সোমবার, ০৩ আগস্ট, ২০২০, ১০:৫০:১৬

কেন একের পর এক করোনা আক্রা'ন্ত হচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা!

কেন একের পর এক করোনা আক্রা'ন্ত হচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঠিক যেন বেহুলার বাসরঘর! লৌহক'ঠিন সুর'ক্ষার ঘেরাটোপেও ছি'দ্র খুঁজে ছো'বল মা'রছে বি'ষধ'র। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হোন বা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, নি'রাপ'ত্তার 'নিশ্ছিদ্র' ব'লয়ে থেকেও ঘা'য়েল হচ্ছেন কোভিডের হা'ম'লায়। বিশ্বজুড়ে অনেক নেতা-মন্ত্রীর প্রাণও যাচ্ছে। কিন্তু কোন ফাঁক দিয়ে ওদের শরীরে ঢুকছে নোভেল করোনা ভাইরাস? বয়স? না কি নিয়ম ভাঙার অভ্যাস?

কেউ তো নেতা-মন্ত্রী, ভিভিআইপিদের গায়ের উপর গিয়ে পড়ছে না! মা'রছে না। মুখের উপর হেঁচে দিচ্ছে না! তা হলে? চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, বি'ধিব'দ্ধ সত'র্কীকরণ না মানার প্র'ব'ণতা নেতাদের মধ্যে অনেক বেশি। বহু নেতা মাস্ক পরলেও থুতনির কাছে নামিয়ে রাখছেন। সভা-সমিতিতে একই মাইকে ভাষণ দিচ্ছেন একাধিক জন। দলীয় মিটিংয়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বালাই থাকছে না।

এমনকী, হ্যান্ডশেক, কোলাকুলিতেও কসুর নেই অনেকের। পরিণাম যা হওয়ার তাই হচ্ছে। আরও একটি বড় সম'স্যা হল সিংহভাগ জননেতার জোরে কথা বলার অভ্যাস। এতে অ্যারোজল বেশি তৈরি হচ্ছে। গবেষণায় প্রমাণিত, করোনা ভাইরাস বিশ ফুট দূরে পর্যন্ত যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক নেতাদের বয়সটাও বড় ফ্যাক্টর বলে মানছেন ডাক্তাররা। বেশিরভাগই ষাটোর্ধ্ব। তাদের অনেকের আবার মাল্টিপল কো-মরবিডিটি। তবু নেতারা কেন এত ক্যাজুয়াল?

অতিমা'রীধ'স্ত বিশ্বে কিছু মানুষের বে'পরো'য়া চালচলনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আঙুল তুলছে করোনার ম্যারাথন ইনিংসের জেরে তৈরি হওয়া 'রেসপন্স ফ্যাটিগ'কে। হু-প্রধান ট্রেডস আধানন ঘ্রেবেইসুস জানিয়েছেন, করোনা চলে গেলেও তার প্রভা'ব এক দশক ধ'রে টের পাবে বিশ্ব। নেতারাও কি 'রেসপন্স ফ্যাটিগ'-এর শি'কার? এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসক ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার। 

তার কথায়, দেশ-বিদেশের বহু নেতা-মন্ত্রী, জননেতা, রাষ্ট্রনেতা কোভিডে আ'ক্রা'ন্ত। তারা নিয়ম-কানুন জানেন না, এমন নয়। কিন্তু অদ্ভু'তভাবে নেতাদের মধ্যে একটা 'ডোন্ট কেয়ার' মনোভাব কাজ করে। হয়তো রাজনৈতিক বা'ধ্যবা'ধকতা এর জন্য অনেকটা দায়ী।। ''আসলে এত দিন ঘরে আটকে থাকা সত্যি মুশকিল। নেতাদের পক্ষে তো বটেই।''- মন্তব্য তাঁর।

একই বক্তব্য সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. প্রদীপ সাহার। তার পর্যবেক্ষণ, ''নেতারা ঘরে থেকে থেকে মেজা'জ হা'রিয়ে ফেলছেন। চার-পাঁচ মাস তো কম কথা নয়! তাই অনেকেই 'যা হওয়ার হবে' বলে বেরিয়ে পড়ছেন।'' তার উপর ভোটের দায়। বহু রাজ্যে ভোটের দা'মামা বে'জে গিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নেতাদের আসল মূলধন জনসংযোগ, বি'পদে মানুষের পাশে থাকা। অনেকেই ভাবছেন, বি'পদের সময় মানুষের পাশে না থাকতে পারলে নেতা হয়ে লাভ কী? কোন মুখে ভোট চাইতে যাব? 

জনপ্রিয়তা হা'রানোর ভ'য়ও কাজ করছে। শা'সকদলের নেতা বেরিয়ে পড়লে বিরো'ধী নেতাও ঘরে বসে থাকতে পারছেন না। এমতাবস্থায় দীপ্তেন্দ্রবাবুর পরামর্শ, নেতাদের উচিত এই মুহূর্তে সব ভার্চুয়াল মিটিং করা। ডিজিটাল যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলা। পার্টি অফিসে বসে আড্ডা মা'রা এখন আত্মহ'ত্যার শা'মিল। দীপ্তেন্দ্রবাবু নেতাদের ''নন এসেনশিয়াল ট্রাভেল''-কেও দা'য়ী করেছেন। তার মতে, এই রেসপন্স ফ্যাটিগ কা'টাতেই বিনা প্রয়োজনে দলবল নিয়ে সফর করছেন নেতারা। যেটা ভিডিও কলে সেরে ফেলা যেত, হাজার কি.মি উড়ে গিয়ে সেই কাজটাই করছেন।

ভারতে বহু নেতা-মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি আ'ক্রা'ন্ত হয়েছেন কোভিডে। তেলেঙ্গানার সিনিয়র কংগ্রেসনেতা ভি হনুমন্ত রাও, মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সাংসদ কুণাল চৌধুরি, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন, পশ্চিমবাংলার দ'মক'লমন্ত্রী সুজিত বসু, উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রী সতপাল মহারাজ। তালিকা লম্বা। সে তালিকার নতুন সংযোজন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কোভিড অনেক নেতা-মন্ত্রীকে কেড়েও নিয়েছে। 

পশ্চিমবাংলার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ, তামিলনাড়ুর বিধায়ক জে আনবাজাগান, মহারাষ্ট্রের দু'বারের সাংসদ ও দু'বারের বিধায়ক বিজেপি নেতা হরিভাউ জাওয়ালে। চিকিৎসকদের মতে, যত দিন ভ্যাকসিন না বেরোচ্ছে, ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নেতা-মন্ত্রীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধ নেওয়া উচিত। এতে সং'ক্র'মণের সম্ভাবনা কিছুটা কমে। কাপড়ের মাস্ক নয়, সব নেতার এন-৯৫ মাস্ক পরা উচিত। আর হ্যাঁ, অবশ্যই ওঁদের সবার অ্যা'ন্টিব'ডি টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে