সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০, ০৪:৫৬:০৪

উইঘুর মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের ওপর গণহ'ত্যা চালাতে চাইছে চীন!

উইঘুর মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের ওপর গণহ'ত্যা চালাতে চাইছে চীন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের মস্তি'ষ্কটাই বিক'ল করে দিতে চাইছে কমিউনিস্ট শা'সিত চীন। পাকিস্তানি কায়দায় জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর বুদ্ধিজীবীরা এখন চীনা আ'ক্র'মণের মূল ল'ক্ষ্য। তাই জিনজিয়াং থেকে প্রায়শই রহ'স্যজনক ভাবে নিখোঁ'জ হচ্ছেন বুদ্ধিজীবীরা। বিনা বিচারে ভ'রা হচ্ছে জেলে। তারপর বিচারের নামে প্রহ'সনে বাড়ছে ব'ন্দিদ'শা। 

সাধারণ মানুষের মতোই উইঘুর বুদ্ধিজীবীরাও হা'রিয়ে যাচ্ছেন মূল স্রোত থেকে। যেমন চলচ্চিত্র পরিচালক হারসান হাসান বা অধ্যাপক তাসপোলাত তাইপ। প্রথম জনের ২০ মাসেরও বেশি জেল খাটার পর ৫ সেপ্টেম্বর ১৫ বছর কা'রাদ'ণ্ড ঘোষিত হলো। আর দ্বিতীয় জন ২০১৭ সাল থেকেই রহ'স্যজনকভাবে নিখোঁ'জ। বিচ্ছি'ন্নতাবা'দী তক'মা সেঁটে দিয়ে বিচারের নামে প্রহ'সন চালাচ্ছে চীন। বে'ঘো'রে ম'রছেন উইঘুররা। মানবাধিকার লু'ণ্ঠি'ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

প্রথমে আসা যাক হারসান হাসানের প্রসঙ্গে। উইঘুরদের দু'র্দ'শার বড় উদাহরণ এই বছর পঞ্চাশের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের ওপর রাষ্ট্রীয় অ'ত্যা'চার। মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁ'সানো হয়েছে। ভাষাতত্ত্ব বিষয় নিয়ে পড়াশুনো করলেও হাসানের জগত ছিল অভিনয়। বাচিক শিল্পী হিসাবে যেমন তার খ্যাতি ছিল, তেমনি ছোট ছোট চলচ্চিত্র পরিচালনাতেও ছিলেন সমান পারদর্শী। তার নিজেরই ছিল চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে চীনের একাধিক সেমিনারেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন।

চীনা ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশন এবং চীনা ফেডারেশন অফ লিটারারি অ্যান্ড আর্ট সার্কেলসের আয়োজিত প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশও নিয়েছেন তিনি। উইঘুর বুদ্ধিজীবী হিসাবে সমাজে তার জনপ্রিয়তা ছিল ঈর্ষ'ন্বীয়। কিন্তু এহেন হাসানকেই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চীন সরকার আ'টক করে। কৌতুক অভিনেতা হিসাবে জনপ্রিয় শিল্পীর গায়ে চাপানো হয় বিচ্ছি'ন্নতাবা'দী ত'কমা। তার পরিবারকেও আত'ঙ্কিত করে তোলা হয়। হাসানকে রাখা হয় জরুরি কক্ষে। ব'ন্দিদ'শার আগে বেশ শ'ক্তপো'ক্ত ছিলেন হাসান। কিন্তু জেলে ঢু'কতেই ভে'ঙে পড়ে তার চেহারা। 

২০ মাস একরকম বিনা বিচারেই জেলে কা'টানোর পর ৪ সেপ্টেম্বর ঘোষিত হাসানের সা'জা বি'চ্ছিন্নতাবা'দী ষ'ড়য'ন্ত্রের অ'ভিযো'গে তাকে খা'টতে হবে ১৫ বছরের জেল। একই সঙ্গে তাকে ফাঁ'সানো হয়েছে দুর্নী'তির অ'ভিযো'গেও। তিনি নাকি প্রশিক্ষণ দেবার নামে চীনাদের কাছ থেকে ঘু'ষ নিয়েছেন! আসলে সবই মি'থ্যা ও সা'জা'নো মামলা। জিনজিয়াং প্রশা'সন এভাবেই তো উইঘুরদের ওপর নি'র্যা'তন চালায়! বিনা বিচারে হাজারো ব'ন্দিদের মধ্যে হাসান একটি উদাহরণ মাত্র।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি উইঘুরদের স্বাভাবিক জীবনধারায় বাঁচতে দিতে না'রা'জ। তাই তাদের হাজার হাজার মানুষকে মগজ ধো'লাইয়ের নামে ভরা হয়েছে ত'থাক'থিত প্রশি'ক্ষণ শিবিরে। সেখানে নারীদের গায়ের জো'রে ব'ন্ধ্যা'ত্বক'রণ চলছে। পুরুষদের খা'টানো হচ্ছে বে'গার। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ইসলাম ধর্ম পালনের সমস্ত অধিকার। উইঘুরদের নীচুতলার মানুষদের থেকে শুরু করে হাসানের মতো শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরাও নিস্তার পাচ্ছে না চীনের অমা'নবিক অ'ত্যা'চার থেকে।

অথচ জাতিসংঘের সাধারণ সভায় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান শি জিনপিং নিজেই মতাদর্শগত বিরো'ধে সহমতের কথা বলে এলেন। বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ''আদর্শগত বিরো'ধের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে সকলকে।'' তার নিজের দেশেই চলছে উইঘুরদের মুসলিম ধর্ম থেকে ব'লপূ'র্বক কমিউনিস্ট মন্ত্রে দীক্ষিত করার সাম'রিক প্রচেষ্টা। গায়ের জো'রে উইঘুরদের ইসলাম ধর্ম বা নিজেদের সংস্কৃতি ত্যা'গ করে কমিউনিস্টদের শিক্ষায় এবং শি-র আদর্শে দীক্ষিত করে তোলার ম'রি'য়া চেষ্টা চলছে চীনে। 

শি নিজেই বলেন, ''আমাদের উচিত রাষ্ট্রের স্বাধীন উন্নয়নের আদর্শ ও পথকে শ্রদ্ধা করা। প্রাকৃতিক ভাবেও গোটা দুনিয়া বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। মানবসভ্যতার উন্নয়নে বিভিন্ন ধা'রার পথকে আমাদের মান্যতা দিতে হবে। আর তাহলেই মানবসভ্যতা আরও রঙিন, আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।'' শি নিজেই আদর্শগত মতভেদের কথা বললেও তার নিজের দেশেই উইঘুররা নিজেদের ব্যক্তি জীবনেও ব'ন্দি হয়ে রয়েছেন রাষ্ট্রীয় স'ন্ত্রা'সের হাতে।

উইঘুরদের ঘো'রত'র আ'প'ত্তি শি-র বক্তব্যে। তাদের মতে, চীনে মোটেই বহুত্ববোধকে সম্মান জানানো হয়না। নিজেদের ধর্মই পালন করতে পারছেন না উইঘুররা। মানুষকে ব'ন্দু'কের নলের সামনে বা'ধ্য করা হচ্ছে চীনা জয়গানে। ন্যূনতম মৌলিক অধিকারটুকুও পাচ্ছেন না উইঘুররা। নামমাত্র পারিশ্রমিকে উইঘুরদের বা'ধ্য করা হচ্ছে কারখানায় কাজ করতে। বুদ্ধিজীবীরা কোনও কথা বললেই তাদের লা'শ পর্যন্ত গু'ম হয়ে যাচ্ছে। জেলে পচছেন হাজার হাজার উইঘুর। 

আর জেলে না গিয়েও ব'ন্দিশালায় নিজেদের সংস্কৃতি ভোলার পাঠ নিচ্ছেন বাকিরা। সন্তানধা'রণের স্বাধীনতা টুকুও হা'রিয়েছেন উইঘুর মানুষরা। তাদের পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতা টুকুও কে'ড়ে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান যেমন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হ'ত্যা করে দেশের মস্তিষ্কটাকেই ভোঁ'তা করে দিতে চেয়েছিল, চীনও তেমনি রাজত্ব কায়েম করেছে জিনজিয়াঙে। তাইপ বা হাসানদের ঘ'টনা উদাহরণ মাত্র। বাস্তব পরি'স্থিতি আরও নি'র্ম'ম, ক'ঠো'র এবং নি'ষ্ঠু'রও।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে