শুক্রবার, ০১ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৮:৩৫:০৭

ছাত্রকে পেটাতে গিয়ে বাবাকেও পেটালেন শিক্ষক

ছাত্রকে পেটাতে গিয়ে বাবাকেও পেটালেন শিক্ষক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : থালা বাছতে ভুল করায় শিক্ষকের রোষের মুখে পড়ে দলিত বালক। শাস্তি হিসেবে কপালে জুটল তার বেধড়ক মার। গত গান্ধী জয়ন্তীর প্রাক্কালে এমনই অমানবিক ঘটনা ঘটে রাজস্থানের স্কুলে। উচ্চবর্ণের পড়ুয়াদের জন্য সবুজ আর নিম্নবর্ণদের জন্য নির্ধারিত ছিল লাল রঙের থালা। যোধপুরের কাছে ওশিয়ান তহশিলের সরকারি স্কুলের মিড-ডে মিলে চালু রয়েছে কড়া নিয়ম। অন্যদিনের মতোই গত ১ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর আগের দিনও এ নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি। কিন্তু সেদিন বেখেয়ালে সবুজ থালা তুলে নিয়েছিল বছর সাতেকের রমেশ মেঘওয়াল (নাম পরিবর্তিত)। এ অপরাধে শিক্ষকের হাতে তাকে পিটুনি খেতে হয়েছে। শেষে সে বমি করতে শুরু করায় মারধোর থামে। রমেশের কথায়, ভুল করে উচ্চবর্ণের ছাত্রদের জন্য রাখা থালা তুলে নিয়েছিল সে। তাতে ভাত খেতেও শুরু করে। শিক্ষকের চোখে তা ধরা পড়ায় মাথায় জোরে জোরে মারতে শুরু করেন। বমি করলে মার থামে তার। দলিত অধিকার নেটওয়ার্ক সূত্রে জানা গেছে, প্রহারে অসুস্থ হয়ে পড়া স্কুলছাত্রকে সঙ্গে সঙ্গে যোধপুরের উমেদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা ৬ দিন চিকিত্‍সার পর সে সুস্থ হয়। গত বৃহস্পতিবার এনজিও অ্যাকশন এইড, জয় ভীম বিকাশ শিক্ষণ সংস্থান এবং দলিত অধিকার নেটওয়ার্কের উদ্যোগে বিষয়টি জয়পুরের পন্থ কৃষি ভবনে গণশুনানির জন্য তোলা হয়। নিগৃহীত বালকের বাবা মালা রাম জানিয়েছেন, স্কুলের রাঁধুনি রমেশকে উচ্চবর্ণের ছাত্রদের জন্য নির্ধারিত থালা তুলে নিতে দেখে।বিষয়টি উপস্থিত শিক্ষককে জানায়। তিনি জানান, ওই শিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে রমেশের চুল টেনে ধরে লাথি-ঘুঁষি-চড় মারতে শুরু করেন। মারের চোটে রমেশের কানের ভেতরেও গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর আমি স্কুলে পৌঁছলে তিনি আমাকেও মারধর করেন। ক্ষতবিক্ষত ছেলেকে নিয়ে মালা রাম ওশিয়ানের এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে উপস্থিত চিকিত্‍সকরা তাদের উমেদ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। দলিত অধিকার নেটওয়ার্কের রাজস্থানের রাজ্য কনভেনর তুলসি রাম জানিয়েছেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৫১ ধারায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে সেদিনই পুলিশ হেফাজত থেকে ওকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জেলা আধিকারিক ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করেন এবং অন্যত্র বদলির নির্দেশ দেন।কিন্তু তবু অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো ওই স্কুলেই রয়েছেন। বিষয়টি অনুসন্ধান করতে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার ও আরএএস অফিসার এবং অন্য দুই সদস্যকে নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তুলসি রাম জানিয়েছেন। কমিটির অনুসন্ধান রিপোর্ট রাজ্য তফসিলি জাতি/ উপজাতি কমিশনের কাছে ১জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে