কে এই শেখ নিমর, যার মৃত্যুদণ্ডে বিশ্বব্যাপী ঝড় বইছে ?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রতিক্রয়া দেখা গেছে। ইরানে সৌদি দূতাবাসে আগুন দেয়া হয়েছে। সৌদি আরবেও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। কে এই নিমর? তিনি আসলে সৌদি আরবের শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় এক নেতা। বিশেষ করে শিয়া তরুণদের মধ্যে তার প্রচুর অনুসারী রয়েছে।
আরব বসন্তের পর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। শেখ নিমর আল-নিমর এই বিক্ষোভে জোরালো সমর্থন দেন।
সৌদি আরবের রাজপরিবারের সবচেয়ে তীব্র সমালোচকদের একজন তিনি। বিগত দশকগুলোতে তাকে সৌদি সরকার বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তর করে।
২০১২ সালে যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন এর বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছিল। সেই বিক্ষোভে তিনজন নিহত হয়। সৌদি আরব অভিযোগ করে যে শেখ নিমরের প্রতি ইরানের মদদ রয়েছে। তবে ২০০৮ সালে শেখ নিমর মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্য অনুযায়ী, এই সফরের সময় তিনি তীব্র মার্কিন বিরোধী এবং ইরানপন্থী অবস্থান থেকে সরে আসার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সৌদি আরবের শিয়ারা বহুদিন ধরেই নানা ধরনের বৈষম্য এবং বঞ্চনার অভিযোগ করে আসছে সৌদি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে। শেখ নিমর যেহেতু দেশটির শিয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন, স্বাভাবিকভাবেই সৌদি রাজপরিবার তাকে এক বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে।
বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যেভাবে ইরানের প্রভাব বলয় বাড়ছে, তা সৌদি আরবকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।
ইরান আগেই শেখ নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার জন্য সৌদি আরবকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল।
কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সব আবেদন অগ্রাহ্য করে শেষ পর্যন্ত এই শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে সৌদি আরব।
এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে। বিক্ষোভ হয়েছে বাহরাইনে।
ইরান এর প্রতিবাদ জানাতে তেহরানে সৌদি কূটনীতিককে তলব করে কড়া বার্তা দিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, এ ঘটনার কড়া মূল্য দিতে হবে সৌদি আরবকে।
ইরাকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরী আল মালিকী বলেছেন, এ ঘটনার জের ধরে সৌদি রাজপরিবারের পতন ঘটবে। লেবাননের শিয়া দল হিজবুল্লাহ এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে বর্ণনা করেছে।
তারা বলেছে, শেখ নিমরকে এই পরিণতি বরণ করতে হয়েছে সৌদি আরবের নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণে।
এ ঘটনার যে প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যে দেখা গেছে, তা মধ্যপ্রাচ্যের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিকে আরও সংকটজনক করে তুলবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
০৩ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস
�