আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লকডাউন, কারফিউ আর সামাজিক দূরত্ব তৈরির আগে থডাসাপনে কিটা মানুষের ঘরে ঘরে যেতেন।বিশেষকরে থাইল্যান্ডের দরিদ্র পরিবারগুলোতে। তাদের শিশুদের শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দিতেন এবং চাকরির নামে মানব পা'চার থেকে সাবধান করতেন। কিন্তু করোনায় পুরো দেশ লকডাউনে চলে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
শিশু পা'চার রোধে কাজ করা সংগঠন ফ্রিডম স্টোরির সদস্য কিটা। কিটা বলেন, ''দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুরা, বিশেষকরে মেয়ে শিশুরা পা'চারের ভ'য়াব'হ ঝুঁ'কিতে রয়েছে। আমি মনে করি তাদের যদি সময় দেয়া যায়, শিক্ষা, দক্ষতা তৈরি ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা করা যায় এবং ভালো পরামর্শ দেয়া যায় তাহলে পা'চার থামানো সম্ভব।''
গত ১৮ মার্চ থেকে থাইল্যান্ড লকডাউনে। ব্যবসা-বাণিজ্য কলকারখানা সব ব'ন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক লাখ চাকরি চলে যাবে। অর্থনীতি ৫.৩ শতাংশ সংকো'চিত হবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে। ফলে খাবার যোগাতে মানুষ এখন হণ্যে হয়ে ঘুরবে। অর্থনৈতিক পূনর্বাসনে কাজ করা সংগঠন ১০ থাউজেন্ড উইন্ডোজ এর অ্যামি গোসেলিন বলেন, ''এ মহামা'রির অর্থনৈতিক প্রভা'ব দরিদ্রদের ওপর ব্যা'পকভাবে পড়বে। মানুষ বে'পরো'য়া হয়ে চাকরি খুঁ'জবে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাবে মানব পা'চারকারীরা। যারা ওৎ পেতে আছে। আমাদেরকে এটি থামাতে হবে।''
অর্থনৈতিক এ সং'কটে এশিয়ার সব দেশই এখন মানব পা'চারের ঝুঁ'কিতে বলে জানান বিশ্লেষকরা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হিসাবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো টায়ার-২ বা টায়ার-৩ পর্যবে'ক্ষণ তালিকায়। যা অত্যন্ত ভ'য়াব'হ। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের (ইউএনওডিসি)২০১৮ সালের মানব পা'চারবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ৫ শতাংশ নাগরিককে পাওয়া গেছে।
দক্ষিণ এশিয়া থেকে মানব পা'চারের শি'কার হওয়া এসব লোক মূলত ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নাগরিক। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার লোকজন বিশ্বের ৪০টি দেশে মানব পাচারের শি'কার হয়। করোনা মহামা'রির কারণে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার প্রায় সব দেশই ভ'য়াব'হ চাকরি সং'কটে পড়বে।
আইএলও'র হিসাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথম দিকেই অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ সারা বিশ্বে অসংগঠিত খাতের শ্রমিকদের আয় কমেছে গড়ে ৬০ শতাংশ। তার মধ্যে আফ্রিকা ও আমেরিকা মহাদেশে ৮০ শতাংশ, ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়ায় ৭০ শতাংশ, এবং এশিয়ায় কমেছে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ।
ফ্রিডম স্টোরির নির্বাহী পরিচালক ভিরাট তিয়ানচিয়ানান বলেন, ''এ পরি'স্থিতিতে দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশু বা কিশোর-কিশোরীরা চাকরি করার চা'পে পড়বে। কারণ খেয়ে বাঁচতে হবে। কিন্তু করোনার কারণে চাকরির যেহেতু সং'কট তাই পা'চারকারীরা সেই সুযোগ নেবে। এছাড়া করোনার পরপরই দ্রুত চা'ঙ্গা হবে বাণিজ্যিক যৌ'ন ব্যবসা। আর এতে পরি'স্থিতির কারণে বুঝে না বুঝে আগ্রহী হবে তরুণীরা। এসব পরিস্থিতি মো'কাবেলায় সরকারগুলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে চাকরির বাজার কি করে স্থি'তিশীল করা যায় সে চিন্তা করতে হবে।''
ইউএনওডিসি জানায়, বহু কারণেই মানব পাচার হয়ে থাকে। পাচারের মাধ্যমে একজন মানুষকে আধুনিক দাসে পরিণত করা হয়। বিশেষত নারী ও শিশুদের যৌ'ন ব্যবসায় ব্যবহারের জন্য পা'চার করা হয়, গৃহকাজেও ব্যবহার করা হয়। সেখানেও নারীরা যৌ'ন নির্যা'তনের শি'কার হয়। এছাড়া বাধ্যশ্রম, ঋণগ্রস্থ করে শ্রম আদায়, বাধ্য শিশু শ্রম, অ'বৈ'ধ নিয়োগ এবং শিশুদের যু'দ্ধে ব্যবহার হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হিসাবে বিশ্বে প্রতিবছর এক দেশ থেকে আরেক দেশে পা'চার হয় ৮ লাখ মানুষ। জাতিসংঘের হিসাবে অ'বৈ'ধ মানবপা'চারের বাজার ৩২ বিলিয়ন ডলারের। সূত্র: আলজাজিরা