হচ্ছে আমরা যেন কিছু করছি না। আমরা কিছু লুকো'চ্ছি। তাতো নয়।' মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ''ওই দুটি টিম আমাদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিচ্ছে। কিন্তু প্রটোকল অনুযায়ী আমাদের কাছে এসে আগে ব্রিফিং নেওয়ার কথা। তাছাড়া এই টিম পাঠানোর পক্ষে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তাও ঠিক নয়।''