লোভনীয় বেতনের হাতছানি! ভারতের বিমানসেনা থেকে ৮০০ পাইলটের ইস্তফা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স'ঙ্ঘা'তের মধ্যে সাম'রিক ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকার। বিমানসেনার হাত মজবুত করতে তাই ফ্রান্স থেকে রাফাল যু'দ্ধবিমানও উড়িয়ে আনা হয়েছে ভারতে। কিন্তু ফি বছর বিমানসেনার পাইলটরা যে ভাবে চাকরি ছাড়ছেন, সেটাই এখন মাথাব্য'থার সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের প্রতির'ক্ষা মন্ত্রনালয়। 

সাম্প্রতিক কালে ঠিক কত জন পাইলট বিমানসেনার চাকরি ছেড়েছেন, তা জানতে তথ্যে অধিকার আইন (আরটিআই)-এ জানতে চেয়েছিল সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। বিমানসেনার তরফে তার যে জবাব এসেছে, তা য'থে'ষ্ট উদ্বে'গজনক। বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে ৭৯৮ জন পাইলট বিমানসেনা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

এই মুহূর্তে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮০ জন পাইলট বিমানসেনা থেকে ইস্তফা দেন। তবে গত ১০ বছরের মধ্যে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাইলট বিমানসেনা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। বিমানসেনার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ১০০ জন এবং ২০১৭-য় ১১৪ জন পাইলট ইস্ত'ফা দেন। অবসরের বয়স হওয়ার আগে ২০১৫ সালে ৩৭ জন পাইলট প'দত্যা'গ করেন, গত এক দশকে যা সর্বনিম্ন।

বিমানসেনায় পাইলটের ঘাটতি রয়েছে, এ কথা আগেই রাজ্যসভায় জানিয়েছিল সরকার। ২০১৮-র ১ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় সরকারের তরফে জানানো হয়, বিমানসেনায় ৪ হাজার ২৩১টি পাইলট পদ রয়েছে। কিন্তু সেই সময়েই বিমানসেনায় পাইলটের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৫৫। অর্থাৎ তখনই নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে ৩৭৬ জন পাইলট কম ছিলেন। তার পর ২০১৮ এবং ২০১৯-এ যথাক্রমে ৯০ ও ৯১ জন পাইলট ইস্ত'ফা দিয়েছেন।

ঠিক কী কারণে দলে দলে পাইলটরা বিমানসেনা থেকে ইস্ত'ফা দিচ্ছেন, তা খ'তিয়ে দেখতে দু'বছর ধ'রে বিমানসেনার অন্দরে একটি সমী'ক্ষা চালানো হয়। গত মে মাসের শুরুতে তার রি'পো'র্ট প্রকা'শ্যে আসে। সেখান থেকে জানা যায়, ৩২ শতাংশ পাইলট কাজের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ২৫ শতাংশের ধা'রণা, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এর চেয়ে ভাল। ঘন ঘন জায়গা বদ'লানোয় সম'স্যা হচ্ছে বলে জানান ১৯ শতাংশ। কেরিয়ারে উন্নতির সম্ভাবনা তেমন নেই বলেও জানান ১৭ শতাংশ পাইলট। ৭ শতাংশ পাইলট আবার বেতনে স'ন্তু'ষ্ট নন।

বিমানসেনা সূ'ত্রে খবর, কয়েক বছরের অভি'জ্ঞতাসম্পন্ন পাইলটরা মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকা বেতন পান। কিন্তু বিমানসেনার চাকরি ছেড়ে বেসরকারি বিমান সংস্থায় যোগ দিলে, তার চেয়ে চার গুণ বেশি বেতন মেলে। তাই বিমানসেনার চাকরি ছেড়ে অনেকেই বেসরকারি বিমান সংস্থায় যোগ দেন। আবার ২০ বছর চাকরি করলেই, পেনশন পাওয়া যায়। তাই বিমানসেনায় ২০ বছর কা'টিয়ে ফের অন্যত্র কাজে যোগ দেওয়ার ঘ'টনাও রয়েছে।

বিমানসেনার চাকরি থেকে ইস্ত'ফা দেওয়ার পর যাতে বেসরকারি সংস্থায় বিমান ওড়াতে বাধা না থাকে, তার জন্য গত ১০ বছরে বিমানসেনার কাছ থেকে ২৮৯ জন পাইলট নো অবজেকশন সার্টি'ফিকেট পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ গত দশ বছরে যত সংখ্যক পাইলট বিমানসেনা থেকে ইস্ত'ফা দিয়েছেন, তাদের একটা বড় অংশই বর্তমানে কোনও না কোনও বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। তবে চাকরি ছাড়ার পর এই মুহূর্তে কত জন পাইলট বেসরকারি বিমান সংস্থায় কর্মরত, সেই সং'ক্রা'ন্ত কোনও ত'থ্য তাদের কাছে নেই বলে জানিয়েছে বিমানসেনা।