ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যখনই ভারত–পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টা হয়, ঠিক তখনই ভারতের কোথাও না কোথাও সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ হয়। কাজেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আচমকা লাহোর সফরের পর পাকিস্তানের উগ্রবাদীরা যে সন্ত্রাস হামলার চেষ্টা করবে, তা দিল্লির অজানা ছিল না। এই ধরনের নাশকতার সম্ভাবনা হতে পারে বলে সম্প্রতি সতর্ক করেছিলেন গোয়েন্দারা।
তা সত্ত্বেও ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাঠানকোটের বিমানসেনা ঘাঁটিতে আক্রমণ চালাল জঙ্গিরা। ২০০৮–এর মুম্বাই হামলার পর গোয়েন্দা কর্তারা যেভাবে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন, এবারও তা–ই হল। প্রশ্ন উঠে গেল ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। এই অবস্থায় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ‘বাকি প্রতিবেশী দেশের মতোই পাকিস্তানের সঙ্গেও সুসম্পর্ক চায় ভারত। কিন্তু ভারতের ওপর হামলা হলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’
তার এই হুঁশিয়ারি সত্যি সত্যিই কতটা অর্থবহ, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, এমন হুঁশিয়ারি গত ২০ বছরে বহুবার দিয়েছে ভারত। এদিন রাজনাথ সিং নিজেই জানিয়েছেন, হামলার পেছনে হাত থাকতে পারে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠী জৈশ–ই–মোহাম্মদের। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজুরও একই বক্তব্য। কিন্তু সব জানার পরেও কতটা কী হবে, সন্দেহ রয়েছে ভারতের প্রশাসনের একাংশের মনেই।
তাদের ক্ষোভ, উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা বরাবরই ব্যর্থ। তার প্রমাণ হাফিজ সাঈদ আর মাসুদ আজহার। এই জঙ্গিরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় পাকিস্তানে। একের পর এক ভারত–বিরোধী মন্তব্য করে। এ সব অভিযোগ খণ্ডাতে এদিনের হামলার পরেই নড়েচড়ে বসে ভারতের প্রশাসন।
গোয়ায় একটি অনুষ্ঠান ছিল ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরের। সেটি বাতিল করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দাভোলের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দিল্লিতে ছুটলেন তিনি। ৯০ মিনিটের এই বৈঠকে ছিলেন সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর প্রধান। পাঠানকোট হামলা সম্পর্কে গোয়েন্দারা কী তথ্য দিয়েছিলেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করলেন তিন বাহিনী প্রধান।
রাজনাথ সিংও সাংবাদিকদের জানালেন, গোয়েন্দাদের থেকে খবর পেয়ে আগেভাগেই সতর্ক ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। নয়ত আরও প্রাণহানি হতে পারত। একই কথা বললেন ভারতের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। তবে গোয়েন্দাদের সতর্কতা মেনে ঠিক কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, জানাতে চাননি তিনি।
চলতি মাসে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ভারতের বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্করের। এই ঘটনার পর তিনি যাবেন কি না, তা নিয়েও মন্তব্য করতে চাননি জিতেন্দ্র সিং। ৫ মাস আগে ২৭ জুলাই পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে ঘটেছিল জঙ্গি হামলা। পাঞ্জাব রাজ্যের পুলিশ সুপার–সহ প্রাণ হারিয়েছিলেন ৭ জন। এবার পাঠানকোটে।
তুমুল সমালোচনার মুখে পড়লেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদলও। এদিন রাজ্য পুলিশের ডি জি–কে নিয়ে তড়িঘড়ি পাঠানকোট পৌঁছলেন বাদল। কিন্তু এত কিছু পরেও পরিস্থিতি বদলাবে না, বলছেন হতাশ ভারতের সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনের একাংশ।
৩ জানুয়ারি,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসএস/এসবি
�